পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকার মামলা দিলেন অক্ষয় কুমার
Published: 20th, May 2025 GMT
বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় কমেডি ফ্র্যাঞ্চাইজি ‘হেরা ফেরি’এর তৃতীয় কিস্তি ঘিরে জমে উঠেছে বিতর্ক। ছবির প্রযোজক সংস্থা কেপ অফ গুড ফিল্মস অভিনেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৩৫ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ দাবি করে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে।
অভিযোগ, চুক্তি সই করার পরও অপেশাদারভাবে ছবির কাজ থেকে হঠাৎ সরে দাঁড়িয়েছেন পরেশ। এর জেরে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে প্রযোজকদের।
প্রযোজক সংস্থা কেপ অফ গুড ফিল্মসের মালিক অক্ষয় কুমার। অক্ষয়ের প্রায় ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম তিনি কোনো সহ-অভিনেতার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। বলিউডে যেখানে এমন পদক্ষেপ বিরল, সেখানে এ ঘটনা নিঃসন্দেহে নজর কাড়ছে।
প্রথমদিকে শোনা গিয়েছিল, সৃজনশীল মতভেদের জেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরেশ রাওয়াল। কিন্তু পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নিজেই স্পষ্ট জানান, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রিয়দর্শনের প্রতি তার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে, আছে ভালোবাসা ও আস্থা। তার সঙ্গে কোনও সৃজনশীল মতবিরোধ নেই।
তিনি লেখেন, ‘আমি ‘হেরা ফেরি ৩’ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, তবে এর পেছনে অন্য কারণ রয়েছে, যা আমি এখনই জানাতে চাই না।’
ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র ‘বাবু ভাইয়া’কে পরেশ রাওয়াল ছাড়া কল্পনা করা কঠিন। তাই তাঁর এই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে যান সহ-অভিনেতা অক্ষয় কুমার ও সুনীল শেটিও।
সূত্রের খবর, প্রযোজক সংস্থাটি আগের ধার শোধ করে একটি নিখুঁত প্রোডাক্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। এই উদ্দেশ্যে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগও করা হয়েছিল। পরেশ রাওয়ালের সরে দাঁড়ানোয় সে সব প্রচেষ্টা আপাতত থমকে গিয়েছে।
প্রযোজকদের অভিযোগ, চুক্তি সই করার পরও, এমনকি একটি প্রোমো ভিডিওর শ্যুটিংয়ে অংশগ্রহণ করার পর হঠাৎ ছবিটি ছেড়ে চলে যাওয়া নিছক ‘অপেশাদার’ আচরণ। তাছাড়া, অভিনেতার বাজারদরের চেয়েও বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে তাঁকে রাজি করানো হয়েছিল। সেই আর্থিক বিনিয়োগ এখন প্রায় অনর্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্রের দাবি, ‘এই সিদ্ধান্তের জন্য প্রযোজকদের অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই আইনি পথে হাঁটতে হয়েছে।’
জানা গেছে, পরেশ রাওয়াল ছবির প্রাথমিক প্রস্তুতি বৈঠক ও পরিকল্পনায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছিলেন। তাই তাঁর এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত শুধু বিতর্কই নয়, প্রযোজকদের মধ্যে অসন্তোষও সৃষ্টি করেছে। ছবির শুটিং শুরু করার জন্য একটি দিন নির্ধারিত হয়েছিল এবং সেই দিনের প্রোমো ভিডিও শুটে অংশ নিয়েছিলেন তিনজন মুখ্য অভিনেতা—অক্ষয়, সুনীল ও পরেশ।
অক্ষয় কুমারও এই প্রোজেক্টের পেছনে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে যুক্ত ছিলেন। ছবির স্বত্ব ও অন্যান্য দাবি মিটিয়ে তিনি ‘হেরা ফেরি ৩’ আবার বড় পর্দায় ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্যোগী হন। তাই এই মুহূর্তে পরেশ রাওয়ালের সিদ্ধান্ত গোটা দলকেই ভীষণভাবে বিপদে ফেলেছে।
‘হেরা ফেরি ৩’-এর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রিয়দর্শন। প্রথম দু’টি ছবির মতো এই কিস্তিতেও রাহুল, শ্যাম ও বাবু ভাইয়ার চরিত্রে অক্ষয়, সুনীল ও পরেশকেই দেখতে চাইছিলেন দর্শকরা। তবে এখন পরেশ রাওয়াল থাকবেন কি না, তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সূত্র: দ্য ওয়াল ও এবিপি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কাঁধে বাহারি ব্যাগ
ব্যাগের প্রয়োজনীয়তা সবসময়ই ছিল এবং আছে। বর্তমান সময়ে এটি প্রয়োজন ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে ফ্যাশনের অনুষজ্ঞ। কলেজ-অফিস কিংবা কোনো পার্টি, যেখানেই যান না কেন পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ না থাকলে ঠিক জমে না। ব্যাগ ছোট হোক কিংবা বড় তা একজনের ব্যক্তিত্বে যোগ করে ভিন্ন মাত্রা। হাল ফ্যাশনের ব্যাগ নিয়ে জানাচ্ছেন তানজিনা আকতারী
ব্যাগ মানেই টাকা, প্রসাধনী, মোবাইল ফোনসহ প্রয়োজনীয় টুকিটাকি জিনিসপত্র বহন করার মাধ্যম। চটজলদি কেনাকাটায় টুপ করে কয়েন, টাকা বা বিভিন্ন পণ্য ব্যাগে ঢুকিয়ে পথ চলতে সবারই সুবিধা হয়। প্রয়োজনের পাশাপাশি ব্যাগ ফ্যাশনের অনুষজ্ঞও বটে।
হুটহাট বৃষ্টির হাত থেকে বই-খাতা ও প্রয়োজনীয় জিনিসকে বাঁচাতে নিজের ব্যবহৃত ব্যাগের ভেতরে সিনথেটিক কাপড়ের ব্যাগ ভাঁজ করে রাখা যেতে পারে। কেনাকাটায় দোকান থেকে পাওয়া কাগজের ব্যাগ বৃষ্টির ছিটার তোড়ে জিনিসপত্র হারানোর ভয় তাতে থাকে না।
বাজারে নানা ধরনের ব্যাগের প্রচলন রয়েছে। ছোট থেকে বড় নানা ঢংয়ের ব্যাগ রয়েছে বাজারজুড়ে। ব্যাগপ্যাকও দারুণ জনপ্রিয় তরুণদের মধ্যে। তাতেও আছে রকমফের। এম-গিয়ার ব্যাগপ্যাক আর টি-গিয়ার ব্যাগপ্যাক। ছেলেদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মেয়েদের মধ্যেও দারুণ জনপ্রিয় ব্যাগগুলো।
ব্যাগের রঙেও আছে নতুনত্ব। কালো তো বটেই, আছে সাদা, নীল, সবুজ, বেগুনি, খয়েরি, গোলাপি, লাল, পিচসহ নানা রং। অনেকে ডেনিমের ব্যাগ, রঙিন নকশার বাহারি কাপড়, চটের বা পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। আবার ব্যাগে হ্যান্ডপেইন্ট ও ব্লকের কাজও চলছে সমানতালে।
বতর্মানে হ্যান্ডব্যাগ ও শোল্ডার ব্যাগের প্রচলন রয়েছে। ছাত্রীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ব্যাগপ্যাক নয়তো টোট ব্যাগ। গৃহিণী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীরা লেদারের ব্যাগ, সিনথেটিক লেদার, ক্রসবডি ব্যাগ ইচ্ছেমতো নিতে পারেন। পার্টিতে বটুয়া, পার্স, ক্লাচ চলছে দেদার।
বেত, কাঠ, হোগলা পাতা, চটের ব্যাগও যে কোনো পরিবেশে দারুণ মানিয়ে যায়। তবে পানির ছোঁয়া পাবে না এমন জায়গায় এ ধরনের ব্যাগ ব্যবহার করা উচিত। এসব ছাড়াও লাঞ্চ ক্যারি ব্যাগ, ওয়াটার বটল ক্যারি ব্যাগ, মেকআপ টুলস ক্যারি ব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগও রয়েছে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে নকশা করা ল্যাপটপ ব্যাগ দারুণ ট্রেন্ডি দেখায়।
চটের তৈরি বানজারা ব্যাগ এখনকার ট্রেন্ড। চটের ব্যাগে কড়ি, চুমকি, পুঁতি, সুতার ঝালর, লেইস বসিয়ে ব্যাগে কারুকাজ করা হয়। কোনো ব্যাগে কাঁধে ঝুলিয়ে নেওয়ার জন্য চওড়া চেইন থাকে; কোনোটাতে থাকে না। কিছু ব্যাগের চওড়া চেইনেও চুমকি, পুঁতির কারুকাজ করা থাকে। টিনএজ থেকে শুরু করে মাঝবয়সীদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ট্রেন্ডি বানজারা ব্যাগ। ঘুরতে যাওয়া থেকে পার্টিতে ব্যাগগুলো অসম্ভব মানিয়ে যায়।
চামড়ার ব্যাগ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গুটিপার স্বত্বাধিকারী তাসলিমা মিজি জানিয়েছেন কীভাবে চামড়ার ব্যাগের যত্ন নিতে হয়। তিনি বলেন, ‘চামড়ার ব্যাগ নিয়মিত ব্যবহার করলে তা এক দিন অন্তর পরিষ্কার করুন। একটি নরম কাপড় দিয়ে ব্যাগের ওপর লেগে থাকা ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করে ফেলুন। এ ছাড়া বাজারে চামড়ার ব্যাগ পরিষ্কারের জন্য বিশেষ ধরনের ক্লিনজার পাওয়া যায়। তা দিয়ে বছরে দু’বার আপনার ব্যাগটি ভালো করে পরিষ্কার করলে একেবারে নতুনের মতো হয়ে যাবে। স্যাঁতসেঁতে ও পানি আছে এমন স্থান থেকে ব্যাগকে দূরে রাখা উচিত। পানি লাগলে চামড়ার ব্যাগে ফাঙ্গাস পড়ে যেতে পারে। খুব বেশিদিন এমন ব্যাগ ব্যবহার না করে আলমারিতে বা বদ্ধ স্থানে তুলে না রাখাই সুবুদ্ধির পরিচয়। চামড়ার বা লেদারের পণ্য যত ব্যবহার করবেন, ততই ভালো থাকবে।’
চামড়ার ব্যাগ ছাড়াও অন্যান্য ব্যাগের যত্ন নেবেন যেভাবে
কৃত্রিম চামড়ার ব্যাগ: দামে চামড়ার থেকে কম হওয়ায় দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য অনেকে কৃত্রিম চামড়ার ব্যাগ পছন্দ করেন। ব্যাগ দীর্ঘদিন আলমারিতে বা বদ্ধ জায়গায় আটকা থাকলে এমনিতেই নষ্ট হয়ে যায়। ব্যাগ ভালো রাখার জন্য রাখতে হবে খোলামেলা জায়গায়। নিয়মিত ব্যবহারে ব্যাগে ধুলা-ময়লা জমে যেতে পারে। এ কারণে প্রতিদিন ব্যাগটির যত্নে নরম কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে মুছে পরিষ্কার করতে পারলে তা হেসে উঠবে ঝলমলিয়ে।
কাপড়ের ব্যাগ: অনেকে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বা ভিন্নতা আনতে বেছে নেন একটু আলাদা ধরনের ব্যাগ। সে ক্ষেত্রে কাপড়ের ব্যাগ থাকে পছন্দের শীর্ষে। কাপড়ের ব্যাগ পরিষ্কার করা খুব সহজ। সাধারণ ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে বা লিকুইড ডিটারজেন্ট পানিতে গুলিয়ে পরিষ্কার করে নিলে ব্যাগ একদম ঝকঝকে তকতকে হয়ে যাবে। পানি না নিংড়ে ভালো করে পানি ঝরিয়ে রোদে শুকাতে দিলে এমন ব্যাগ ভালো থাকবে।
পাটের ব্যাগ: পাটের ব্যাগপ্রেমী যারা তাদের পোহাতে হয় কিছুটা বাড়তি ঝামেলা। এমন ব্যাগে বুননের ফাঁকে ফাঁকে খুব সহজেই ধুলা ঢুকে নোংরা হয়ে যায়। এসব থেকে দাগ তোলার জন্য অল্প গরম পানিতে ডিসওয়াশার ডিটারজেন্ট মিশিয়ে নিন। এরপর পুরোনো কোনো টুথব্রাশে মিশ্রণটি লাগিয়ে দাগের জায়গাটা ঘষে নিন। এতে দাগ চলে যাবে। তারপর কিছুক্ষণ বাতাসে মেলে রাখলে হবে।
পার্টি ব্যাগ: বেশির ভাগ পার্টি ব্যাগে পুঁতি, পাথর, মুক্তা এবং বিভিন্ন উপকরণের নকশা করা কারুকাজ থাকে। এমন ধরনের ব্যাগ হররোজ ব্যবহার হয় না। এসব ব্যাগের যত্ন নিতে হয় একটু আলাদাভাবে। ব্যবহারের পর পার্টি ব্যাগ টিস্যু দিয়ে মুছে কিছুক্ষণ বাতাসে রেখে দিতে হয়। ছোট পার্সের ক্ষেত্রে বড় টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে পারেন। একটু বড় ব্যাগ হলে প্লাস্টিক বা পাতলা কাপড়ে মুড়িয়ে ড্রয়ারে তুলে রাখলে অনেকদিন ভালো থাকবে।
ব্যাগ কিনতে কোথায় যাবেন
গুটিপা, ব্যাগ প্যাকার্স, আড়ং, ব্যাগ অ্যান্ড ব্যাগেজ, প্যাস্টেল ফ্লোরাল প্রভৃতি থেকে পছন্দের চামড়ার ব্যাগ কিনতে পারবেন অনায়াসেই। বাটা ও অ্যাপেক্স থেকেও পছন্দ করে কিনে নিতে পারেন পছন্দনীয় প্রয়োজনীয় ব্যাগ। কাপড়, পাট বা কিছুটা অন্য ধাঁচের ব্যাগ কিনতে চাইলে চলে যেতে পারেন দেশাল, আড়ং, কে ক্র্যাফট, মায়াসির, বাংলার মেলা, নাগরদোলা, বিবিয়ানা, রঙ বাংলাদেশ, অঞ্জন’স ইত্যাদিতে। কৃত্রিম চামড়ার ব্যাগ কিনতে পারবেন ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া, শ্যামলী স্কয়ার, ফরচুন শপিং মল, টোকিও স্কয়ার, সীমান্ত স্কয়ার, মৌচাক মার্কেট, রাপা প্লাজা, মেট্রো শপিং মল, অরচার্ড পয়েন্ট, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স কিংবা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে।
মডেল: সোনিয়া রিফাত; মেকওভার: পারসোনা
ব্যাগ: গুটিপা; ছবি: ফয়সাল সিদ্দিক কাব্য