আমাদের শিখতে হবে, আরও শিখতে হবে: লিটন
Published: 22nd, May 2025 GMT
১২ বলে ১৪ রানের সমীকরণ যখন ৬ বলে ১ রানে নেমে আসে তখন বুঝতে হবে দলটার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। বুক ভরা সাহস নিয়েই প্রতিপক্ষকে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছেন ।
বাংলাদেশকে হারিয়ে জয়ের সমীকরণ মেলাতে সংযুক্ত আমিরাতের ১ রান হলেই হতো। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বল, হাসান মাহমুদের লেন্থ বল ব্যাটসম্যান শারাফু এগিয়ে এসে দারুণ সুইং করলেন। বল চলে গেল সীমানায়। চার রান।
জয় তো জয়-ই। কিন্তু প্রতিপক্ষকে বার্তা দিয়ে, তাদেরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জয়ের আলাদা গৌরব আছে। শারজাহতে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেই গৌরবটাই জিতল সংযুক্ত আরব আমিরাত। শুধু শেষ টি-টোয়েন্টিটা-ই জিতলই না, আইসিসি পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল। সমীকরণ ২-১।
শারজাহতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৬২ রান তুলতে পারে। ওই রান তাড়া করতে নেমে স্বাগতিকরা ৫ বল আগে ৭ উইকেটের জয় পায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি জয়ই যেখানে আমিরাতের বিরাট প্রাপ্তি, সেখানে সিরিজ জয় তাদের জন্য বিরাট পাওয়া। নিশ্চিতভাবেই তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা সাফল্য।
ম্যাচ হারের পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তাদেরকে জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস, ‘‘(সংযুক্ত আরব আমিরাত) তারা আজ ভালো খেলেছে। তারা প্রথম ইনিংসে ভালো করেছে। ভালো বোলিং করেছে, এবং সেই কারণেই আমরা এত বেশি স্কোর করতে পারিনি। কিন্তু ব্যাটিংয়ে, তারা একটু শিশিরের সুবিধা পেয়েছে। তবে তাদেরকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। তারা আতঙ্কিত হয়নি এটাই তাদের কৃতিত্ব।’’
এই পরাজয়কে লিটন মেনেই নিয়েছেন, ‘‘নিশ্চিতভাবেই এখানে এসে আপ টু মার্ক পারফরম্যান্স না করে কেবল জয়ের ভাবনায় মগ্ন থাকা…এটা (পরাজয়) জীবনেরই অংশ। ক্রিকেটে মাঝে মাঝে প্রতিপক্ষ অনেক ভালো খেলে। তাদেরওকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’’
নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে লিটনের ব্যাখ্যা, ‘‘ব্যাটিংয়ে আমরা কয়েকটি ভুল করেছি। আজ, আমার মনে হয় এই মাঠে এবং এই পরিবেশে যেভাবে আপ টু মার্ক পারফরম্যান্স করার কথা সেটা করতে পারিনি। তিন ম্যাচেই আমরা পরে বোলিং করেছি। যেখানে শিশির বড় প্রভাব বিস্তার করেছে।’’
আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত পাকাপাকি দায়িত্ব পেয়েছেন লিটন। শুরুর অ্যাসাইনমেন্টেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হলো তাকে। সামনে কী করতে হবে সেই কথাও বলেছেন পরাজয়ের মঞ্চে, ‘‘পারভেজ ও তানজিদ ভালো করেছে। তাওহীদ ও জাকের আলী ইনিংসের মাঝে ভালো করেছে। এছাড়া কয়েকজন ভালো বোলিংও করেছি। তবুও, আমাদের শিখতে হবে, আরও শিখতে হবে এবং ম্যাচে কার্যকর করতে হবে।’’
তিন টি-টোয়েন্টি খেলতে বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পাকিস্তান যাবে। পাকিস্তানের লাহোরে তিন ম্যাচ হবে ২৮ ও ৩০ মে এবং পহেলা জুন।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশকে উড়িয়ে আমিরাতের অধিনায়ক বললেন, ‘আমার কাছে কোন ভাষা নেই’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এই সিরিজের আগে তিনবারের দেখায় তিনবারই জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১৬ এশিয়া কাপের পর ২০২১ সালে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে তাদেরকে সিরিজে হারায়।
এবার ফলাফল ঠিক উল্টো। পিছিয়ে থেকে দারুণ কামব্যাক করে ইউএই জিতেছে সিরিজ। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বাংলাদেশকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে মরুর এই দলটি।
দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল। ২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডকেও ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। তবে বাংলাদেশকে হারানোর প্রাপ্তি আমিরাতের কাছে বিশেষ কিছু, যা তাদের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমের কণ্ঠে ফুটে উঠল।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ওয়াসিম বলেছেন, ‘‘প্রথমেই, আমার প্রিয় আল্লাহর দরবারে ধন্যবাদ এবং আলহামদুলিল্লাহ। এই জয়ে আমি খুবই খুশি। এবং আমাদের ম্যানেজমেন্ট, আমাদের বোর্ড এবং আমাদের সাপোর্টিং স্টাফরা, আমাদের প্রধান কোচ, ফিজিও, প্রশিক্ষক, বিশ্লেষক, সকলকে অভিনন্দন।’’
‘‘আমি খুবই খুশি যে আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করতে পেরেছি। এই সিরিজ আমাদের জন্য অনেক অর্থবহ। ভবিষ্যতে এটি আমাদের জন্য খুবই সহায়ক। আর ছেলেদের পারফরম্যান্স, আসিফ যেভাবে খেলেছে, আলিশান, রাহুল চোপড়া, হায়দার যেভাবে বোলিং করেছে, এবং অন্যান্য বোলারদের পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। আমার পুরো দলের পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। সত্যি বলতে, এই জয়ের জন্য আমার কাছে কোন ভাষা নেই।’’
‘‘(পাঁচজন নতুন খেলোয়াড়) খুব খুশি যে তারা পুরো সিরিজ জুড়ে খুব ভালো করেছে, বিশেষ করে হায়দার আলী তার অভিষেক করছে, এবং সে ব্যতিক্রমী বোলিং করেছে। আমি তার জন্য খুব খুশি।’’
‘‘আমরা আমাদের আশা হারিয়ে ফেলছিলাম না, বরং আমরা সবাইকে আশা দিচ্ছিলাম। আমরা শারজাহতে প্রতিটি দলের বিরুদ্ধে প্রতিটি স্কোর তাড়া করতে পারি, এবং আমরা এখানে এতে অভ্যস্ত। সত্যি বলতে, আমি খুব খুশি। কোচ, আমাদের পরিবার এবং সকলকে ধন্যবাদ।’’
ঢাকা/ইয়াসিন