অর্থনৈতিক করিডোরে উপকৃত হবে এ অঞ্চলের দেশগুলো: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
Published: 26th, May 2025 GMT
পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, অর্থনৈতিক করিডোরে শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের সব দেশই উপকৃত হবে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যদি তাদের কৃষি, বনজ, খনিজ সম্পদ বাংলাদেশে এনে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করে তাহলে উভয় দেশ লাভবান হবে। তবে এ জন্য ভালো ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির বিকল্প নেই।
সোমবার রাজধানীর বনানীতে শেরাটন ঢাকা হোটেলে ‘বাংলাদেশে অর্থনৈতিক করিডোর ও লজিস্টিকস উন্নয়ন: বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় সেমিনারটি আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স– বাংলাদেশ (আইসিসিবি)।
অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ করিডোরের আলোচনার আগে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক করার পক্ষেও মত দেন। তবে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হওয়ায় নতুন কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া যাবে না। আগের সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলোতেই বরাদ্দ দেওয়া হবে। দেশে বর্তমানে ১২শ' উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ওই প্রকল্পগুলো চালু রাখতে উন্নয়ন বরাদ্দে প্রায় সব অর্থ শেষ।
তিনি বলেন, অনেকে বলছেন-কোনো শিক্ষা বা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়াচ্ছি না, অবকাঠামো খাতের প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন প্রকল্প নিচ্ছি না। আদতে সরকার পুরনো প্রকল্পগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতি বের করে সংশোধন করছে, খরচ কমাচ্ছে। এই প্রকল্পগুলো শেষ করতে হবে। কোনো সড়ক বা সেতুর প্রকল্প মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে নতুন প্রকল্প শুরু করতে পারি না।
বিগত সরকার জনতুষ্টিমূলক মেগা প্রকল্প নেওয়ার সমালোচনা করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.
তিনি বলেন, আমাদের মানবসম্পদ আছে, আর্থিক সম্পদ আছে, ঋণদাতা, অংশীদার এবং অবকাঠামো। এই মুহূর্তে আমাদের অবস্থা ষাটের দশকের কোরিয়া থেকে অনেক ভালো। আমাদের টাকা আছে, আছে আলাদা আলাদা টেবিল, যেখানে আলাদা আলাদা বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখন আমাদের দরকার এমন একটি দল, যারা এই টেবিলগুলোকে একত্রে কাজ করাতে পারবে। বিগত সময়ে আমাদের সামাজিক পুঁজি নষ্ট করা হয়েছে। এটাকে আবার ফিরিয়ে আনতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে এইচএসবিসি বাংলাদেশের সিইও মাহবুব উর রহমান বলেন, যোগাযোগ অবকাঠামো হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। রপ্তানি বাড়াতে এর বিকল্প নেই।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় একের পর মেগা প্রকল্প হয়েছে। ঋণের টাকায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ঋণ ও সুদ পরিশোধের বোঝা বেড়েছে। এটা নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
যোগাযোগ অবকাঠামো প্রকল্পে বেশি ব্যয়ের জন্য দেশের ভূ-কাঠামো প্রধান কারণ বলে দাবি করেন এ খাতের অন্যতম ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের এমডি মীর নাসির হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ। এর ভূমি উন্নয়ন খরচ বেশি, যা ভারত-পাকিস্তানে হয় না। পরিবহন সাশ্রয়ী না হলে ব্যবসার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়।
নেপালের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফএনসিসিআইয়ের মহাসচিব গোকর্ণ রাজ আওয়াস্থি বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল এলডিসি উত্তরণ করতে যাচ্ছে। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা দরকার। নেপাল ভূ-বেষ্টিত হওয়ায় যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের সহযোগিতা দরকার।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, অর্থনৈতিক করিডোর অবশ্যই লাগবে। তবে আগে দরকার ব্যবসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। দেশীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা স্বস্তিতে ব্যবসা করতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি বিনিয়োগ মিলবে না।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং বলেন, বাংলাদেশের লজিস্টিক খাতে অবকাঠামোগত দুর্বলতা রয়েছে। যেমন- সড়কপথের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা, যানজট, খরচ বেশি হওয়া, মাল্টিমোডাল পরিবহনের ঘাটতি। এগুলো রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য বড় বাধা। তাই করিডোর উন্নয়নের পাশাপাশি লজিস্টিকস খাতের আধুনিকায়নও জরুরি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডিবির সিনিয়র ইকোনমিকস অফিসার বরুণ কুমার দে। তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও ভবিষ্যৎ কৌশল তুলে ধরেন। এডিবির পরিবহন বিশেষজ্ঞ নজরুল ইসলাম এবং সাবেক পরিচালক সব্যসাচী মিত্র অর্থনৈতিক করিডোর, লজিস্টিক হাব এবং বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ড র প রকল প অবক ঠ ম পর বহন আম দ র কল প ন ব যবস সরক র দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পথের বিড়ম্বনা লিখে পাঠান এখনই
রাজপথে যানজটে বা বৃষ্টিজটে ২৯ মে ২০২৫ কে কতক্ষণ ছিলেন?
গতকাল বৃহস্পতিবার দিনে-রাতে ঢাকার রাস্তায় ছিল ভয়াবহ যানজট। অনেকেই গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিলেন পথে, যানজটে, বৃষ্টিজটে। গাড়ি ছেড়ে হেঁটে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন যাত্রীরা। গতকালকের পথের বিড়ম্বনার অভিজ্ঞতা লিখে পাঠান প্রথম আলোয়।
প্রথম আলো ডটকমে আমরা প্রকাশ করব বাছাই করা লেখাগুলো। লেখা পাঠানোর ই-মেইল ঠিকানা: [email protected]। সম্ভব হলে নিজের তোলা ছবি পাঠাবেন। লেখা ৫০০ শব্দের মধ্যে হলে ভালো হয়। সেরা তিনজন লেখককে উপহার হিসেবে দেওয়া হবে প্রথমা প্রকাশিত বই। লেখা পাঠাবেন ৩০ মে, ২০২৫ বিকেল ৫টার মধ্যে।
বিভাগীয় সম্পাদক, পাঠকের লেখা, প্রথম আলো