ঝিনাইদহে মৎস্যজীবীদের দুঃখগাঁথা শুনলেন উপদেষ্টা
Published: 27th, May 2025 GMT
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বলুহর বাঁওড় পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ সময় তিনি স্থানীয় বাঁওড় পাড়ের মৎসজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় বলুহর বাঁওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মৎসজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেত মজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন।
আরো পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে শিকার করা ৮০ কেজি মাছ উদ্ধার
‘বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত প্রাণী’র অনন্য অর্জন
সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘‘একটি প্রবাদ আছে ‘জাল যার, জল তার’ কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে বাঁওড় ও প্রাকৃতিক জলমহালগুলো প্রভাবশালীদের মাঝে ইজারা দেয়া হয়। ফলে বাঁওড়গুলোতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাঁওড়গুলোতে বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে জলমহালগুলো তার প্রাকৃতিক রূপ হারিয়েছে।’’
মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘‘শত শত বছর ধরে হালদার মৎসজীবীরা বাঁওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার জলমহাল নীতি সংশোধন করে বাঁওড়গুলো বাণিজ্যিক স্বার্থে অমৎস্যজীবীদের মাঝে ইজারা দেয়। ইজারা নিয়ে প্রভাবশালী মহলের লোকজন বাঁওড়ে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। ইজারাদাররা বাঁওড়ে মৎস্য আহরণ ও বাঁওড়পাড়ের বাসিন্দারের ওপর নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।’’
হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা বলেন, ‘‘হালদার সম্প্রদায়ের প্রকৃত মৎস্যজীবীরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জীবিকা হারিয়ে আজ মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালীরা বাঁওড় ইজারা নিয়ে মৎস্যজীবীদের বাঁওড়ে অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করেছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এত মানুষ শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সকল বাঁওড়ের ইজারা বাতিল করতে হবে। তাহলে বাঁওড় বাঁচবে। পরিবেশ, প্রকৃতি ও বাঁওড়পাড়ের মৎস্যজীবীরা বাঁচবে।’’
মতবিনিময় সভায় মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাঁওড় ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘জাল যার জলা তার, এই নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। এই প্রজন্মই সমাজের সকল বৈষম্য দূর করবে। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাঁওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সকল দপ্তরের কথা বলব। বাঁওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাঁওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সকল পক্ষকে এ বিষয়ে সংহত হতে হবে।’’
ঢাকা/সোহাগ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট প রক ত ম উপদ ষ ট র মৎস
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে মৎস্যজীবীদের দুঃখগাঁথা শুনলেন উপদেষ্টা
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বলুহর বাঁওড় পরিদর্শন করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ সময় তিনি স্থানীয় বাঁওড় পাড়ের মৎসজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় বলুহর বাঁওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মৎসজীবী হালদার সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, জেলা ক্ষেত মজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান, মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন।
আরো পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে শিকার করা ৮০ কেজি মাছ উদ্ধার
‘বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত প্রাণী’র অনন্য অর্জন
সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘‘একটি প্রবাদ আছে ‘জাল যার, জল তার’ কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বাদ দিয়ে বাঁওড় ও প্রাকৃতিক জলমহালগুলো প্রভাবশালীদের মাঝে ইজারা দেয়া হয়। ফলে বাঁওড়গুলোতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও উৎপাদন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাঁওড়গুলোতে বাণিজ্যিক উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃত্রিম খাবার ও রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের ফলে জলমহালগুলো তার প্রাকৃতিক রূপ হারিয়েছে।’’
মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘‘শত শত বছর ধরে হালদার মৎসজীবীরা বাঁওড়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার জলমহাল নীতি সংশোধন করে বাঁওড়গুলো বাণিজ্যিক স্বার্থে অমৎস্যজীবীদের মাঝে ইজারা দেয়। ইজারা নিয়ে প্রভাবশালী মহলের লোকজন বাঁওড়ে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে। ইজারাদাররা বাঁওড়ে মৎস্য আহরণ ও বাঁওড়পাড়ের বাসিন্দারের ওপর নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।’’
হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা বলেন, ‘‘হালদার সম্প্রদায়ের প্রকৃত মৎস্যজীবীরা আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। জীবিকা হারিয়ে আজ মৎস্যজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালীরা বাঁওড় ইজারা নিয়ে মৎস্যজীবীদের বাঁওড়ে অঘোষিতভাবে নিষিদ্ধ করেছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এত মানুষ শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের সকল বাঁওড়ের ইজারা বাতিল করতে হবে। তাহলে বাঁওড় বাঁচবে। পরিবেশ, প্রকৃতি ও বাঁওড়পাড়ের মৎস্যজীবীরা বাঁচবে।’’
মতবিনিময় সভায় মৎস্যজীবী হালদার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ইজারা পদ্ধতি বাতিল করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাঁওড় ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘জাল যার জলা তার, এই নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে। এই প্রজন্মই সমাজের সকল বৈষম্য দূর করবে। প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাঝে বাঁওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সকল দপ্তরের কথা বলব। বাঁওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাঁওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক ও সামাজিক সকল পক্ষকে এ বিষয়ে সংহত হতে হবে।’’
ঢাকা/সোহাগ/বকুল