ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে রিনা পারভীন নামে এক গৃহবধূ দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকার অভিযোগ উঠেছে। রিনা অপহরণ, গুম বা হত্যার শিকার হতে পারেন– এ আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তাঁর পরিবার। এ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ জানিয়েছেন গৃহবধূর স্বজনরা। 

নিখোঁজ রিনা পারভীন (৩৭) কালীগঞ্জ পৌর এলাকার চাপালীখানা গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী। এই দম্পত্তির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 
রিনা পারভীনের স্বামী সাজ্জাদ হোসেনের ভাষ্য, গত ১১ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে তাঁর স্ত্রী কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর সারাদিন পেরিয়ে গেলেও বাড়িতে ফিরে না আসায় সন্ধ্যার পর তিনি স্ত্রীর মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পান। আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাঁর সন্ধান না মেলায় ওই রাতেই তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ট্র্যাকিং করে ১৩ এপ্রিল পাবনা ও ২৩ এপ্রিল পিরোজপুরে কিছু সময়ের জন্য ফোন খোলা পেয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা থানার উপপরিদর্শক রানা প্রতাপের অসহযোগিতার কারণে তাঁর স্ত্রীর সন্ধান পাওয়া বা তাঁকে উদ্ধার করা যায়নি।  

সাজ্জাদ হোসেন আরও জানান, তাঁর স্ত্রী ১১ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। গত ১২ মে ডাকে তাঁর কাছে একটি তালাকনামা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার ১ নম্বর চিলশিয়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল আমিন খান স্বাক্ষরিত ওই তালাকনামায় তারিখ উল্লেখ আছে ১ এপ্রিলের। তালাকনামার সত্যতা জানতে তিনি ওই রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এ ছাড়া তালাকনামায় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহের দু’জন সাক্ষীর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তাদের কোনো হদিস পাননি। তালাকের ঘটনাটি প্রতারক চক্রের সাজানো নাটক হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। তাঁর ভাষ্য, রিনা কোনো সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র বা অপহরণকারীদের খপ্পরে পড়তে পারেন। কারণ তাঁর স্ত্রীর কাছে সাত ভরির মতো স্বর্ণালংকার ও লক্ষাধিক টাকা ছিল। এসব হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই কোনো চক্র তাঁকে ফুসলিয়ে অপহরণ করে গুম করতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। 

এ ঘটনায় তাদের পরিবার তছনছ হয়ে গেছে বলে জানায় সাজ্জাদ হোসেনের ছেলে ছোয়াদ ইসলাম। সে বলে, নিখোঁজের প্রায় ৫০ দিন অতিবাহিত হলেও তার মাকে উদ্ধারে পুলিশ কোনো জোরালো ভূমিকা রাখেনি। মায়ের বেঁচে থাকা নিয়ে শঙ্কায় তাদের দিন কাটছে।

রিনা পারভীনের মা জাহানারা বেগম জানান, তাঁর মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের মধ্যে ভয় ও শঙ্কা বিরাজ করছে। নাতি-নাতনির মুখের দিকে তাকাতে পারছেন না। মেয়ের সন্ধান ও উদ্ধারে পুলিশের শক্ত ভূমিকা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।  

তালাকনামা পাঠানোর সত্যতা জানতে নিকাহ রেজিস্ট্রার নুরুল আমিন খানের মোবাইল ফোনে গতকাল বুধবার ও মঙ্গলবার একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক রানা প্রতাপ জানান, তিনি প্রথম দিকে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রিনা পারভীনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়েছেন। দু’সপ্তাহ আগে ওই নারী স্বামীর কাছে একটি তালাকনামা পাঠিয়েছেন বলে শুনেছেন। তবে তিনি তালাকনামাটি যাচাই-বাছাই করেননি।  

ও বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, গৃহবধূর নিখোঁজের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার   অসহযোগিতার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ ত কর মকর ত পর ব র গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের

প্রতিবছর বাঙালি হিন্দুদের সর্বজনীন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নানা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটে। আসন্ন দুর্গাপূজায় যেন কোনো ধরনের অরাজকতা না ঘটে, সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘বৈচিত্র্যকে সম্মান করি, সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করি, সম্প্রীতি বজায় রাখি’ শিরোনামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ঢাকার পাশাপাশি দেশের সব জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম, আন্দোলন উপপরিষদ সম্পাদক রাবেয়া খাতুন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আন্দোলন উপপরিষদ সদস্য বহ্নিশিখা দাশ পুরকায়স্থ বক্তব্য দেন। মহিলা পরিষদের প্রোগ্রাম অফিসার নুরুননাহার তানিয়া মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মর্যাদাকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ দেশে নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির লোকের বসবাস। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজকে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা আরও কার্যকর হওয়া আবশ্যক। রাষ্ট্রকাঠামো এমন হওয়া উচিত, যাতে সবাই মিলে নিজ নিজ উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিপিবির ১৩তম কংগ্রেস ১৯-২২ সেপ্টেম্বর, ঠিক হবে ‘রণকৌশল’
  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের