কুষ্টিয়ার মিরপুরে ২২ দিন বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগে মাসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পোড়াদহ চিথলিয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশন খাল থেকে শিশু জান্নাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

অভিযুক্ত মিতা খাতুন দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুণ্ডি গ্রামের রাজুর স্ত্রী। আটক বাকিরা হলো– মিতার চাচাতো ভাই সেরেবুল ইসলাম, চাচা সাইদুল ইসলাম ও ভাবি চাঁদনী খাতুন। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাজুর সঙ্গে ৮ মাস আগে মিতা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পরই পরিবারের লোকজন বুঝতে পারেন, মিতা অন্তঃসত্ত্বা। এ নিয়ে রাজু ও মিতার মধ্যে প্রায়ই কলহ হতো। ২২ দিন আগে কন্যাসন্তান প্রসব করেন মিতা। শিশুটির নাম রাখা হয় জান্নাতি। দুই সপ্তাহ আগে মিতা তাঁর নবজাতককে নিয়ে বাবার বাড়ি মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামে চলে আসেন। সেখানে শিশুটির পিতৃপরিচয় নিয়ে মিতার প্রেমিক ও চাচাতো ভাই সেরেবুলের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়। পরে তারা শিশুটিকে হত্যা করে। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, সেরেবুলের বাবা সাইদুল ইসলাম ও ভাবি চাঁদনী খাতুন শিশুটিকে হত্যায় সহায়তা করে। গত রোববার শিশুটিকে হত্যার পর বাড়ির পাশের বরিশাল খালে ফেলে দেয় মিতা ও তার প্রেমিক সেরেবুল। এ ঘটনার পর তারা প্রচার চালাতে থাকে– খলিসাকুণ্ডি থেকে মিতার স্বামী রাজু বাচ্চাটি চুরি করে নিয়ে গেছেন।

মিরপুর থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যার পর শিশুটির মা মিরপুর থানায় নিখোঁজ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর পর পুলিশের তদন্তে শিশুটির মাকে সন্দেহ হলে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি শিশু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। এর পর হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বরিশাল খাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ল ইসল ম হত য র

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ