টোকিওর সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেলে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 30th, May 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ শুক্রবার বিকেলে টোকিও’র সোকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দেবেন। সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয়টি অধ্যাপক ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে।
জাপান সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা শনিবার সকালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে টোকিও ত্যাগ করবেন। তিনি ওই দিন গভীর রাতে দেশে পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ২৭ মে অধ্যাপক ইউনূস চার দিনের সরকারি জাপান সফরে টোকিও পৌঁছেন।
এর আগে শুক্রবার টোকিওতে প্রধান উপদেষ্টা ড.
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উভয়পক্ষ রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। জাপানের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্সের অধীনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে পাঁচটি টহল নৌকা দ্রুত সরবরাহের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তিতে দুই সরকার নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন হওয়ার আশাও প্রকাশ করেছেন তারা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে উভয়পক্ষ কৌশলগত অংশীদারত্বের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা সকলের জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য একটি মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য তাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সংস্কার উদ্যোগ এবং বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উত্তরণের প্রচেষ্টার জন্য অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জাপান। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উভয়পক্ষ অর্থনৈতিক সংস্কার এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার জন্য উন্নয়ন নীতি ঋণের জন্য নোট বিনিময় স্বাক্ষর এবং জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশন (১)-এর মধ্যে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ঋণকে স্বাগত জানিয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।