মাদারীপুরে ছিনতাই হওয়া পুলিশের ৩০টি গুলি উদ্ধার, থানায় মামলা
Published: 30th, May 2025 GMT
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে গণেশ পাগলের কুম্ভমেলায় পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের সংঘর্ষের সময় ছিনতাই হওয়া ৩০টি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে মেলার মাঠ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এসব গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রাজৈর থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে কদমবাড়ি গণেশ পাগল সেবাশ্রমের মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের সংঘর্ষ হয়। তখন গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ছিনতাইয়ের ঘটনার পর রাতেই কনস্টেবল মেহেদি হাসান ও জুবায়ের হাসানকে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
মাদারীপুর জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, মেলায় জুয়ার আসর ও মাদক প্রতিরোধে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। জুয়া বা মাদকসহ কোনো অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ভোরে কনস্টেবল মেহেদি হাসান ও জুবায়ের হাসান মেলার মাঠে একটি জুয়ার আসরে গিয়ে অনৈতিক সুবিধা দাবি করেন। এ নিয়ে জুয়াড়িদের সঙ্গে তর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় মেহেদি হাসানের সঙ্গে থাকা শটগানের গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেয় জুয়াড়িরা। পরে তারা পালিয়ে যায়।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ছিনতাই হওয়া গুলিগুলো মেলার মাঠের এক পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় জুয়াড়িরা। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। মেলায় দায়িত্বে না থাকলেও দুই পুলিশ সদস্য সাদাপোশাকে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁরা কোনো ধরনের অভিযান চালানোর এখতিয়ার রাখেন না। বরং তাঁরা ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে সেখানে গিয়ে জুয়াড়িদের সঙ্গে ঝামেলা বাধান। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ নত ই
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুরে মেলায় জুয়ার আসরে অভিযানে সংঘর্ষ, পুলিশের বন্দুক ছিনতাই
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে গণেশ পাগলের কুম্ভমেলায় পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করে ৩০টি গুলি ছিনিয়ে নিয়েছে জুয়াড়িরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে কদমবাড়ি গণেশ পাগল সেবাশ্রমের মেলা প্রাঙ্গণে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে গতকাল রাতে মেহেদি হাসান ও জুবায়ের হাসান নামের দুই কনস্টেবলকে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাদাপোশাকে ওই দুই পুলিশ সদস্য মেলার মাঠে জুয়ার আসরে গেলে জুয়াড়িদের সঙ্গে তাঁদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে এবং কনস্টেবল মেহেদির সঙ্গে থাকা শটগানের গুলিভর্তি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেয় জুয়াড়িরা। ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মেলার আয়োজক কমিটি জানায়, বুধবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী গণেশ পাগলের কুম্ভমেলা শুরু হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও কিছু অসাধু চক্র মেলায় জুয়া ও মাদকের আসর বসিয়েছে। তবে এসব প্রতিরোধে প্রশাসনের দৃশ্যমান তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ তাদের।
সেবাশ্রম কমিটির সভাপতি মিরণ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা যতবার জেনেছি, পুলিশের সহায়তায় জুয়ার আসর বন্ধ করেছি। তবে এবার তারা কিছুটা দূরে গিয়ে জুয়ার আসর বসিয়েছে।’ প্রকাশ্যে গাঁজা সেবনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেও কিছু করতে পারছি না। প্রশাসনও পারেনি। এখন আমরা কী করব?’গতকাল রাতে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হালকা বৃষ্টির কারণে মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা কম। কালীমন্দিরসংলগ্ন এলাকায় প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন ও বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। সেখানে শতাধিক মাদকসেবীকে একত্রে বসে গাঁজা সেবন করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় মেলার পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।
মেলার মাঠে জুয়ার আসর পরিচালনাকারী মাসুদ নামের এক জুয়াড়ি বলেন, ‘জুয়ার খোটের বিষয় সব কমিটির (গণেশ পাগল সেবাশ্রম কমিটি) লোকজন জানেন, আমি কিছু জানি না। আমাকে দুই হাজার টাকা বেতনে কাজ করাত। পুলিশের সঙ্গে জুয়াড়িদের মারামারির পরে সবগুলো আসরই এখন বন্ধ।’
মেলায় আসা দর্শনার্থী সুজয় কর্মকার বলেন, ‘মেলার দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টিতে ভিজেই এসেছি। এখানে সবকিছুর ব্যবস্থাপনা ভালো হলেও মেলায় মাদক সেবন বন্ধ করা অতিজরুরি। এতে চারপাশের পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। যারা দূরদূরান্ত থেকে এসেছে, তাদের মধ্যেও ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে।’
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশের কনস্টেবল মেহেদী হাসান মুঠোফোনে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে মাদারীপুর পুলিশ লাইনসে আছেন। তাঁর কাছ থেকে ৩০টি গুলি ছিনতাইয়ের বিষয়টা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা দেখছেন।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনার পর দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে। মেলায় মাদক ও জুয়ার বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।