মুন্সীগঞ্জে রজতরেখা নদীর ওপর নির্মিত একটি পাকা সেতু ধসে পড়েছে। শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের খাসকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে খাসকান্দি-নলবুনিয়াকান্দি সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল দু’দিন ধরে বন্ধ। গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ফলে গ্রাম দুটির কয়েক হাজার বাসিন্দা দুর্ভোগে পড়েছেন। 
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে চরকেওয়ার ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত  খাসকান্দি কবরস্থানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রজতরেখা নদীর ওপর ২০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নলবুনিয়াকান্দি ও খাসকান্দি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন সেতুটি ব্যবহার করে অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত করত।
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নদীর তীরে মাটি সরে যায়। এতে করে সেতুর উত্তর পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কের নিচের মাটি দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ওই অংশের মাটি ধসে পড়ে। এতে সেতুটিও খালে কাত হয়ে পড়ে যায়। এ কারণে খাসকান্দি-নলবুনিয়াকান্দি সড়কের দুই পাশ যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ ও নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। সাইফুল ইসলাম খোকাসহ দুই গ্রামের একাধিক বাসিন্দার ভাষ্য, সেতুটি এলাকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হঠাৎ সেটি ধসে পড়ায় সবার ভোগান্তি হচ্ছে। দুই গ্রামের মানুষকে এখন নৌকা দিয়ে নদী পারাপার করতে হচ্ছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন বেশি। প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তাদের এই ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো.

আরিফুল হাসানের মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে পিআইওকে খোঁজখবর নিতে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছেন। পরে তিনি প্রতিবেদন দেবেন। ইতোমধ্যে গ্রামবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। দ্রুত সড়ক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনে 
পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ