ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘মিলিটারি অপারেশনস জোন’–এর সংবাদ মিথ্যা, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ
Published: 1st, June 2025 GMT
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ‘মিলিটারি অপারেশনস জোন’ ঘোষণা বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজের সংবাদ মিথ্যা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা বলছে, প্রমাণবিহীন এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত সংবাদ একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো ও বিভেদ উসকে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে এই সংবাদ তৈরি করা হয়েছে।
আজ রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনীর এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজের ‘বাংলাদেশ টু ডিক্লেয়ার কক্সবাজার টু বান্দরবান এরিয়া অ্যাজ আ মিলিটারি অপারেশনস জোন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের সংবাদ ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের পরিকল্পিত অপচেষ্টার অংশ, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করা।
সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘সন্ত্রাসী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে’—এই ধরনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যা একেবারে ভিত্তিহীন, অসত্য এবং একধরনের বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার। প্রমাণবিহীন এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত সংবাদ একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ, যা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং বিভেদ উসকে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব বজায় রেখে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং সংবিধান রক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় স্বার্থে সেনাবাহিনী কখনোই আপস করেনি, আর ভবিষ্যতেও করবে না।
ভারতীয় গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়, এ ধরনের বানোয়াট প্রতিবেদনকে সাংবাদিকতা বলা যায় না; এটি একটি সুপরিকল্পিত ও ধারাবাহিক কুৎসা রচনার অংশ। বাংলাদেশ সব সময় ঐক্যবদ্ধ থেকেছে এবং দেশের জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।
সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।
সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’
নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।