বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ‘মিলিটারি অপারেশনস জোন’ ঘোষণা বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজের সংবাদ মিথ্যা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা বলছে, প্রমাণবিহীন এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত সংবাদ একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো ও বিভেদ উসকে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে এই সংবাদ তৈরি করা হয়েছে।

আজ রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেনাবাহিনীর এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতীয় গণমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজের ‘বাংলাদেশ টু ডিক্লেয়ার কক্সবাজার টু বান্দরবান এরিয়া অ্যাজ আ মিলিটারি অপারেশনস জোন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের সংবাদ ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের পরিকল্পিত অপচেষ্টার অংশ, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করা।

সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘সন্ত্রাসী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে’—এই ধরনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যা একেবারে ভিত্তিহীন, অসত্য এবং একধরনের বিদ্বেষপূর্ণ অপপ্রচার। প্রমাণবিহীন এই ধরনের কল্পনাপ্রসূত সংবাদ একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ, যা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং বিভেদ উসকে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব বজায় রেখে জাতীয় সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং সংবিধান রক্ষার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয় স্বার্থে সেনাবাহিনী কখনোই আপস করেনি, আর ভবিষ্যতেও করবে না।

ভারতীয় গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়, এ ধরনের বানোয়াট প্রতিবেদনকে সাংবাদিকতা বলা যায় না; এটি একটি সুপরিকল্পিত ও ধারাবাহিক কুৎসা রচনার অংশ। বাংলাদেশ সব সময় ঐক্যবদ্ধ থেকেছে এবং দেশের জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা প্রস্তুত ও দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপিকে মাইনাস করে আরেকটি দল প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে : ফারুক

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মসনদ টা মনে হয় এখন কেউ কেউ আর ছাড়তে চায় না। নয় মাস অতিবাহিত হলো এখনো কেন নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না। তাই জনগণের মাঝে সকলের কাছে প্রশ্ন আপনাকে চিরস্থায়ী ক্ষমতায় বসানো হয় নাই।

তিন মাসে যদি শাহাবুদ্দিন নির্বাচন করতে পারে আপনি কেন সাড়ে নয় মাসে নির্বাচন দিতে পারছেন না। মানুষ  সন্দেহ করছে এবং বলা শুরু করেছে, কি যেন একটা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে,  দেশে আরেকটি দলকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটা হীন ষড়যন্ত্র চলছে।

আমাদেরকে বারবার ডেকে নির্বাচনকে প্রলম্বিত করার আর কোন সুযোগ নাই। আপনাকে ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে জন প্রতিনিধির হাতে সংসদের হাতে ক্ষমতা দেয়ার অনুরোধ করছি।

রবিবার (১ জুন) সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে মিতালী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এ সময় জয়নুল আবেদীন ফারুক আরও বলেন, গণতন্ত্রকে শেখ মুজিবের মতো গলা টিপে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় হলো। ঠিক এই মুহূর্তে আবার বাংলাদেশে আরেকটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার হচ্ছে।

সেই ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে আমরা যেন এই বিএনপির পরিবার তারেক রহমানের নেতৃত্বে সুস্থ সংগঠন তৈরি করতে পারি। তাই আমি বলতে চাই যে, ষড়যন্ত্র চলছে বাংলাদেশে বিএনপিকে মাইনাস করার, আওয়ামী লীগকে যেভাবে নিষিদ্ধ করে মাইনাস করেছে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিএনপিকে মাইনাস করার।

এই ষড়যন্ত্র রুখতে হলে, কে বড় নেতা, কে উঁচু দেয়ালে থাকে সেগুলো চিন্তা করলে চলবে না। একটাই চলবে যে আমি বিএনপি করি। 

তিনি বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে একটাই বুঝি আমার আমার নেতা শহীদ জিয়া, আমার নেত্রী খালেদা জিয়া, আমার নেতা তারেক রহমান। এ তিনজন ব্যক্তি অপরিহার্য, আমার অপরিহার্য হওয়ার দরকার নাই। 

শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান আমার নেত্রীকে সাইনবোর্ডে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রেখেছে। বলেছিল খেলা হবে। আমি এখন বলছি আসুন খেলি, খেলার মাঠ খালি। আমরা ১১ জন প্রস্তুত তুমি তো নাই।

আসো, তখন খেলা শুরু করেছো পুলিশের উপর নির্ভর করে, অস্ত্রের উপর নির্ভর করে। এখন কিন্তু খেলার সময়। রেফারি মাঠে, খেলা সঠিক হবে, নিরপেক্ষ হবে। আমাদের মিতালী মার্কেটের ১১ জন দিয়ে আমরা খেলব। নারায়ণগঞ্জ শহরে যেতে হবে না। 

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ বিএনপি নেতা হাসিনার অত্যাচারে হাঁটু পানিতে থেকে কবরস্থানে ঘুমিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মীরা রংপুরে এবং রংপুরের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জে এসে রিকশা চালিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেছিল আমি যদি ক্ষমতা ছেড়ে দেই তাহলে আওয়ামী লীগের একটা নেতাকর্মীও তোমরা বিএনপির হাত থেকে বাঁচবে না। বিএনপির একটা নেতাকর্মী সারা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীর গায়ে হাত দেয় নাই। আমার নেত্রী খালেদা জিয়া এবং আমার নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। 

নবগঠিত একটি দলকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবেদী ফারুক বলেন, নতুন করে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলি, প্রিয় বন্ধুগণ নতুন দল করেছেন স্বাগত জানাই। আপনাদের আন্দোলনে অংশগ্রহণের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে আপনারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের আন্দোলন করে হাসিনাকে বিদায় করেছেন। এ কারণে সকলের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে আপনারা মসনদে বসিয়েছেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মিলিটারি অপারেশনস জোন’ নিয়ে সংবাদের প্রতিবাদ সেনাবাহিনীর
  • বিএনপিকে মাইনাস করে আরেকটি দল প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে : ফারুক
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে জয়ী হবে: খন্দকার মোশাররফ
  • ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সবার আকাঙ্ক্ষা: সিপিবি সভাপতি