সিরাজগঞ্জে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে বাসের নিচে ফেলে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুলের রাধানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত ব্যক্তির স্ত্রীর ভাষ্য, বাড়তি ভাড়া ও যেখানে সেখানে যাত্রী তোলার প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁর স্বামী সৈকত আহমেদ (২৩)। এ ঘটনার জেরে সৈকতকে হত্যা করা হয়। 

পেশায় রাজমিস্ত্রি সৈকতের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার হাজারিকা বেগুনিপাড়ায়। তিনি কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকেন। স্ত্রী হুমনা খাতুনকে নিয়ে ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য বাড়ি ফিরছিলেন। তারা ঢাকার গাবতলী থেকে এইচ কে ট্রাভেলসের ওই বাসটিতে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৩৩৫০) ওঠেন।

হুমনা খাতুন জানান, বাসে ওঠার সময় তারা জনপ্রতি ৪০০ টাকা ভাড়া দেন। কিন্তু পথেই বাসটির সুপারভাইজার ৭০০ টাকা করে ভাড়া দাবি করেন। এ জন্য অনেকেই নেমে যান। যমুনা সেতু পার হয়ে বাড়ে কড্ডা এলাকায় এ নিয়ে সুপারভাইজারের সঙ্গে যাত্রীদের তর্কাতর্কি হয়। এ সময় তাঁর স্বামী এগিয়ে গিয়ে এমন প্রতারণার প্রতিবাদ করেন। তিনি হাইওয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানানোর হুমকি দেন। 

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুপারভাইজার সৈকতকে ধাক্কা দেয়। সঙ্গে সঙ্গে চালক বাসের গতি বাড়িয়ে দেন। এ তথ্য জানিয়ে হুমনা আরও বলেন, বাসটির গতি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার স্বামী ছিটকে নিচে পড়েন। বাসটির চাকার ধাক্কায় তাঁর মাথা থেঁতলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। স্বামী হত্যার বিচার দাবি করে তিনি জানান, এ ঘটনায় সলঙ্গা থানায় মামলা করবেন। 

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো.

শহিদ উল্লাহ বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, হাইওয়ে পুলিশ বাসটিকে আটক করলেও চালক, হেলপার, সুপারভাইজার পালিয়ে গেছেন। ঢাকা-বগুড়া রুটের বাসটির বৈধ রুট পারমিট আছে কিনা, তা জানা যায়নি। ইতোমধ্যে সৈকতের মরদেহ সলঙ্গা থানায় বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হবে। তাঁর স্ত্রী বাদী হয়ে সেখানেই মামলা করবেন। 

সিরাজগঞ্জ বিআরটিএর পরিদর্শক হাফিজুল ইসলামের ভাষ্য, এইচ কে ট্রাভেলসের ওই বাসটি নিটল মটরস ও এক্সিম ব্যাংকের নামে ২০০৮ সালে নিবন্ধন করা হয়। বাসটির ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স, ইন্স্যুরেন্সসহ অন্যান্য কাগজ ১৬ বছরেও নবায়ন করা হয়নি। তারা এই মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে দু’দিন ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার

যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।

জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।

এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে। 

এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর। 

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”

ঢাকা/রিটন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ