এমন না যে তিনি তাঁর ফ্ল্যাটে তালা মেরে কোথাও বেড়াতে গেছেন। বাসা খোলা। ভাই, মানে ভাবির হাজব্যান্ড বিদেশে। এক ছেলে গেছে বন্ধুদের সঙ্গে মাস্তি করতে, বাড়ি ফাঁকা, বাসায় ভাবি একাই ছিলেন। তাহলে হঠাৎ গেলেন কোথায়? সবার মধ্যে আতঙ্ক।
কে একজন খালি বাসায় সরেজমিন চেক করতে গিয়ে কী মনে করে একফাঁকে ডিপ ফ্রিজ খুলে দেখেন, সেখানে একটা প্যাকেট, তাতে লেখা, ‘ভাবির কলিজা’! আতঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে গেল। তবে কি খালি বাসায় কেউ তাঁকে.
‘কী হয়েছে আপনার?’ পাশের ফ্ল্যাটের আরেকজন প্রতিবেশী এগিয়ে এলেন।
‘ভাবি...ভাবি...!’ বাকিটা আর বলতে পারলেন না। ওখানেই দেয়াল ধরে বসে পড়লেন। ঠিক তখনই লিফটের দরজা খুলে ভাবি এসে দাঁড়ালেন।
‘একি ভাবি! আপনি?’
‘হ্যাঁ, আমি। কেন, কী হয়েছে?’
‘আপনি সকাল থেকে নেই, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা...!’
আরে, ওকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেব ভাবছি। আপাতত গ্যারেজে গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে লাগিয়ে দিয়েছি।‘ওহ্, আর বলবেন না। দরজা খোলা রেখেছি বুয়া এসে ঘরদোর গোছাবে। আর আমি গিয়েছিলাম আপনার ভাই কিছু টাকা পাঠিয়েছে, ওটা আনতে। টাকা পাঠানোর আর সময় পেল না।’
‘টাকা পেয়েছেন?’
‘পেয়েছি। তারপর তো আরেক কাণ্ড!’
‘কী কাণ্ড?’
‘টাকা নিয়ে আসছি, পথে এক লোক একটা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বলল, “ঠিকানাটা একটু বলে দিন না।”’
‘সর্বনাশ! এ তো শয়তানের নিশ্বাস!’ অন্যরা একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলেন।
‘হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি তো জানি। এসব কেস পত্রিকায় পড়েছি, ফেসবুকে দেখেছি। আমি সঙ্গে সঙ্গে কাগজটা ওর হাত থেকে কেড়ে নিয়ে উল্টা ওর নাকের কাছে ধরলাম...ব্যস, লোকটা একদম কেমন যেন ভ্যাবদা মেরে গেল। যা-ই বলি, তা-ই শোনে।’
‘তারপর? লোকটা কই? পুলিশে দিয়েছেন?’
‘কিসের পুলিশ, লোকটাকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি।’
‘সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন মানে?’ সবাই শিউরে উঠলেন।
‘আরে, ওকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেব ভাবছি। আপাতত গ্যারেজে গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে লাগিয়ে দিয়েছি।’
‘বলেন কী!’ সবাই হুড়মুড় করে ছুটলেন লোকটাকে দেখতে।
গিয়ে দেখেন, সত্যিই গ্যারেজে বসে বিমর্ষ ভঙ্গিতে এক লোক গরুর ভুঁড়ি পরিষ্কার করছে। এর মধ্যে একজন প্রশ্ন করে বসলেন, ‘এই, তোমার “শয়তানের নিশ্বাস”-এর ঘোর কতক্ষণ থাকবে?’
লোকটা বিড়বিড় করে কী সব বলে, বোঝা যায় না।
‘তাহলে তো ওকে দিয়ে আমার গরুর ভুঁড়িটাও পরিষ্কার করিয়ে নিতে পারি। কী, পারবে না?’
লোকটা মাথা নাড়ে, পারবে। এ সময় পিঙ্কি ভাবিকে দেখা যায়। লোকটাকে বলেন, ‘এই, ভুঁড়ি পরিষ্কার করেছ?’
‘জি, ম্যাডাম!’
‘এবার ছাদে যাও, ছাদবাগানে পানি দিতে হবে।’
কিন্তু বিকেলের মধ্যে দুজন পুলিশ এসে হাজির হলেন। দারোয়ান এগিয়ে গেলেন। ‘এখানে শয়তানের নিশ্বাসের এক আসামি নাকি ধরা পড়েছে?’লোকটা রোবটের মতো উঠে দাঁড়ায়, হাঁটা দেয় লিফটের দিকে। ছাদবাগানে পানি দিতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ভাবির কানে কানে একজন বলেন, ‘আপু, এই শয়তানের নিশ্বাসের ঘোর কিন্তু দুই ঘণ্টার মতো থাকে। এক ঘণ্টা কিন্তু হয়ে গেছে।’
‘আরে, আমিও খোঁজ নিয়েছি, দুই থেকে তিন ঘণ্টা থাকে। গুগল করে আগেই জেনে নিয়েছি। দেড় ঘণ্টার মতো হয়েছে...আরও দেড় ঘণ্টা হাতে আছে। আপনারা কেউ ওকে দিয়ে কোনো কাজ করাতে চান?’
‘আমার ভুঁড়িটার যদি...।’
‘বেশ, ছাদবাগানে পানি দেওয়ার পর...।’
কিন্তু বিকেলের মধ্যে দুজন পুলিশ এসে হাজির হলেন। দারোয়ান এগিয়ে গেলেন।
‘এখানে শয়তানের নিশ্বাসের এক আসামি নাকি ধরা পড়েছে?’
‘জি জি।’
‘সে কোথায়?’
‘সে ছাদে টাংকি পরিষ্কার করতেছে।’
‘মানে?’
দারোয়ান এদিক-ওদিক তাকিয়ে গলা এক ধাপ নামিয়ে বললেন, ‘স্যার, ফ্ল্যাটের ম্যাডামরা সব ওকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন, ওই লোককে যা বলা হয়, তা-ই করে...।’
‘বুঝতে পেরেছি, তার মানে আসামিই এখন ভিকটিম!’
‘ঠিক তা-ই।’ পাশে পিঙ্কি ভাবি কখন এসে দাঁড়িয়েছেন, দারোয়ান-পুলিশ কেউই টের পায়নি। ‘আপনারা খবর পেলেন কীভাবে?’
‘আপনাদের এখান থেকে কেউ একজন থানায় ফোন করেছেন, পুরো ঘটনাই শুনেছি আমরা।’
‘হুম, এখন কি ওকে অ্যারেস্ট করতে চান?’
‘সে জন্যই আমাদের আসা।’ এ সময় সেই লোককে আসতে দেখা গেল, তার জামাকাপড় ভেজা, ছাদের ট্যাংকি পরিষ্কার করে নেমে এসেছে। তখনো সে কেমন যেন ভ্যাবদা মেরে আছে।
‘এ–ই তাহলে আসামি?’
‘জি।’
‘এই, তোমার ঠিকানা লেখা কাগজটা বের করো।’ লোকটা বের করল, কাগজটাও ভিজে চুপচুপে। তবে সেখানে সত্যি সত্যি একটা ঠিকানা লেখা। ঠিকানাটা একটা মেন্টাল হসপিটালের। পুলিশ দুজন একজন আরেকজনের দিকে তাকান, ‘এ তো মেন্টাল কেস মনে হচ্ছে। ম্যাডাম মনে হয় ভুল করে...!’
‘মানুষমাত্রই ভুল করে, ভুল না করলে শিখবে কোথা থেকে?’ পিঙ্কি ভাবি দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে ভাবেন...।
আরও পড়ুন‘শয়তানের নিশ্বাস’ বা ‘ডেভিলস ব্রেথ’ থেকে নিরাপদ থাকতে কী করবেন১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শয়ত ন র ন শ ব স ক জ কর আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে আবারো করোনায় ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৩
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আরো ৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত দেশে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৩৯ জন।
আরো পড়ুন:
অনুমোদিত ভ্রমণকাল শেষে থাকলে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
মূল্যস্ফীতি কমলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুদহার কমানো হবে: গভর্নর
২৪ ঘণ্টায় ৩ জন করোনারোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এক কোটি ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ২২৪ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন এবং এ পর্যন্ক দেশে মোট দুই হাজার ৫০০ জন মারা গেছেন।
২৪ ঘণ্টায় মৃত একজন পুরুষ, তার বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে। তিনি ঢাকা বিভাগের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার মোট ১৩ দশমিক শূন্য পাঁচ। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এর আগে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর থেকে করোনায় আক্রান্ত হলেও দীর্ঘ সময়ে আর কেউ মারা যায়নি।
২০২০ সালের ৮ মার্চ মাসে দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
ঢাকা/সাইফ