Prothomalo:
2025-07-31@08:24:14 GMT

সেই ছাগল এখন কোথায়

Published: 5th, June 2025 GMT

বিক্রেতা কারাগারে, ক্রেতা লোকচক্ষুর আড়ালে, ক্রেতার মা–বাবা কারাগারে, ভাই–বোন মামলার আসামি। একটি ছাগল ঘিরে এত কিছু ঘটে গেল, কিন্তু সেই ছাগল রয়েছে ছাগলের জায়গায়।

বলছি মতিউরের সেই ছাগলের কথা। বাদামি গায়ে ছোপ ছোপ দাগ, আকারে বেশ বড়। ২০২৪ সালে পবিত্র ঈদুল আজহায় সবচেয়ে আলোচিত ছিল এই ছাগল।

যাঁরা ভুলে গেছেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিই, ২০২৪ সালের পবিত্র ঈদুল আজহার আগে সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ছাগলটি কেনেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তৎকালীন সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় ঘরের সন্তান মুশফিকুর রহমান (ইফাত)। সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন তখন ছাগলটির দাম নেন ১৫ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন‘উচ্চবংশীয়’ ছাগলের খামার সাদিক অ্যাগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান গ্রেপ্তার০৩ মার্চ ২০২৫

মতিউরের ছেলে মুশফিকুর ছাগলটির সঙ্গে একটি সেলফি তুলে ফেসবুকে দেন। সে–ই শুরু। নেটিজেন ও পরে সাংবাদিকেরা বের করে ফেলেন, এই ছাগলের ক্রেতা এনবিআরের একজন কর্মকর্তার ছেলে। একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে কীভাবে এত দাম দিয়ে একটি ছাগল কেনেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মতিউর দাবি করেন, ছাগলের ক্রেতা তাঁর ছেলে নন। পরে অবশ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, মতিউরের আরেক স্ত্রী আছেন। সেই ঘরের সন্তান ছাগলের ক্রেতা মুশফিকুর।

ছাগল–কাণ্ডের পর মতিউর এনবিআর থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। অবশ্য সবকিছু সেখানে শেষ হয়ে যায়নি। বেরিয়ে আসতে থাকে নানা কেলেঙ্কারির তথ্য। চাপের মুখে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই সাদিক অ্যাগ্রোতে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দেশে আমদানি–নিষিদ্ধ ব্রাহামা জাতের পাঁচটি গরু উদ্ধার করা হয়। পরে মামলা দেওয়া হয় সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক ও খামারমালিক সমিতির সভাপতি ইমরানের বিরুদ্ধে।

এদিকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। গত জানুয়ারিতে দুদক অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মতিউর ও তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, তাঁদের ছেলে তৌফিকুর রহমান ও মেয়ে ফারজানা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে। ১৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন মতিউর ও তাঁর স্ত্রী লায়লা।

আরও পড়ুনছাগল–কাণ্ড: গত বছর ঈদে ইফাত এক খামার থেকেই কেনেন ৬টি পশু ২২ জুন ২০২৪

মতিউরের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মতিউর ও লায়লা কারাগারে আছেন। তাঁরা জামিন পাননি। মুশফিকুর মাইনর, অর্থাৎ ঘটনার সময় বয়স ১৮ হয়নি। তিনি বিদেশে আছেন।

মতিউরের প্রথম ঘরের ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান, মেয়ে ফারজানা রহমান (ঈশিতা) এবং দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার পলাতক।

ছাগলটি কোথায়

মুশফিকুর সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ছাগলটি কিনলেও তা শেষ পর্যন্ত নেননি। সেটি রয়ে যায় সাদিক অ্যাগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারে। খামারটি ‘অবৈধ’ভাবে সরকারি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছিল জানিয়ে ২০২৪ সালের জুনে তার বড় অংশ ভেঙে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

সাদিক অ্যাগ্রো সূত্র জানায়, পরে তারা অন্যান্য গরু–ছাগলের সঙ্গে আলোচিত ছাগলটিও সরিয়ে সাভারে নিজেদের আরেক খামারে নেয়। এখনো ছাগলটি সেই খামারে আছে। গতকাল সাদিক অ্যাগ্রোর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ছাগলটি তাঁদের কাছেই আছে। বিক্রি না করে তাঁরা এটি দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন।

ছাগলের যা–ই হোক, ছাগল–কাণ্ডকে কেন্দ্র করে মতিউর–পরিবার বিচারের আওতায় আসছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৪ স ল র র রহম ন ছ গলট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি

বাংলাদেশে খুচরা (রিটেইল) ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি)। ফলে বহুজাতিক এই ব্যাংকে আর কোনো ব্যক্তি আমানত ও ঋণসংক্রান্ত সেবা পাবেন না। তবে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্তটি হুট করে কার্যকর করা হবে না। ধাপে ধাপে গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে এই সেবা বন্ধ করা হবে। এইচএসবিসির গ্লোবাল এক পর্যালোচনায় বাংলাদেশ থেকে খুচরা ব্যাংকিং ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংকটি আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

খুচরা ব্যাংকিং সেবার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত হিসাব, গাড়ির ঋণ, বাড়ি কেনার ঋণ, বিমাসেবা, মেয়াদি বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত অর্থায়ন। এর মধ্যে প্রচলিত ও শরিয়াহ দুই ধরনের সেবা রয়েছে। এসব সেবায় এখন নতুন গ্রাহক যুক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যাংকটি। ব্যাংকটির ওয়েবসাইটেও এ–সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৪ সাল শেষে এইচএসবিসি বাংলাদেশের আমানত ছিল ২২ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা এবং ঋণ ও অগ্রিম ছিল ১৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। গত বছর ব্যাংকটির মুনাফা বেড়ে হয় ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। সারা দেশের ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় ব্যাংকটির ব্যবসাকেন্দ্র রয়েছে। সারা দেশে শাখা ও উপশাখা রয়েছে সাতটি। এ ছাড়া পাঁচটি ‘সিলেকট’ সেন্টারের মাধ্যমে বিশেষ ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে বহুজাতিক এই ব্যাংক। সারা দেশে ব্যাংকটির এটিএম বুথ রয়েছে ১১টি।

এক বিজ্ঞপ্তিতে এইচএসবিসি জানিয়েছে, ব্যাংকটি বাংলাদেশে তাদের রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করছে। এই প্রক্রিয়া এ বছরের দ্বিতীয় অংশে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে। বাংলাদেশে রিটেইল ব্যবসায় এইচএসবিসির বাজার অবস্থান ও এই ব্যবসার কৌশলগত অবস্থানকে বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিটেইল ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ধাপে ব্যাংকটি তাদের গ্রাহকদের অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করপোরেট ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবসা এ ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবে। বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসাটি এইচএসবিসির আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি মার্কেট হিসেবেই থাকছে। এইচএসবিসি গ্রুপ বাংলাদেশের করপোরেট ও ইনস্টিটিউশন ব্যাংকিং তথা করপোরেট গ্রাহকদের সেবা প্রদানকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং ওই ব্যবসায় ট্রেড ও ইনভেস্টমেন্টে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী গ্রুপটির কার্যক্রম আরও সহজতর করার একটি অংশবিশেষ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরে ঘোষণা করা হয়। যেসব দেশে এইচএসবিসির পরিষ্কার প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে, সেই সব দেশে ব্যাংকটি তার গ্রাহকদের ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদানে গুরুত্ব অব্যাহত রাখবে।

জানা যায়, খুচরা ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করলেও বাংলাদেশে আমদানি-রপ্তানিসহ করপোরেট ও কমার্শিয়াল ব্যাংকিং ব্যবসার প্রসার অব্যাহত রেখেছে ব্যাংকটি। ফলে ব্যাংকটির মুনাফাও বাড়ছে। এইচএসবিসি বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৪ সালে এক হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। বহুজাতিক ব্যাংকটি ২০২৩ সালে ৯৯৯ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। ২০২২ সালে এইচএসবিসির নিট মুনাফা ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা।

ব্যাংকের ২০২৪ সালের প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীতে বলা হয়েছে, সুদের আয় বৃদ্ধি, আমানতের খরচ কমা এবং বিনিয়োগ থেকে ভালো আয় হওয়ায় রেকর্ড মুনাফা করা সম্ভব হয়েছে। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির নিট সুদ আয় ৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকায়। আমানতের ওপর সুদ ২০ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ঋণ থেকে সুদের আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।

এ ছাড়া ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় এইচএসবিসি আয় করেছে ৯৯২ কোটি টাকা, যার মধ্যে মূলধন লাভও রয়েছে। এ আয় আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সাল শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশে।

এইচএসবিসি ১৯৯৬ সালে ঢাকায় প্রথম শাখা চালু করে। ব্যাংকটির মূল প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি হোল্ডিংস পিএলসি। বাংলাদেশে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় গুলশানের লিংক রোডে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • এ দেশে খুচরা ব্যাংকিং বন্ধ করে দিচ্ছে এইচএসবিসি
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান
  • ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা
  • ঢাবিতে জুলাই স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা
  • নগদ লভ্যাংশ পাঠিয়েছে শাহজালাল ব্যাংক
  • সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ্‌সহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা