দীর্ঘ ১০ মাস পর আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও আইনবিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিমকে লন্ডনে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। শুক্রবার দুপুরে তিনি লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলের সামনে একটি কেকের দোকানে বসে ছিলেন। হলুদ রঙের পোশাক পরা রেজাউল করিমের পাশে ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা যে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছেন, তাতে অংশ নিতে শ ম রেজাউল করিম সেখানে অবস্থান করছিলেন। বেলা আড়াইটার দিকে শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভ ছিল প্রধান উপদেষ্টার লন্ডনে অবস্থানকালে ধারাবাহিক বিক্ষোভের অংশ।

ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাবেক মন্ত্রী রেজাউল করিম আত্মগোপনে চলে যান। পরে এক ভিডিও বার্তায় তিনি ভারত হয়ে তৃতীয় কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও সুনির্দিষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেননি। লন্ডনে তাঁর এ প্রকাশ্য উপস্থিতি সেই রহস্যের অবসান ঘটাল।

শ ম রেজাউল করিম ছাড়াও সম্প্রতি লন্ডনে প্রকাশ্যে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের একাধিক সাবেক মন্ত্রী ও নেতাকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং সিলেট–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান।

মঙ্গলবার লন্ডনে প্রকাশ্যে দেখা যায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত সরকার এবং হবিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো.

আবু জাহিরকে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সরকার, যাঁকে এই প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে দেখা যায়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ক মন ত র প রক শ য র রহম ন সদস য আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

সিরিয়াল পেতে দেরি হওয়ায় ফেনীতে চিকিৎসকের চেম্বার ভাঙচুর করলেন যুবদল নেতা

ফেনীর সোনাগাজীতে এক চিকিৎসকের চেম্বারে হামলা-ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইকবাল হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবদলের নেতা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের চক্ষু চিকিৎসক গোলাম রসুলের চেম্বারে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় চিকিৎসকের বোনসহ দুজন আহত হয়েছেন।

অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন সোনাগাজী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও আড়কাইম গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির আবদুল খালেকের ছেলে।

ভুক্তভোগী চিকিৎসক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চক্ষু চিকিৎসক গোলাম রসুল প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে বগাদানা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে নিজ বাড়ির চেম্বারে রোগী দেখছিলেন। এ সময় যুবদল নেতা ইকবাল হোসেন তাঁর সহযোগী রোগী নুর হায়দার রোগী দেখা অবস্থায় চিকিৎসকের চেম্বারে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এতে চিকিৎসকের সহকারী রুবেল একটু অপেক্ষা করতে অনুরোধ করলে ইকবাল হোসেন, তাঁর সহযোগী নুর হায়দার বিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে চেম্বারে প্রবেশ করে চিকিৎসকের সঙ্গে অশোভন আচরণের পাশাপাশি চেম্বারের চেয়ার, দরজা, জানালা, সিসিটিভি ক্যামেরা, মনিটর, সিলিং ফ্যানসহ ঘরের আসবাব ভাঙচুর করেন। এ সময় বাড়িতে থাকা চিকিৎসকের বড় বোন বিষ্ণুপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বিবি মরিয়ম ও চিকিৎসকের সহকারীকে মারধর করেন হামলাকারীরা। একপর্যায়ে যুবদল নেতা ইকবাল হোসেন তাঁর অনুমতি ছাড়া চেম্বার না খুলতে ওই চিকিৎসককে হুমকি দেন।

ক্ষতিগ্রস্ত চিকিৎসক গোলাম রসুল বলেন, ‘মাসখানেক আগে কয়েকজন যুবক চেম্বারে এসে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকজন যুবক আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। তাঁরা আমাকে মারতে উদ্যত হন এবং চেম্বার ও বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট চালান।’

অভিযুক্ত যুবদল নেতা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তবে রোগীর সিরিয়াল নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে সহযোগীরা ভাঙচুর করেছেন বলে স্বীকার করেন।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজিদ আকন্দ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হামলার ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত চিকিৎসকের পক্ষ থেকে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে। এরপর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ