বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিএসএফ
Published: 16th, June 2025 GMT
বাংলায় কথা বললেই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের বাংলাদেশে জোর করে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিএসএফ ও দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার। আজ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে সীমান্ত সুরক্ষা ও পুশ ব্যাক বিষয়ে বিধায়কদের আনা প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার বাসিন্দা মেহবুব শেখকে (৩৬) ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে বিএসএফের উত্তরবঙ্গের শাখা। ওই ব্যক্তি মহারাষ্ট্রের ঠাণেতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গত ১১ জুন তাকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
মেহবুবের ভাই মুজিবুর রহমান জানান, তার বড় ভাইকে গত শুক্রবার ভোর রাতে শিলিগুড়ির বিএসএফ বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করেছে। তিনি আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্যদের সভাপতি সামিরুল ইসলাম ওই শ্রমিকের দুর্দশার বিষয়টি জানার পর মহারাষ্ট্র পুলিশের যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠান। তার মধ্যে মেহবুবের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত বিবরণ ও পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট রয়েছে। তবে মহারাষ্ট্র পুলিশ ওই সব নথিপত্রকে গুরুত্ব দেয়নি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের পক্ষেও মহারাষ্ট্র পুলিশকে মেহবুবের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিশ্চিত করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল ঠাণেতে। তাতেও কাজ হয়নি।
মেহবুবের ভাই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা মুম্বাইয়ের ঠাণেতে গেলে মহারাষ্ট্র পুলিশ বলেছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে আটক মেহবুবসহ আরও কয়েকজনকে তারা শিলগুড়িতে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। শিলিগুড়ির বিএসএফের ইউনিটে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে তারা জানতে পারেন, গত শুক্রবার ভোরে মেহবুবসহ আটক সবাইকে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছে। যদিও সরকারিভাবে বিএসএফ এবং মহারাষ্ট্র পুলিশ এই বিষয়ে কিছু জানায়নি। গত এক দেড় মাস ধরে বিএসএফের পুশ ব্যাক চললেও এই বাহিনী সরকারিভাবে কিছু জানাচ্ছে না। অন্যদিকে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে, বিএসএফ এমন অনেককে ঠেলে পাঠাচ্ছে যাদের কাছে ভারতীয় হিসেবে নথিপত্র আছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প শইন ব এসএফ র ম হব ব র
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে পুশইন
পঞ্চগড়ে পৃথক দুই সীমান্ত দিয়ে ৪ ভারতীয় নাগরিকসহ আবারও ১৬ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ শনিবার ভোরে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মিস্ত্রি পাড়া ও তেতুঁলিয়া উপজেলার পেদিয়াগছ সীমান্ত দিয়ে তাদের বাংলাদেশে জোর করে পাঠানো হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, আজ শনিবার ভোরে পঞ্চগড়-১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন মিস্ত্রিপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৪২১ দিয়ে ভারতের ১৩২ ব্যাটালিয়নের ইশানগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা ১১ জনকে পুশইন করেছে। তাদের মধ্যে ৭ জন বাংলাদেশী ও চারজন ভারতীয় নাগরিক। এর মধ্যে পুরুষ চারজন, নারী তিনজন এবং শিশু চারজন। আজ সকালে তাদের মাগুড়া ইউনিয়নের রজলী থেকে আটক করে বিজিবি।
এদিকে কাছাকাছি সময়ে পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পেদিয়াগছ সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩২-এর ১ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে ভারতের ১৩২ ব্যাটালিয়নের পুরোহিতগছ ক্যাম্পের সদস্যরা ৫ জনকে পুশইন করে। পরে পেদিয়াগছ সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করে বিজিবি। তারা বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে আছেন।
পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনিপ্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশী নাগরিকদের পরিবারের কাছে ও ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।
এর আগে পাঁচ দফায় নারী, শিশুসহ ৬৭ জনকে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পুশইন করে বিএসএফ।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ভোরের দিকে দুই সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। বিজিবির পক্ষ থেকে তাদের আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। বাংলাদেশী নাগরিক ১২ জনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বাকি চারজন ভারতীয় নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদেরকে ভারতে ফেরত দিতে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃক তাদের ভারতীয় হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত করার পর ফেরত পাঠানো হবে।