আগামী ৫ জুলাই প্রতিষ্ঠার তিন দশক পূর্ণ করছে ঢাকা ব্যাংক। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবিরও চেয়ারম্যান। তিনি পূর্বাণী গ্রুপের কর্ণধার ও বিটিএমএর সাবেক সভাপতি। ঢাকা ব্যাংক ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ওবায়দুল্লাহ রনি

সমকাল : ৩০ বছর পূর্ণ করছে ঢাকা ব্যাংক। এই মাইলফলক কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আব্দুল হাই সরকার: ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের আমলে বেসরকারি খাতে ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য আবেদন চাওয়া হয়। ওই সময় ৪১টি আবেদন জমা পড়ে, যার একটি ঢাকা ব্যাংক। পরে বিএনপি সরকার এসে ঢাকা ব্যাংকসহ কয়েক ধাপে সাতটি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়। ভালো গ্রাহকসেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এ ব্যাংকের যাত্রা হয়। উদ্দেশ্য ভালো বলেই নানা ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্যে ঢাকা ব্যাংক সুনামের সঙ্গে টিকে আছে। কোনো সরকারের আমলেই ব্যাংকটি উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। 

সমকাল: আপনারা কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন?

আব্দুল হাই সরকার: আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো– গ্রাহক ব্যাংকে এসে বসে থাকবে না। বরং ব্যাংকই গ্রাহকের দোরগোড়ায় যাবে। সেই উদ্দেশ্য থেকে আমরা এখনও বিচ্যুত হইনি। আমরা পরিপূর্ণভাবে ‘পেপারলেস ডিজিটাইজ’ ব্যাংকিং করার দিকে যাচ্ছি। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত আংশিক করেছে। দুবাই, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পুরোপুরি আছে। এসব দেশে গ্রাহকরা কোনো সেবা নিতে গেলে ব্যাংকার তার কাছে গিয়ে কী করতে হবে বলে দেয়। আমাদের এখানে বলা হয়, ওই কাজ করে আসো। অথচ ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রাহক কীভাবে কী করবে, তার পরামর্শ দেওয়া। চলমান ধারা থেকে ঢাকা ব্যাংক বেরিয়ে ডিজিটাইজ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সমকাল: বাংলাদেশে গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। পরিবর্তনের বিষয়টি আপনাদের ব্যাংকে কোনো প্রভাব ফেলেছে? 

আব্দুল হাই সরকার: সরকার পতনের পর আর ভয় পাই না। আগে ভয় পেতাম। ভাবতাম কোন সময় কে ঢাকা ব্যাংক নিয়ে যায়। যেহেতু ব্যাংকটিকে বিএনপির ব্যাংক হিসেবে রাজনৈতিক একটা রং দেওয়া হয়েছিল, সংগত কারণে আমরা ভয় পেতাম। গত সরকারের আমলে একটি শিল্পগোষ্ঠী এই ব্যাংক দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। বাজারে এমন গুজবও ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে, আমি নাকি ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছি।

সমকাল: প্রভিশন ঘাটতি রেখে এবার ঢাকা ব্যাংককে লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়টি কীভাবে দেখেন? 

আব্দুল হাই সরকার: সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক লভ্যাংশ দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। ঢাকা ব্যাংকের সামান্য যে প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে শিগগিরই তা মিটিয়ে ফেলা হবে। 

সমকাল: ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমাতে আপনার পরামর্শ জানতে চাই। 

আব্দুল হাই সরকার: ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা ঋণ নিয়ে আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদ করেছে। এদের ধরতে হলে আত্মীয়স্বজনের অস্বাভাবিক সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখা উচিত। সারাদেশে চার থেকে পাঁচটি অর্থঋণ আদালত রয়েছে। অর্থ ঋণ আদালতের বিচারক নানা কারণে অনুপস্থিত থাকেন। খেলাপি ঋণ আদায়ে শুধু ঢাকায় অন্তত ২০টি অর্থঋণ আদালত দরকার। সম্পদ বিক্রি করতে গেলে খেলাপিরা দেশের বাইরে বসে আইনজীবীর মাধ্যমে কিছুদিন পর পর উচ্চ আদালতে রিট করেন। যে ব্যাংকের টাকা মেরে বিদেশে পালিয়েছে, তার এ ধরনের অধিকার থাকা উচিত নয়। চট্টগ্রামভিত্তিক ১০ থেকে ১২টি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ব্যাংকের ২ হাজার কোটি টাকার মতো নিয়ে পালিয়েছে। এরা ঢাকা ব্যাংককে বিপদে ফেলেছে। 

সমকাল: কয়েকটি ব্যাংক একীভূতকরণের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যােগ নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

আব্দুল হাই সরকার: একটি ব্যাংক বাঁচার পূর্বশর্ত হলো আমানতকারী। ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্থা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একবার আস্থা হারালে, তা ফেরানো অনেক কঠিন। একীভূতকরণের আইডিয়া ভালো। তবে কতটুকু সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দেশে অনেক ভালো ব্যাংক রয়েছে। ফলে এসব ব্যাংক একীভূতকরণ করলেই আমানত পাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। আবার সরকার এখন ট্রেজারি বিলে সাড়ে ১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যাংকে আমানত আসবে কীভাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ের রাস্তার প্রশস্তকরণ কাজের পরিদর্শনে ইউএনও

সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের নয়াপুর-রতনমার্কেট রাস্তার প্রশস্ত করণ  কাজের পরিদর্শন করেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান। এসময় তিনি রাস্তার দুই পাশের জমির মালিকদের সাথে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।

পরে ইউএনও সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন কাজের তদারকি করেন এবং সেবার মান ভালো হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রমজান আলী প্রধানকে ধন্যবাদ জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রমজান আলী প্রধান, সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশল আলমগীর চৌধুরী, সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল আলম তালুকদার, মেসার্স এহসান এন্টারপ্রাইজ এর পক্ষে গোলাম সারোয়ার বাদল,  নুর উদ্দিন আহমেদ, সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিম সরকার, সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আমির হোসেন, রফিকুল ইসলাম সরকার, সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হক, সাদিপুর ইউনিয়ন জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া প্রমূখ। 

মেসার্স এহসান এন্টারপ্রাইজ এর পক্ষে গোলাম সারোয়ার বাদল বলেন, রাস্তার দুই পাশে স্থাপনা থাকায় প্রশস্ত করন কাজে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ইউএনও স্যার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন এবং দুই পাশের স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার থেকেই দুই পাশের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

চেয়ারম্যান রমজান আলী প্রধান জানান, ইউএনও নির্দেশনায় রাস্তার প্রশস্ত করন কাজে যা যা সহযোগিতা করার দরকার পরিষদের পক্ষ থেকে সবই করা হবে। এই সড়কটি প্রশস্ত করনের জন্য দীর্ঘদিনের দাবি ছিল স্থানীয়দের।

ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, সড়কের দুই পাশে যেসব স্থাপনা রয়েছে দুই দিনের মধ্যে ঐ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যদি কেউ উচ্ছেদ কাজে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় মাসে নির্যাতনের শিকার দেড় হাজার নারী-কন্যাশিশু
  • জামায়াতের সঙ্গে জোট ও পিআরে একমত নুর
  • সোনারগাঁয়ের রাস্তার প্রশস্তকরণ কাজের পরিদর্শনে ইউএনও
  • আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদের গুণগত মান যাচাই হচ্ছে