Samakal:
2025-11-03@09:33:51 GMT

আলু চাষে কৃষকের মাথায় হাত

Published: 3rd, July 2025 GMT

আলু চাষে কৃষকের মাথায় হাত

চলতি বছর আলুর ভালো ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় ও সংরক্ষণের অভাবে মুন্সীগঞ্জের চাষিদের লোকসান হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় হিমাগারে সংরক্ষণ করতে না পারা, মূল্য কম ও বাঁশের মাচায় সংরক্ষণ করা আলুতে পচন ধরার কারণে কৃষকের মাথায় হাত। এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতির কারণে জেলার বেশির ভাগ কৃষক এখন দেনার দায়ে জর্জরিত। এই অবস্থায় সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আলু চাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলায় ১০ লাখ ৮০ হাজার টন আলু উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ টন হিমাগারে সংরক্ষণ করা হয়। বাকি ৬ লাখ টন আলু দেশীয় পদ্ধতিতে বাড়িতেই সংরক্ষণ করা হয়েছে।

জেলা আলু চাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন জানান, উৎপাদন উপকরণের অতিরিক্ত দামের কারণে এবার প্রতি কেজি আলুতে খরচ পড়েছে ১৬ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণ করতে গিয়ে প্রতি কেজিতে খরচ উঠেছে ২৬ টাকা। অথচ বর্তমানে হিমাগার থেকে আলুর পাইকারি দাম মিলছে মাত্র ১৫ থেকে ১৬ টাকা। এতে প্রতি কেজিতে চাষি ও ব্যবসায়ীর লোকসান গুনতে হচ্ছে ১০ থেকে ১১ টাকা। এই হিসাবে, হিমাগারে সংরক্ষিত ৪ লাখ টন আলুতে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৪০০ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, দেশীয় পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ৬ লাখ টন আলুর ২৫ শতাংশ অর্থাৎ দেড় লাখ টন পচে গেছে। এই দেড় লাখ টন আলুর উৎপাদন খরচ, বস্তা ও শ্রমিক খরচ বাবদ প্রতি কেজিতে ১৮ টাকা হিসাবে লোকসানের পরিমাণ ২৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশীয় পদ্ধতিতে সংরক্ষিত বাকি সাড়ে ৪ লাখ টন আলু নিজ বাড়ি থেকে ১১ টাকা কেজিতে বিক্রি করায় কৃষকের আরও ৪৯৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। সব মিলিয়ে মুন্সীগঞ্জের আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের লোকসান প্রায় ১ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জের ১৮ লাখ মানুষ ১২ হাজার টন আলু খেয়েছে। বাকি ৬৮ হাজার টন আলু অন্য জেলায় পাঠানো হয়েছে। তারপরও ১০ লাখ টন আলু হিমাগার ও বাড়িতে দেশীয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। এই অতিরিক্ত জোগানই দাম কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্তের ভাষ্য, এবার ভয়াবহ লোকসানের মুখে পড়ে মুন্সীগঞ্জের বেশির ভাগ কৃষক এখন দেনার জালে আটকা পড়েছেন। মহাজন ও ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। অনেক কৃষকের ভিটেমাটি বিক্রি করার উপক্রম হয়েছে। পরিবারের মুখে দুই বেলা অন্ন জোগানো তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। এই লোকসান শুধু অর্থনৈতিক নয়, কৃষকদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সামাজিক জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলছে। তাদের চোখেমুখে এখন শুধুই হতাশার ছাপ।

আলু চাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিঃস্ব হয়ে যাওয়া মুন্সীগঞ্জের কৃষকদের বাঁচাতে সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। কৃষকদের এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারি প্রণোদনা, ঋণ মওকুফ এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা অপরিহার্য। অন্যথায় আলু চাষে আগ্রহ হারাবেন কৃষক, যা দেশের সামগ্রিক কৃষি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ও ব যবস য় স রক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ