গাজনার বিলে পানির নিচে ২০০ বিঘা জমির ধান
Published: 8th, July 2025 GMT
হঠাৎ করে স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ায় তলিয়ে গেছে পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের ২০০ বিঘা জমির আমন ধান। কীভাবে এই ক্ষতি পোষাবেন তা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।
কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষকদের সাথে আলোচনা না করে স্লুইসগেটের পানি ছেড়েছেন।
তবে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, পাটচাষী ও মৎস্য সম্পদের কথা চিন্তা করে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুজানগর উপজেলার বাদাই গ্রামের অংশে গাজনার বিলে পানিতে ভরে গেছে। পানির উপরে কিছু কিছু ধানগাছের সবুজ মাথা বেরিয়ে আছে। বেশিরভাগ ধান পানিতে ডুবে আছে। কৃষকরা নিজের হাতে বপন করা ধানের এমন দৃশ্য দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বাদাই গ্রামের কৃষক বকুল শেখ। এবার দশ বিঘা জমিতে আমন ধান বপন করেছেন। হঠাৎ করেই একরাতের ব্যবধানে পানিতে তলিয়ে গেছে তার সাত বিঘা জমির ধান। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
বকুল শেখ বলেন, ‘‘আমি কৃষি কাজ করি। এর উপরই নির্ভরশীল। আমার তো উপায় নাই। এখন আমার কী হবে। ক্ষতিপূরণ পেলে বেঁচে থাকার মতো কিছু করতে পারি।’’
শুধু বকুল শেখই নয়, তার মতো আরো শতাধিক কৃষকের কপালে একই চিন্তার ভাঁজ। হঠাৎ করেই তালিমনগর স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তলিয়ে গেছে গাজনার বিলের প্রায় ২০০ বিঘা জমির বোনা আমন ধান। এখন কীভাবে এই ক্ষতি পোষাবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না কৃষকরা।
অভিযোগ, সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষকদের সাথে আলোচনা না করে স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ায় এই ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
কৃষক রিজাই শেখ ও নাদের শেখ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে তালিমনগর স্লুইসগেট নিয়ন্ত্রণ করেন ইউএনও। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে কোনো আলোচনা পরামর্শ না করে পানি ছেড়ে দিয়েছেন। এক রাতের মধ্যে ধান সব ডুবে গেছে। এর আগে কখনও এমন হয়নি।”
কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘‘বিলের ৫০০ বিঘা জমির মধ্যে ২০০ বিঘা জমির আমন ধান এখন পানির নিচে। যদি ধীরে ধীরে অল্প করে পানি ছাড়া হতো তাহলে ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না আমাদের।’’
সুজন বিশ্বাস ও আকতার হোসেন নামে অপর দুই কৃষক বলেন, ‘‘এই আমন ধানটা আমাদের খরচ খুবই কম হয়। এই ধানে বছরের খাবারের একটা ব্যবস্থা করি আমরা। কিন্তু সেই স্বপ্ন আশা সব পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা এখন এর ক্ষতিপূরণ চাই।’’
এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ এর দাবি, ‘‘পাটচাষীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ও বিলে মৎস্য সম্পদের কথা চিন্তা করে জুলাইয়ের শুরুতে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, পাট কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পানির সংকট রয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানির সাথে রেনু পোনা বিলে আসে। এসব মিলিয়ে গত ১ জুন পানি ছাড়া হয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘তবে যদি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হন, আমাদের জানালে কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘‘পানি ছাড়ার বিষয়ে কৃষকরা আমাদের জানিয়েছিল যে পানি যেন একেবারে না ছেড়ে আস্তে আস্তে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমরা ইউএনও স্যারকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু উঁচু এলাকার পাটচাষীদের চাপ ও দাবির প্রেক্ষিতে পানি ছাড়তে তিনি বাধ্য হন। এখানে আসলে সবার কথাই মাথায় রাখতে হয়। তবে পাম্প হাউজের মাধ্যমে পানি টেনে নিলে বেশিরভাগ জমির ধান রক্ষা পাবে।’’
কৃষি কর্মকর্তা জানান, সুজানগর উপজেলায় এবছর দুই হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার হাজার ৩৭৭ মেট্রিকটন চাল।
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ল ইসগ ট র প ন স জ নগর উপজ ল গ জন র ব ল কর মকর ত ২০০ ব ঘ আমন ধ ন ক ষকদ র আম দ র ক ষকর
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের ৭ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে টাঙ্গাইলে ৮টি আসনের মধ্যে ৭টিতে বিএনপির প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। তবে, টাঙ্গাইল-৫ আসনের প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার-১ আসনে ধানের শীষের কাণ্ডারী সালাহউদ্দিন
বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী
প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে ওবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ারে) আসনে উপজেলা বিএনপির সদস্য রবিউল আউয়াল লাভলু, টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে জাতীয় নির্বাহী কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী এবং টাঙ্গাইল-৮ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীর সর্থকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ৮টি আসনের মধ্যে সব আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রার্থী ছিল। এর মধ্যে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে একাধিক প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল ব্যাপক গণসংযোগে করেছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা ছিলো, টুকু ও ফরহাদের মধ্যে একজন টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক