মেলার আয়োজকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব জহুরুল ইসলাম তানভীর ও মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদকে শোকজ করেছ কেন্দ্রীয় কমিটি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর তাদের শোকজ করা হয়। সোমবার (৭ জুলাই) রাতে সংগঠনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে শোকজের চিঠি আপলোড করা হয়েছে।

অভিযুক্ত দুই নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন।

আরো পড়ুন:

খুবির ২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, অডিও ফাঁস

প্রেমের টানে খুলনায় এসে বিয়ে করলেন চীনা তরুণ

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলামের সই করা শোকজের চিঠিতে বলা হয়, ‍“সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতিমালার পরিপন্থি কার্যকলাপ একজন দায়িত্বশীল হিসেবে অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংগঠনের ভাবমূর্তির জন্য হানিকর। কেন তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ীভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না-তা এই নোটিশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে সংগঠন একতরফা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য থাকবে।”

সম্প্রতি চাঁদা দাবির ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ কণ্ঠসদৃশ মেলার আয়োজক বগুড়ার মন্টু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের স্বত্বাধিকারী মন্টু মিয়ার কাছে ১০ টাকা দাবি করতে শোনা যায়।

অডিও রেকর্ডিংয়ে মেলার আয়োজক মন্টুকে বলতে শোনা যায়, “আমার দ্বারা সবাইকে কি ঠান্ডা করা সম্ভব? আমার কাছে দুই টাকা রেডি আছে, আপনি বললে এখনই দিয়ে যাব।” জবাবে আজাদের কণ্ঠসদৃশ ব্যক্তি বলেন, “আমি পারব সবাইকে ঠান্ডা করতে, এ টু জেড, সবাই ঠান্ডা থাকবে, কেউ ওইদিকে ঘুরেও তাকাবে না—যদি ১০ টাকা দেন। আর যদি না দেন, তাহলে আজ এ গ্রুপ যাবে, কাল অন্য গ্রুপ যাবে, আপনি কয়জনকে ঠান্ডা করবেন?” রেকর্ডের পুরো অংশ জুড়েই লেনদেনের কথা উল্লেখ রয়েছে।

কলরেকর্ড সম্পর্কে মন্টু মিয়া বলেন, “ওইটা পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি-পুনাকের মেলা ছিল। পুলিশের মেলা তারপরও আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাইছে। অনেক কষ্টে ৩ লাখ দিয়ে তাদের ঠান্ডা করেছি। ওই মেলায় আমার অনেক লস হইছে।”

সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ ও জহুরুল তানভীর এই রেকর্ডকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। তারা জানান, খুলনায় মেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওই মেলার মালিক মন্টু ছিল না। মন্টু নিজেই একটা প্রতারক। এডিট করে আমাদের অডিও ছড়ানো হয়েছে।

 

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ল ইসল ম স গঠন র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নির্বাচন বাতিল বা বিলম্বের ষড়যন্ত্র’ রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের ঈদগাহ মাঠসংলগ্ন সেনপাড়ায় সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের এই শাখার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ।

সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির। আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন ও মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী সাজ্জাদ জহির বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থীদের সরকার গঠন করতে সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতায় লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাই, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন (ক্ষণগণনা) দেখতে চাই।’

নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু না হলে জনগণের মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে।’

সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে দেশের সম্পদ লুট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আহাম্মদ সাজেদুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনো অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ, বর্তমান সরকার এখনো সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার। একদিকে জনগণের ঘামঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে। সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: দুলু
  • অদৃশ্য শক্তি ও ফ্যাসিষ্টরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত খোরশেদ
  • নির্বাচন বাতিলের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান সিপিবির