গানের ভুবন থেকে অভিনয়ের জগতে পা রেখেছেন বহু শিল্পী। তবে এবার এক ফ্রেমে একত্রিত হচ্ছেন সংগীতজগতের দুই প্রতিভাবান নাম– প্রীতম হাসান ও জেফার রহমান। আর তাদের নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা শিহাব শাহীন।

‘তুমি আমি শুধু’ নামে এই রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার ওয়েব ফিল্মে প্রথমবারের মতো জুটি বেঁধেছেন প্রীতম ও জেফার। নির্মাতা শিহাব শাহীন জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই এই প্রজেক্টটি নিয়ে তাঁর পরিকল্পনা ছিল।

তিনি বলেন, ‘এই সিনেমার কাজ শুরু করার কথা ছিল দুই বছর আগে। নানা কারণে পিছিয়ে যেতে যেতে শেষ পর্যন্ত গেল কোরবানির ঈদের আগে এর শুটিং শেষ করেছি। এখন চলছে পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ।’

‘তুমি আমি শুধু’ নিয়ে নির্মাতা যেমন আশাবাদী, ঠিক তেমনই প্রধান দুই চরিত্র প্রীতম ও জেফারের রসায়ন নিয়েও তিনি দারুণ উচ্ছ্বসিত।

তার ভাষায়, ‘প্রীতমের সঙ্গে আমি এর আগেও কাজ করেছি। ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’তে ওর অভিনয় দারুণ লেগেছিল। ও তো চমৎকার পারফর্মার। আর জেফারও অভিনয়ে খুব মনোযোগী, দায়িত্বশীল। এই ফিল্মে সে খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। তাদের দুজনের মধ্যে দারুণ একটা কমেডি রসায়ন তৈরি হয়েছে, যা দর্শকদের ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস।’

তবে সিনেমার গল্প এখনই খোলাসা করতে নারাজ এই নির্মাতা। তিনি বলেন, “গল্পটা একটু ভিন্ন। আগেভাগে কিছু বলতে চাই না। রহস্য থাকুক। তবে এটুকু বলতে পারি, দর্শক এই সিনেমায় হাসির পাশাপাশি পাবেন বন্ধুত্ব, সম্পর্ক এবং জীবন নিয়ে কিছু দারুণ মুহূর্ত।”

শুধু এই ওয়েব ফিল্ম নয়, সম্প্রতি দেশের ডিজিটাল হেলথসেবা নিয়ে নির্মিত ‘সুখী’ অ্যাপের ছয়টি বিজ্ঞাপনচিত্রও নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। এতে কাজ করেছেন মিথিলা, দীঘি, রুকাইয়া চমক, নাসির উদ্দিন খান, ইমন ও ইরফান সাজ্জাদ।

উল্লেখ্য, শিহাব শাহীন ২০০১ সালে নাটক ‘ঘূর্ণি’র মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৫ সালে ‘রমিজের আয়না’ দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এবং ২০১৫ সালে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ প্রশংসিত হয়। ওয়েব সিরিজে ‘সিন্ডিকেট’, ‘মাইসেল্ফ আলেন স্বপন’ ও ‘গোলাম মামুন’-এর মতো কাজ দিয়ে তিনি ওটিটিতে পৌঁছেছেন নতুন উচ্চতায়।

সব মিলিয়ে ‘তুমি আমি শুধু’ যেন হয়ে উঠেছে সংগীত ও অভিনয়ের দুই ভুবনের মেলবন্ধনের এক আনন্দময় গল্প। অপেক্ষা এখন শুধুই মুক্তির।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ফ র রহম ন প র তম হ স ন প র তম

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ