ঘোড়ায় টানা গাড়িতে চারা বিলান সাজাহান আলী
Published: 13th, July 2025 GMT
সড়কে ছুটে চলেছে ঘোড়ায় টানা গাড়ি। তাতে ছোট-বড় নানা জাতের গাছের চারা সাজানো। পথ চলতি মানুষ কৌতূহল নিয়ে দেখছেন, কেউ কেউ গাড়ি দাঁড় করিয়ে চারা কিনছেন। চাইলে বিনা পয়সাতেও মিলছে। বৃক্ষপ্রেমী সাজাহান আলী প্রতিদিন তাঁর ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে এভাবেই ছুটে চলেন।
সাজাহান আলীর বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে। নিজের বাড়িতে বিভিন্ন জাতের গাছের চারা উৎপাদন করে তা বিক্রি করেন। শুধু উপার্জন নয়, বৃক্ষরোপণের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তুলতেও প্রচার চালান তিনি। এজন্য তিনি বেছে নিয়েছেন ঘোড়ার গাড়ি। তাতে নানা ধরনের গাছের চারা সাজিয়ে প্রতিদিন রাস্তায় নামেন তিনি।
সাজাহান আলী বলেন, ‘আমি অন্য কোনো কাজ জানি না। বাবার রেখে যাওয়া এক টুকরো জমিতে গাছের চারা উৎপাদন করি। প্রতিদিন ছোট-বড় চারায় ঘোড়ার গাড়ি সাজিয়ে বেরিয়ে পড়ি রাস্তায়। ঘোড়ার গাড়ি দেখে অনেকে আগ্রহভরে কাছে আসেন।’ তিনি জানান, বড় চারাগুলো তিনি বিক্রি করেন। গাছ লাগানোর ইচ্ছা আছে কিন্তু পকেটে পয়সা নেই এমন কেউ চাইলে তাকে বিনা পয়সায় গাছের চারা দেন তিনি। গত বছর এভাবে দেড় হাজার চারা বিলিয়েছেন সাজাহান।
ঈশ্বরদী শহরের ফকিরের বটতলায় দেখা হলে সাজাহান বলেন, ‘দিনভর গ্রাম ও শহরের পথে পথে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াই। মানুষকে গাছ লাগাতে আগ্রহী করে তুলি, ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে চারা তুলে দিই। এতেই আমার আনন্দ।’
পথচারী উৎপল কুমার বলেন, ‘বাজার শেষে বাড়ি ফিরছিলাম, পথে ঘোড়ার গাড়ি দেখে দাঁড়িয়ে গাছ বিক্রেতার কথাবার্তা শুনে ভালো লাগে, দুটি গাছের চারা নিয়েছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন স জ হ ন আল
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত