উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: নগরবাউল জেমসের শোক
Published: 23rd, July 2025 GMT
গত ২১ জুলাই রাজধানী উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই পরিণত হয় মৃত্যুপুরীতে। স্বজনদের আহাজারি ছুঁয়ে গেছে গোটা দেশবাসীকে। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন নগরবাউল জেমস।
নগরবাউল জেমসের অফিশিয়াল ফেসবুকে পেজে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, “ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি একটি এফ-৭ জেট বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। মূল্যবান এই প্রাণহানির জন্য নগরবাউল এবং দলের সকল সদস্যরা আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এই কঠিন সময়ে আহত শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা।”
জরুরি সেবাদানকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পরপরই দ্রুত এবং সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং সমস্ত জরুরি সেবাদানকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”
আরো পড়ুন:
চবির আলাওল হলে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ, ভোগান্তি
‘হেরে গেলেন মা মাহেরীন, জিতে গেলেন শিক্ষিকা মাহেরীন’
প্রার্থনার মাধ্যমে বিবৃতির ইতি টেনেছেন। সর্বশেষ বলা হয়, “সর্বশক্তিমান আল্লাহ মৃতদের আত্মার চির শান্তি, আহতদের পূর্ণ সুস্থতা এবং শোকাহত পরিবারকে শক্তি দান করুন।”
জেমস এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এ সফরে দেশটির বিভিন্ন কনসার্টে অংশ নিচ্ছেন। আগামী ২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া শহরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘নগরবাউল জেমস লাইভ ইন ফিলাডেলফিয়া’ শিরোনামে কনসার্ট। সেখানে পারফর্ম করবেন বরেণ্য এই তারকা। আগামী ২ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার উডব্রিজ শহরের ‘ফ্রিডম হাই স্কুলে’ অনুষ্ঠিত হবে তার আরেকটি কনসার্ট।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।
সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।
মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।