বিভিন্ন সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় রোবট পোকামাকড়ের দেখা মেলে হরহামেশাই। বিভিন্ন পোকামাকড়ের আদলে তৈরি ক্ষুদ্রাকৃতির রোবটগুলো শত্রুর চোখ এড়িয়ে নির্দিষ্ট স্থানে হামলা করতে পারে। এবার সিনেমার আদলে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার উপযোগি সাইবর্গ তেলাপোকা তৈরি করেছে জার্মানির সোয়ার্ম বায়োট্যাকটিকস নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

সোয়ার্ম বায়োট্যাকটিকসের তথ্যমতে, নজরদারির জন্য বট হিসেবে কাজ করবে এই সাইবর্গ তেলাপোকা। ক্যামেরা ও সেন্সর যুক্ত থাকায় সাইবর্গ ধরনের রোবটগুলোর মাধ্যমে দূর থেকে রিয়েল-টাইম তথ্য জানা যাবে। রোবটগুলো একক বা ঝাঁকের মতো দলগতভাবে কাজ করতে পারে। শত্রু এলাকা থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে বেশ কার্যকর এসব রোবট।

সাইবর্গ ব্যবহারের মাধ্যমে যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে। এ বিষয়ে সোয়ার্ম বায়োট্যাকটিকসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টেফান উইলহেম জানিয়েছেন, জীবন্ত পোকামাকড়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি আমাদের জৈব-রোবটে স্নায়ু উদ্দীপনা যুক্ত করা হয়েছে। এসব রোবট সেন্সর ও সুরক্ষিত যোগাযোগ মডিউল দিয়ে ভালো কাজ করেছ। এসব সাইবর্গ একক বা দলগতভাবে কাজ করতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপ যখন সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি করছে, তখন জার্মানি তার অস্ত্রাগারকে আধুনিকীকরণের জন্য স্টার্টআপ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর জোর দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় পোকামাকড়ের আদলে নজরদারি রোবটে তৈরি করেছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ইবর গ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ময়মনসিংহের সড়ক-মহাসড়কে সাড়ে তিন বছরে ৭৭২ জনের মৃত্যু—এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান কেবল সংখ্যা নয়, বরং প্রতিদিনের রূঢ় বাস্তবতা। প্রতিটি প্রাণহানি একটি পরিবারকে শোকে নিমজ্জিত করেছে, অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে। একই সময়ে গুরুতর আহত ও অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন প্রায় এক হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতি আমাদের সড়কব্যবস্থার নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ দুরবস্থা তুলে ধরে।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট আঞ্চলিক সড়ক দুর্ঘটনার ‘হটস্পট’। বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং, আঁকাবাঁকা সড়ক এবং থ্রি-হুইলারের অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে এই সড়কগুলোকে মৃত্যুকূপে পরিণত করেছে। চার লেনের মহাসড়ক হলেও উল্টো পথে গাড়ি চলা, গতিসীমা অমান্য করা এবং হাইওয়েতে ধীরগতির থ্রি-হুইলার চলাচল পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক করছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সতর্কবার্তা ও গতিসীমা নির্ধারণ করেছে, কিন্তু চালকদের অনিয়ম ও বেপরোয়া গতির কারণে তা কোনো কাজে আসছে না। অনেক চালক মনে করেন, ভালো রাস্তা মানেই বেশি গতি। এই মানসিকতা ভাঙতে কঠোর নজরদারি ও শাস্তির বিকল্প নেই।

প্রশ্ন হচ্ছে, এই মৃত্যুর মিছিল থামাতে প্রশাসনের ভূমিকা কোথায়? সড়কে নিয়ম ভাঙা, বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিং রোধে কেন কঠোর নজরদারি ও শাস্তি নেই? জাতীয় মহাসড়কে থ্রি–হুইলার নিষিদ্ধ থাকলেও বিকল্প পরিবহন না থাকায় এবং দুর্বল নজরদারির কারণে সেগুলো নির্বিঘ্নে চলছে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে সক্রিয় হলেও প্রতিরোধমূলক উদ্যোগের ঘাটতি প্রকট। শুধু দুর্ঘটনার পর উদ্ধার নয়, দুর্ঘটনা প্রতিরোধই হতে হবে মূল লক্ষ্য। এ জন্য বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে হাইওয়ে পুলিশের উপস্থিতি ও নজরদারি বাড়ানো এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিড ক্যামেরা বসানো জরুরি।

এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উপেক্ষিত হচ্ছে—জনসচেতনতা ও চালকের প্রশিক্ষণ। অধিকাংশ দুর্ঘটনা চালকদের অসতর্কতা, অভ্যাসগত আইন ভাঙা এবং প্রতিযোগিতামূলক গতির কারণে ঘটছে। যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে, যাতে তাঁরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাতে চালকদের বাধ্য না করেন। পাশাপাশি থ্রি-হুইলারের বিকল্প হিসেবে নির্ভরযোগ্য লোকাল পরিবহনব্যবস্থা চালু না করলে এসব দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনাগুলোকে নিছক দুর্ঘটনা বলা যায় না; এগুলো একধরনের ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’। দায়িত্বশীলদের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে আর কোনো প্রাণ যেন সড়কে না ঝরে—এখনই সেই দাবি তুলতে হবে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করতে হবে। ময়মনসিংহের সড়কগুলোতে বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশকে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বডি ক্যামেরা পাচ্ছে বিএসএফ
  • বেপরোয়া গতির যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
  • নজরদারি করা অ্যাপের বিরুদ্ধে এক মাস পর ব্যবস্থা নিল গুগল