চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও সংগঠনটির সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, সে বিষয়ে অনুসন্ধানে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। আজ সোমবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চারজন নেতাসহ পাঁচজন সম্প্রতি চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। গণমাধ্যমে ওই নেতাদের কারও কারও সম্পদের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। তাঁদের সম্পদ দৃশ্যমান হচ্ছে। এটা কি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত কি না, এ প্রশ্নের জবাবে দুদকের মহাপরিচালক বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিষয়টি দুদকের এখতিয়ার নয়। তবে যদি কেউ জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে থাকেন, সেই বিষয়টি আমাদের এখতিয়ারভুক্ত। এই বিষয়ে যদি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করতে আমাদের কোনো বাধা নেই।’

গত শনিবার রাজধানীর গুলশানে আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন, একই কমিটির সদস্য সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান ওরফে রিয়াদ রয়েছেন। রিয়াদ বর্তমানে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটিরও সদস্য। নোয়াখালীর সেনবাগের অস্বচ্ছল পরিবারের ছেলে রিয়াদের বাড়িতে জরাজীর্ণ টিনের ঘরের জায়গায় দালান উঠছে। প্রায় দুই মাস আগে এই দালান নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।

আরও পড়ুনপ্রথমে পুলিশ নিয়ে বাসায়, পরে হুমকি দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা নেন বৈষম্যবিরোধী নেতারা ১০ ঘণ্টা আগে

পুলিশ সূত্র জানায়, ১৭ জুলাই গুলশানে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক কমিটির দুই নেতা রিয়াদ ও কাজী গৌরব ওরফে অপুসহ কয়েকজন। সেদিন বাসায় ছিলেন শাম্মী আহমেদের স্বামী। তাঁকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাদা দাবি করেন রিয়াদ, অপুসহ অন্যরা। পরে শাম্মী আহমেদের স্বামী আবু জাফর ১০ লাখ টাকা চাঁদাও দেন। পরে শনিবার দিবাগত রাত আটটার দিকে চাঁদার বাকি টাকা আনতে যান তাঁরা। পুলিশ আগে থেকে এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গতকাল সাত দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। অন্যজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাকে টঙ্গীর কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঅনটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা ছাত্রের বাড়িতে হঠাৎ উঠছে ভবন, এলাকায় নানা আলোচনা১৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আহম দ র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ