বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে দ্রুতই অগ্রাধিকার বাণিজ্যচুক্তি হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে, শিগগিরই সুসংবাদ আসবে।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক সেমিনারে ঘনশ্যাম ভান্ডারি এ কথা বলেন। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে এই গোলটেবিল বৈঠকে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও কূটনৈতিক ব্যক্তিরা অংশ নেন।

নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। নেপালে প্রাণ, আকিজ ও কয়েকটি বাংলাদেশি ওষুধ কোম্পানি কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে আলোচনা চলছে। নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। ভবিষ্যতে ৯ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত তা উন্নীত করা সম্ভব।

সমাপনী বক্তব্যে ফাহমিদা খাতুন বলেন, আগামী বছর দুই দেশেরই এলডিসি উত্তরণ হতে যাচ্ছে। সে জন্য দুই দেশের জন্যই সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। কোটামুক্ত বাজারের সুবিধা কমে আসবে। তাই আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে হবে। সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বাড়াতে হলে ভারতীয় গ্রিড ব্যবহার করতে হবে। সে জন্য ভারতের সহায়তা লাগবে। নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ভারতের ট্রানজিট প্রয়োজন। তাই নেপালের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে ভারতকে হিসেবে আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিকভাবে শুল্কের উত্থান দেখা যাচ্ছে। তাই প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রপ্তানি বৃদ্ধি করে রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ