ইনসুলিন বেড়ে গেলে কী হয়

মানবদেহের জন্য অপরিহার্য এক হরমোন ইনসুলিন। আমরা যখন কোনো খাবার খাই, তখন তা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভেঙে গ্লুকোজ বা শর্করায় পরিণত হয়। তারপর এই শর্করা শোষণ করার জন্য শরীরের কোষগুলোকে নির্দেশ দেয় ইনসুলিন। কোনো কারণে ইনসুলিনের ঘাটতি হলে প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয়। তখন দেখা দেয় ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের সমস্যা।

একইভাবে শরীরে ইনসুলিন বেড়ে গেলেও দেখা দিতে পারে নানা ধরনের সমস্যা। যেমন এতে হতে পারে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া), যা গুরুতর হলে খিঁচুনি বা অজ্ঞান হওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ইনসুলিন শরীরের ওজন বৃদ্ধি, হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। এবার জেনে নিন সকালের নাশতায় যেসব ভুল ইনসুলিন বাড়ায়।

১.

জুস বা মিষ্টি পানীয় দিয়ে নাশতা শুরু করা

প্রাকৃতিক হলেও জুসে ফাইবার বা আঁশ না থাকায় শরীরে শর্করা দ্রুত শোষিত হয়। ফলে ইনসুলিন হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শারীরিক শক্তিও কমে যেতে পারে। তাই নাশতায় জুসের পরিবর্তে গোটা ফল বেছে নেওয়ার পাশাপাশি চিনি ছাড়া পানীয় খাওয়া ভালো।

২. উচ্চমাত্রার কার্বোহাইড্রেট খাওয়া

সাদা রুটি; সিরিয়াল; জ্যাম, জেলি কিংবা চকলেট–জাতীয় খাবারসহ টোস্ট; ডোনাট; কেক ও পেস্ট্রি–জাতীয় খাবারে থাকে উচ্চমানের কার্বোহাইড্রেট। অন্যদিকে এসবে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে খুবই কম। ফলে এসব দ্রুত হজম হয়ে ইনসুলিন বাড়ায়। তাই গোটা শস্য ও সুষম খাবার দিয়ে দিন শুরু করে রক্তে শর্করা বৃদ্ধির ঝুঁকি এড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ।

৩. অতিরিক্ত মিষ্টি স্মুদি বা আঁশবিহীন খাবার খাওয়া

স্মুদিতে তুলনামূলকভাবে চিনির পরিমাণ বেশিই থাকে। ফলের রসেও আমরা অনেকে চিনি যোগ করি, আর মিষ্টি দইয়ের সঙ্গে তো চিনি থাকেই। সমস্যা হলো, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও আঁশবিহীন তরলে থাকা চিনি দ্রুত শোষিত হয়। ফলে এসব খাবার খেলে ইনসুলিন বেড়ে যেতে পারে। তাই স্মুদিতে টক দই বা বাদামের মতো প্রোটিন এবং আঁশসমৃদ্ধ ফল যোগ করে নেওয়া ভালো।

আরও পড়ুনইউটিউবে দিনে মাত্র আধা ঘণ্টা ব্যয় করেই শিখতে পারেন ইংরেজি০২ আগস্ট ২০২৫৪. খালি পেটে চিনিযুক্ত চা বা কফি খাওয়া

খালি পেটে চিনিযুক্ত চা–কফি দিয়ে সকাল শুরু করলে শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ে। মনে রাখা জরুরি, তরল শর্করা শক্ত খাবারের চেয়ে দ্রুত শোষিত হয়। পাশাপাশি ক্ষুধা বাড়ায়। তাই সকালের নাশতায় চিনি ছাড়া চা–কফি বেছে নেওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত।

৫. অতিরিক্ত চিনিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া

মিষ্টি দইয়ের পাশাপাশি কিছু দুগ্ধজাত পানীয়তেও অতিরিক্ত চিনি বা উচ্চমাত্রার ল্যাকটোজ থাকে। সমস্যা হলো, এসব খাবারের চিনি দৃশ্যমান নয়। মানে আমরা নিজেরা যোগ করি না, আগে থেকেই যোগ করা থাকে। ফলে এসব খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

তাই নাশতায় দই খেতে চাইলে সাধারণ টক দই খান, উদ্ভিজ্জ দুধও ভালো বিকল্প। উদ্ভিজ্জ দুধ বিভিন্ন উৎস থেকে আসতে পারে; যেমন বাদাম, সয়াবিন, ওটস, চাল ও নারকেল। এসব দুধ সাধারণত ল্যাকটোজ ও কোলেস্টেরলমুক্ত।

আরও পড়ুনগ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাবে এই ৫ অভ্যাস১৭ ঘণ্টা আগে৬. খাবারের ক্রম না মানা

কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার দিয়ে সকালের নাশতা শুরু করলে শরীরে গ্লুকোজ প্রবেশ করে তুলনামূলক দ্রুতগতিতে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা সকালে নাশতার শুরুতে শাকসবজি বা প্রোটিন খেতে বলেন, আর শেষে রাখতে বলেন কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার। খাবারের এই ক্রম রক্তে শর্করা ও ইনসুলিনের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৭. নাশতা বাদ দেওয়া

নাশতা বাদ দিলেও দিনের শেষভাগে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ে। বিশেষ করে আপনি যখন খাবারের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করেন, তখন শরীরে সঞ্চিত গ্লুকোজের নিঃসরণ ঘটে। ফলে খাবার খাওয়ার পর ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বাড়ে। তাই নিয়মিত নাশতা করলে রক্তে শর্করার মাত্রা ভারসাম্যপূর্ণ থাকার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পরে অতিরিক্ত ক্ষুধাও পায় না।

সূত্র: মায়ো ক্লিনিক

আরও পড়ুনব্রণ দূর করতে তামান্না ভাটিয়ার বিস্ময়কর টোটকা, চিকিৎসক কী বলছেন৯ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনস ল ন ব ড় ইনস ল ন র য গ কর ন শত য় সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের দিন ঘোষণা করুন, বিএনপি আর বসে থাকবে না: জাহিদ হোসেন 

জাতীয় নির্বাচন তিন মাসেই শেষ হতে পারে, সেখানে এক বছর সময় নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।  

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন, না হলে বিএনপি আর বসে থাকবে না। 

রবিবার (৩ আগস্ট) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ঠেকাতে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে

বাংলাদেশে বিভক্তি সৃষ্টি করার অনেক চেষ্টা হচ্ছে: ফখরুল

জাহিদ হোসেন বলেন, “২০০৮ সালে মানুষ ঠিকমতো ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪-তে ছিল ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮-তে আগের রাতে ভোট হয়েছে। ২০২৪-এও দেখা গেল ‘আমি আর ডেমির’ নির্বাচন। এবার জনগণ একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়।”

তিনি আরো বলেন, “স্বৈরাচারের দোসররা এখনো প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে। নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে হলে, অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে, কাজ দিয়ে তা প্রমাণ করতে হবে।”

গোপন ভোটে অনুষ্ঠিত হয় নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির কাউন্সিলর ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা ভোট দেন। ৯২৩ ভোটারের মধ্যে ৮০৩ জন ভোট দেন।  

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ