ভিডিও কনফারেন্স সফটওয়্যার জুম ও গুগল মিটে স্বচ্ছন্দে ভিন্ন ভাষায় কথা বলা ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) ট্রান্সক্রিপশন টুল ব্যবহার করেন অনেকে। কিন্তু এবার গোপনে অনলাইন বৈঠকের তথ্য সংগ্রহ করায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ট্রান্সক্রিপশন টুল ‘ওটারডটএআই’–এর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে মামলা করেছেন জাস্টিন ব্রিউয়ার নামের এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, জুম, গুগল মিট ও মাইক্রোসফট টিমসসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার তথ্য ব্যবহারকারীদের অজান্তে ধারণ করছে ওটারডটএআই টুল।

মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের সম্মতি না নিয়েই গোপনে বৈঠকের সব তথ্য নিজেদের সার্ভারে সংগ্রহ করছে ওটারডটএআই। অনলাইন বৈঠক আয়োজন করা ব্যক্তি ওটারডটএআই টুল ব্যবহার করলেই বৈঠকে অংশ নেওয়া সব তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে এআই টুলটি। আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে সম্মতি ছাড়া তথ্য সংগ্রহ করা গোপনীয়তা আইনের লঙ্ঘন।

ওটারডটএআইয়ের নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধু ব্যবহারকারীরা অনুমতি দিলেই মিটিং ট্রান্সক্রিপ্ট এআই প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হয়। তবে মামলার বাদী জাস্টিন ব্রিউয়ারের দাবি, বাস্তবে ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করে তাদের অজান্তেই ব্যক্তিগত আলাপচারিতার তথ্য সংগ্রহ করছে ওটারডটএআই। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা ওটারডটএআইয়ের তৈরি এআই টুল বর্তমানে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ব্যবহার করছেন। ফলে এআই টুলটির গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

জাস্টিন ব্রিউয়ারের অভিযোগ, তাঁর অনুমতি ছাড়াই অনলাইন বৈঠকের আলোচনা ধারণ করা হয়েছে। শুধু তিনিই নন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) ও রেডিটে আরও অনেক ব্যবহারকারী একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। গত বছরও এআই টুলটির বিরুদ্ধে গোপনে তথ্য ধারণের অভিযোগ উঠেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর এআই ট ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ