ফরিদপুরের সালথা ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া বাজার এলাকায় কুমার নদের উপর সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ। যাতায়াতের সমস্যার কারণে এই অঞ্চলের বাসিন্দারা কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন এবং মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

স্থানীয়রা বলছেন, এখানে একটি সেতু নির্মিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

কুমার নদ ফরিদপুরের নগরকান্দা-সালথা ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। এই নদের উপর কামারদিয়া খেয়াঘাটে সেতু না থাকায় বর্ষাকালে নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। বর্ষায় নৌকায় পারাপারের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে, আর শুষ্ক মৌসুমে অস্থায়ী সাঁকো দিয়ে চলাচলেও ঘটে নানা দুর্ঘটনা। 

এই দুর্ভোগের কারণে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল শহরে পৌঁছাতে গিয়ে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছেন না, এমনকি ভয়ে অনেক অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও অনীহা প্রকাশ করছেন। বিশেষ করে, অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এখানে একটি বড় সমস্যা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি সেতুর অভাবে স্থানীয়দের ছেলে-মেয়েদের বিয়ের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। 

কামারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মো.

রবিউল ইসলাম বলেন, “বর্ষাকালে খেয়া নৌকায় স্কুলে যেতে হয়। সময়মতো নৌকা না পেলে রোদ-বৃষ্টিতে ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলে যাওয়াই বন্ধ হয়ে যায়।”

খেয়াঘাটের মাঝি জমির মিয়া বলেন, “ঝড়-বৃষ্টি বা সামান্য বাতাসে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কচুরিপানার কারণেও মাঝে মাঝে পথ বন্ধ হয়। এখানে একটি সেতু হলে হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ কমতো।”

বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, “কামারদিয়ায় সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ অনেক কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেতু নির্মাণ হয়েছে।”

সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাফর মিয়া বলেন, “কামারদিয়া খেয়াঘাটে আইডি ভুক্ত রাস্তা নেই। তবে আমি বিষয়টি পরিদর্শনের জন্য সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পাঠাব এবং পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এলাকাবাসীর দাবি, কামারদিয়া খেয়াঘাটে একটি সেতু নির্মাণ হলে শুধু যোগাযোগই নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ঘটবে। নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াত হবে নিরাপদ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আর কুমার নদ পার হতে হবে না। এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হবে।

ঢাকা/তামিম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই

শুরুতে উদাহরণ হিসেবে যেসব লক্ষণের কথা জানলেন, ব্রেন ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের শুরুতে একই রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সমস্যা হলো, এসব লক্ষণ আর সাধারণ মাথাব্যথা বা ক্লান্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা সত্যিই কঠিন।

দীর্ঘদিন ব্রেন ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের লরা স্ট্যান্ডেন। এই রোগে আক্রান্ত অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে—রোগীরা নিজেরা প্রথম দিকে এসব উপসর্গকে গুরুত্ব দেননি।
এমনকি চিকিৎসকেরাও অনেক সময় ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছেন। ফলে রোগ শনাক্ত হতে দেরি হয়ে গেছে।

আর এই দেরি কিন্তু মারাত্মক। কারণ, ক্যানসার যত দেরিতে ধরা পড়ে, চিকিৎসাও তত জটিল ও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।

আসল সমস্যা হলো মস্তিষ্কের ক্যানসারের উপসর্গ অনেকটা আমাদের দৈনন্দিন সমস্যার মতোই। ক্লান্তি, মানসিক চাপ, মাইগ্রেন, এমনকি মেনোপজের সময়ের সমস্যার সঙ্গেও এর মিল আছে।

আবার অনেক সাধারণ রোগের লক্ষণও প্রায় একই রকম। যেমন দুশ্চিন্তা, সাইনাসের সমস্যা বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা।

যখন লক্ষণগুলো অস্পষ্ট আর হালকা থাকে, তখন সেসব উপেক্ষা করা সহজ হয়ে যায়। নিজের মনেই নানা যুক্তি খুঁজে নিই আমরা। তাই অনেকে অপেক্ষা করেন আর ভাবেন, দেখা যাক, সমস্যাটা কত দূর গড়ায়।

অনেকে ব্রেন ক্যানসার হওয়ার দুই-তিন মাস আগে থেকেই লক্ষণ টের পান। কিন্তু সাধারণ সমস্যা ভেবে তা উড়িয়ে দেন। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়।

এবার জেনে নিই সেই ৭টি সমস্যা সম্পর্কে, যেসব আমরা সাধারণ সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণের মধ্যে একটা বা দুটো থাকলেই যে কারও ব্রেন ক্যানসার হয়েছে, তা কিন্তু নয়। তবে কোনো সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে কিংবা একদম অস্বাভাবিক মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনরাতের এই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্ক যেভাবে দ্রুত বুড়িয়ে যায়১১ নভেম্বর ২০২৪১. কথা খুঁজে না পাওয়া

অনেকে হঠাৎ করে নির্দিষ্ট শব্দ মনে করতে পারেন না। পুরো বাক্য বলতে গেলে আটকে যান। কথোপকথনে অংশ নিতে গেলে একটু দেরি হয়।

শব্দ খুঁজে না পাওয়ার সমস্যা অবশ্য ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণেও হতে পারে। কিন্তু যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকে, কিংবা হঠাৎ করে শুরু হয়, তাহলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার।

২. মানসিক ধোঁয়াশা

অনেকের মনে হয়, যেন মাথার ভেতর কুয়াশা জমে আছে। মনোযোগ দিতে পারছেন না, পরিষ্কার করে ভাবতে পারছেন না, কিছু মনে থাকছে না। ফলে রোগ ধরা পড়তে আরও দেরি হয়ে যায়।

এই মাথার ঘোলাটে ভাব অবশ্য অনেক কারণেই হতে পারে। মেনোপজ, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া কিংবা মানসিক চাপ। কিন্তু যদি এই ঘোলাটে ভাবের সঙ্গে আরও কিছু স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন কথা বলতে বা দেখতে সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তনও ব্রেন ক্যানসারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই