গাজীপুরের শ্রীপুরে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি করা হয়েছে। ডাকাতেরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুই কর্মীকে জঙ্গলে বেঁধে রেখে তাদের কাছ থেকে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও টাকা লুটে নেয়। তবে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প এ বিষয়ে কিছুই জানে না।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে শ্রীপুরের মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের শিমলাপাড়া বাজার সংলগ্ন হাসিখালী ব্রিজের পাশে ডাকাতি করা হয়।
আরো পড়ুন:
সোনাপুরের যানজটে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দৈনিক ২৫০০ ঘণ্টা অপচয়
মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
ভুক্তভোগীরা হলেন, শিমলাপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ নিরঞ্জন মন্ডল (৫০) এবং লাইনম্যান গ্রেড-১ তৌহিদুল ইসলাম (৩৮)। বর্তমানে তাদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগ কেন্দ্রের আরেক লাইনম্যান ফারুক আহমেদ জানান, রাত পৌনে ১০টার দিকে নিরঞ্জন মন্ডল ও তৌহিদুল ইসলাম সিংদিঘী ও বাইলাবাড়ী গ্রামের গ্রাহকদের বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধানে বের হন। সেখান থেকে ফেরার পথে প্রায় ১০-১২ জনের ডাকাতদল সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দেয়। এরপর তাদের মারধর করে পাশের শালবনের ভেতরে নিয়ে গিয়ে গজারি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। ডাকাতরা অফিসের কাজে ব্যবহৃত একটি টিভিএস মোটরসাইকেল, একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ও তাদের ব্যক্তিগত আরো দুটি মোবাইল ফোন লুটে নেয়। ভোর ৫টার দিকে ডাকাতেরা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে।
শ্রীপুর থানাধীন মাওনা (চকপাড়া) পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান দুপুর ১২টায় সাংবাদিকদের বলেন, “শিমলাপাড়ায় সড়কে ডাকাতির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। সাংবাদিকদের কাছ থেকে প্রথম শুনলাম। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।”
মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী শান্তনু রায় জানান, এ ঘটনায় অফিসের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরাও থানায় অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “ওই সড়কে পুলিশের মোবাইল টিম ডিউটিতে ছিল। তাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম কোনো ডাকাতি হয়নি। একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন টেনে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রফিক/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত