বাংলা সংগীতাঙ্গনের অমূল্য রত্ন, লালন সংগীতের মহীরুহ ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে এই কিংবদন্তি শিল্পীকে।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদা পারভীনের মেয়ে জিহান ফারিহা সাংবাদিকদের বলেছেন, “আম্মার অবস্থা আগের থেকে অনেক খারাপ। তাকে জেনারেশন ফোর মেডিসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ডাক্তাররা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”

অন্যদিকে, শিল্পীর বড় ছেলে ইমাম জাফর নুমানী বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “গত বুধবার বিকেল থেকে আম্মাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে, ব্লাড প্রেশারও নেই। ডাক্তাররা কৃত্রিমভাবে তার শ্বাস-প্রশ্বাস ও রক্তচাপ চালু রাখছেন। তবে, দুঃখজনক হলেও সত্যি, উন্নতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।”

ফরিদা পারভীনের পরিবারের সদস্যরা আরো জানিয়েছেন, সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছে। তবে, চিকিৎসার জন্য কোনো আর্থিক বা অতিরিক্ত সহায়তার প্রয়োজন নেই। পরিবারের একটাই অনুরোধ— সবাই যেন ফরিদা পারভীনের জন্য দোয়া করেন।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা.

আশীষ কুমার চক্রবর্তী বলেছেন, “ফরিদা পারভীন এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। তার কিডনি, মস্তিষ্ক কাজ করছে না, ফুসফুসে জটিলতা দেখা দিয়েছে। হৃদযন্ত্রে অনিয়মিত স্পন্দন আছে, রক্তের সংক্রমণ পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। বর্তমানে তিনি মাল্টি অর্গান ফেইলিউরে ভুগছেন। রক্তচাপ অত্যন্ত কম থাকায় ডায়ালাইসিস সম্ভব হয়নি। তাকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর বোঝা যাবে, অবস্থা কোন দিকে যাবে।”

চলতি বছরের শুরুতেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ফরিদা পারভীনকে। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরেন। আবারও গত ৫ জুলাই গুরুতর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও নিয়মিত রুটিন চিকিৎসা চলছিল। গত বুধবার থেকে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়।

ক্যারিয়ারের শুরুতে দেশাত্মবোধক গান গাইলেও লালন সংগীতের মাধ্যমেই গড়ে ওঠে ফরিদা পারভীনের নিজস্ব পরিচয়। গুরুদের সাহচর্যে তিনি লালনের গানকে হৃদয়ের গভীরতা দিয়ে উপলব্ধি করেছেন এবং সেই আবেগেই গেয়েছেন ‘মিলন হবে কত দিনে’, ‘অচিন পাখি’সহ অসংখ্য কালজয়ী গান। 

১৯৭৮ সালে সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। পরে জাপান সরকার তাকে সম্মানিত করে কুফুওয়া এশিয়ান কালচারাল পদক দিয়ে। দেশ-বিদেশে অসংখ্য সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি।

কেবল গানের মঞ্চেই নয়, লালন সংগীতকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘অচিন পাখি স্কুল’, যেখানে শিশু-কিশোরদের শেখানো হয় লালনের আধ্যাত্মিক দর্শন ও সংগীত।

ঢাকা/রাহাত/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ