১৯৫৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানী ডেভিড পাইনস একটি ভরহীন ও নিরপেক্ষ প্লাজমা কণার অস্তিত্বের তত্ত্ব জানিয়েছিলেন। কণাটির নাম দেওয়া হয় ‘ডেমন’। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় আরবানা-শ্যাম্পলেইনের বিজ্ঞানীরা সেই তাত্ত্বিক ডেমন কণার অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সন্ধান পাওয়া ডেমন কণার ক্ষতিকর কোনো দিক নেই। ডেমন মূলত কোয়ান্টাম মেকানিকসের একটি বিশেষ কণা, যা একধরনের প্লাজমোন। এর কোনো ভর নেই ও নিরপেক্ষ আধানযুক্ত। ভরহীন ও নিরপেক্ষ হওয়ায় এটিকে খুঁজে পাওয়া সহজ নয়। ডেমন কণা সম্ভবত সাধারণ তাপমাত্রায়ও বিদ্যমান থাকে। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের উচ্চ তাপমাত্রার অতিপরিবাহিতা সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডেমন কণা খুঁজে বের করার জন্য বিজ্ঞানীরা স্ট্রন্টিয়াম রুথিনেট ক্রিস্টালের ওপর ইলেকট্রন নিক্ষেপ করে অবিশ্বাস্য নির্ভুলতার সঙ্গে শক্তির পরিবর্তন পরিমাপ করেন। এরপর উপাদানটির মধ্যে ডেমন কণার গতিপথ শনাক্ত করা হয়। একপর্যায়ে কোয়াসিপার্টিকেলটি ৬৭ বছর আগে পাইনসের দেওয়া ভরহীন ইলেকট্রনিক মোড বা ডেমনের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যায়। নতুন এই কণা খোঁজার গবেষণার ফলাফল নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পিটার অ্যাবামন্টে বলেন, ‘এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত আবিষ্কার নয়। আপনি নতুন কোনো কিছু খুঁজতে গিয়ে হয়তো এমন কিছু দেখে ফেলেন যা আগে কেউ দেখেনি। এই আবিষ্কার তারই প্রমাণ। ডেমন কণার এই আবিষ্কার অতিপরিবাহিতা বোঝার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোয়াসিপার্টিকেল ভরহীন। এটি যেকোনো শক্তি ও সম্ভবত যেকোনো তাপমাত্রায় গঠিত হতে পারে।’
বিজ্ঞানী আলী হুসাইন বলেন, ‘প্রথম দিকে আমরা জানতাম না এটি কী। ডেমন কণা মূলধারার পদার্থবিজ্ঞানের খুব পরিচিত ধারণা নয়। সেই সম্ভাবনার কথা প্রথম দিকে এলে আমরা তা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমরা যখন অন্যান্য সম্ভাবনা বাতিল করতে শুরু করলাম, তখন আমাদের সন্দেহ হয় যে এটি সত্যিকারের ডেমন কণা।’
সূত্র: পপুলার মেকানিকস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা
সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী