শিক্ষায় ডিজিটাল বিভাজন: গ্রামীণ কলেজে প্রযুক্তি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ
Published: 17th, September 2025 GMT
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয় প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার অনেক দ্রুত ঘটেছে, যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও সহজেই অনলাইনে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এসব দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুম, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিক্ষার মানোন্নয়ন করছে এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করছে, যেন প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা আরও সহজলভ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়। অনেক দেশে ডিজিটাল শিক্ষাকে আইনের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে সব স্তরের শিক্ষার্থী প্রযুক্তির সুফল পায় এবং পিছিয়ে না পড়ে। ইউরোপ ও আমেরিকার স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইন শিক্ষাকে মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করেছে, ফলে সেখানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা দ্রুত বেড়ে চলেছে। যদিও আফ্রিকার অনেক দেশে ইন্টারনেট–সংযোগ ও অবকাঠামো এখনো দুর্বল, এরপরও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান সেখানে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাকে বিস্তৃত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, যেখানে সরকার বিশেষ বাজেট ও নীতিমালা গ্রহণ করেছে এই খাতকে এগিয়ে নিতে। উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল অনেক দেশ এখন অনলাইন শিক্ষার জন্য নিজস্ব অ্যাপ, প্ল্যাটফর্ম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করছে। এসব প্রচেষ্টার ফলে বৈশ্বিকভাবে প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা যেমন এক নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে, তেমনি নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জও তৈরি হচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার একদিকে উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে কিছু অঞ্চলে ‘ডিজিটাল বিভাজন’ এখনো একটি বড় সংকট হিসেবে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে উচ্চশিক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব শিক্ষকের জন্য আইসিটি প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, ডিজিটাল কনটেন্ট, ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর সরবরাহ করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার ডিজিটালীকরণের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস ছাড়াই ডিএসইউ স্কলারশিপ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫তবে নীতিমালার এই অগ্রগতির বাস্তব চিত্র গ্রামীণ কলেজগুলোয় অনেকটাই ভিন্ন। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নানা সীমাবদ্ধতা, অব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের অভাবে সরকারি উদ্যোগগুলো কাঙ্ক্ষিত সফলতা পাচ্ছে না।
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামীণ কলেজগুলোরও অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রযুক্তিতে যথেষ্ট দক্ষ। প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে। তারা ইউটিউব, গুগল, ফেসবুক গ্রুপ, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শিক্ষাবিষয়ক তথ্য আদান-প্রদান করে। কোচিং বা অনলাইন টিউটোরিয়ালেও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তারা মনে করে, শ্রেণিকক্ষে ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহারে পাঠ আরও আকর্ষণীয় হয় এবং বিষয়বস্তুকে সহজে বোঝা যায়। শিক্ষার্থীরা এই বিশ্বাসও রাখে যে প্রযুক্তি শিক্ষককে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না বা এটি শিক্ষকদের বিকল্প হবে না; বরং শিক্ষকের দক্ষতাকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
তবে দুঃখজনকভাবে এসব কলেজে ডিজিটাল লাইব্রেরি, উচ্চগতির ইন্টারনেট, পর্যাপ্ত মাল্টিমিডিয়া কক্ষ ও সুনির্দিষ্ট পাঠপরিকল্পনার অভাব রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানিক কাঠামোর দুর্বলতার কারণে তারা তাদের সেই আগ্রহ ও সক্ষমতাকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারছে না।
গৌরনদীতে বসেই বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের কাছে অনলাইনে পড়তে পারছে এই ছাত্রীরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র অন ক দ র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আবার ‘লাস্ট মিনিট শো’, জন্মদিনের রাতে স্লটকে জয় উপহার ফন ডাইকের
লিভারপুল ৩–২ আতলেতিকো মাদ্রিদ
জন্মদিনের রাতে এর চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!
রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই মাঠে ঢুকে পড়লেন আর্নে স্লট। লিভারপুলের সমর্থকেরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে থাকলেন, দল জেতায় অভিনন্দনও জানালেন। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে হাত নেড়ে স্লট সেই অভিবাদনের জবাব দিলেন।
ভার্জিল ফন ডাইকের সঙ্গে আলিঙ্গনের সময় স্লটকে একটু বেশিই খুশি মনে হলো। কারণ, লিভারপুল অধিনায়ক ফন ডাইক ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত না হলে তাঁর বিশেষ রাতটা যে অনেকটাই পানসে হয়ে যেত!
২০২৫–২৬ মৌসুমে শেষ মুহূর্তে জয়সূচক গোল করাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলেছে লিভারপুল। যেটিকে বলা হচ্ছে লাস্ট মিনিট শো, কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নাম দিয়েছে স্লট টাইম।
এবার সেই শো–এর নায়ক ফন ডাইক। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে তাঁর হেডারেই আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্রয়ের পথে থাকা ম্যাচটা ৩–২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে শুভসূচনা করল লিভারপুল।
এ নিয়ে এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতল লিভারপুল। সবকটি ম্যাচে অলরেডরা জয়সূচক গোল করল ৮০ মিনিটের পর; এর তিনটিই যোগ করা সময়ে।