দুর্গাপূজায় ৪ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
Published: 17th, September 2025 GMT
দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিন ছুটি পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। ছুটি শুরু হবে আগামী ১ অক্টোবর (বুধবার)। এবার শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটিসহ ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি থাকবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টানা ১১ দিন, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে টানা ১২ দিন এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই দিন ছুটি থাকবে। মাদ্রাসায় ছুটি থাকছে না।
আরো পড়ুন:
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে যা বললেন আসিফ
মাদারীপুর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডিসি প্রত্যাহার
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, দুর্গাপূজার মহানবমী উপলক্ষে আগামী ১ অক্টোবর (বুধবার) নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরের দিন ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিজয়া দশমী হচ্ছে দুর্গাপূজার সাধারণ ছুটি। ৩ ও ৪ অক্টোবর যথাক্রমে শুক্রবার ও শনিবার হওয়ায় তা সাপ্তাহিক ছুটির অংশ হিসেবে গণ্য হবে।
গত বছরের ১৭ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০২৫ সালের ছুটির তালিকা অনুমোদন দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছুটির তালিকা প্রণয়ন করে। ওই তালিকা অনুযায়ী, এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আজহায় ৬ দিন ও শারদীয় দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি।
সরকার দুর্গাপূজার সাধারণ ছুটির পাশাপাশি এক দিন নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে। আগের সরকারের আমলে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঈদে তিন দিন ও দুর্গাপূজায় এক দিন ছুটি থাকত। তবে, কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে এ মেয়াদ বাড়ানো হয়।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ৯ দিন বন্ধ থাকবে। তবে, ছুটির শুরুতে দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি পড়ায় টানা ১১ দিন বন্ধ থাকবে প্রাথমিক বিদ্যালয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্গাপূজার ছুটি শুরু হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। তার আগে ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। ফলে, ২৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূজার ছুটি শুরু হবে। ছুটি শেষে ৭ অক্টোবর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে।
সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক বন্ধ (শুক্র ও শনিবার) থাকায় মোট ছুটি মিলবে ১২ দিনের। ফলে, দুর্গাপূজার ১০ দিনের ছুটি ও দুই দিনের সাপ্তাহিক বন্ধসহ টানা ছুটি থাকবে ১২ দিন।
শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি কলেজেও ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ১২ দিন ছুটি থাকবে। ছুটি শেষে ৮ অক্টোবর থেকে সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে যথারীতি ক্লাস শুরু হবে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ১ ও ২ অক্টোবর কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে, দুর্গাপূজায় মাদরাসাগুলোতে কোনো ছুটি থাকছে না।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র স প ট ম বর উপলক ষ ১২ দ ন অন য য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।
আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’
হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।
নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।
এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।