ফতুল্লায় শাসনগাঁও চাঁদনী হাউজিং এলাকায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এক বিশেষ মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মিল্টন রায়।

অভিযানে প্রথমে শাসনগাঁও এলাকার শিল্পপ্রতিষ্ঠান মেসার্স এম.

আর. ইয়ার্ণ ডাইং এ অভিযান চালানো হয়। সেখানে ১ টন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি এবং ৩০০ কেজি ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি মোট দুটি বয়লারে অবৈধভাবে পূর্বে বিচ্ছিন্নকৃত গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছিল। 

কর্তৃপক্ষ দ্রুত সংযোগগুলো পুনরায় বিচ্ছিন্ন করে কিল (স্থায়ীভাবে বন্ধ) করে দেয়। এসময় অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করার অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ৮০ হাজার টাকা নগদ জরিমানা আদায় করা হয়।

শুধু শিল্পপ্রতিষ্ঠানই নয়, আশপাশের আবাসিক এলাকা চাঁদনী হাউজিং ও শাসনগাঁওয়ের প্রায় ৫০টি বাড়িতে ৩০০টিরও বেশি গ্যাসচুলা অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে চালানো হচ্ছিল। অভিযান চলাকালে এসব সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে কিল করা হয়। ফলে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৭৬০০ ঘনফুট গ্যাস সাশ্রয় হবে, যা মাসিক হিসাবে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সমমূল্যের গ্যাস অপচয় রোধ করবে।

অভিযান শেষে জোবিঅ-এনায়েতনগর-কাশিপুর ফতুল্লা শাখার ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিয়মিতভাবেই এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছি এবং ভবিষ্যতেও এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধ সংযোগের কারণে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে, তাই কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এই অভিযানের ফলে এলাকায় গ্যাস ব্যবহারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শর্তে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপাচার্যের দায়িত্বে নিযুক্ত সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। পরে রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। পরে রাত পৌনে আটটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডের পাশে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ রাকসু নির্বাচনের বিভিন্ন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। এ সময় তাঁরা ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ প্রভৃতি স্লোগান দিচ্ছেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার (শুভ) বলেন, ‘নির্লজ্জ প্রশাসন পোষ্য কোটা আবার ফিরিয়ে এনেছে। আমরা এখানে রাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা লক্ষ করছি। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ক্ষেত্রে ১০টি শর্ত দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেগুলো হলো শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঔরসজাত সন্তান এই ভর্তির সুযোগ পাবেন; ভর্তির প্রাথমিক আবেদনের জন্য বিজ্ঞাপিত যোগ্যতা ও শর্ত প্রযোজ্য হবে; মেধার ভিত্তিতে ভর্তির জন্য নির্ধারিত আসনসংখ্যার অতিরিক্ত হিসাবে এ প্রক্রিয়ায় ভর্তির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে; ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করে মেধা অনুসরণ করা হবে; ভর্তির আবেদন বিবেচনার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্ধারিত শর্তাবলিসহ অবশ্যই ন্যূনতম পাস নম্বর থাকতে হবে; কোনো বিভাগে দুজনের অধিক ভর্তির সুযোগ থাকবে না; কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানকে তাঁর কর্মরত বিভাগে ভর্তি করানো যাবে না; এ সুবিধার আওতায় নিজেদের মধ্যে ‘অটো মাইগ্রেশন’ ছাড়া শিক্ষার্থীর বিভাগ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ থাকবে না; ভর্তির ক্ষেত্রে এবং পরবর্তী সময়ে কোনো অভিভাবকের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিলসহ সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে মর্মে অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করতে হবে এবং এ সুবিধার আওতায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী কোনোভাবেই আবাসিক হলে আসনের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন না।

এর আগে গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পোষ্য কোটা থাকবে না বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি ১ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখারও পক্ষে নই। আমি অঙ্গীকার করছি, এই পোষ্য কোটা রাখা হবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি বাতিল ঘোষণা করা হবে।’

এরপর পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে কয়েক দফা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সর্বশেষ গতকাল বুধবার পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ