গাজীপুরে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় মামলা, যুবদল নেতাকে বহিষ্কার
Published: 13th, January 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় এক শিক্ষককে ধরে এনে মারধরের ঘটনায় জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম ওরফে রনিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
অন্যদিকে এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিনের স্ত্রী সিফাত-ই মনোয়ার বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৭ থেকে ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকালে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার বঙ্গবন্ধু সরকারি বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমার সাহা গল্প করছিলেন। এ সময় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন আহমেদ, যুবদল কর্মী রাকিব হাসানসহ কয়েকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে ঢোকেন। পরে সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিনকে জোর করে ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক যুবদল নেতা রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২ জন যুবদল কর্মী এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রিজভী আহামেদ দেখতে পেয়ে রক্ষা করতে গেলে তাঁকেও এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করেন হামলাকারীরা। পরে বিদ্যালয়ের দপ্তরিসহ আশপাশের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
স্কুলশিক্ষকসহ দুজনকে পিটিয়ে জখম করার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে রাতেই জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে দলের সিদ্ধান্তে রাশেদুলকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল হোসেন বলেন, শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুনগাজীপুরে বিদ্যালয়ের অফিস থেকে শিক্ষককে ধরে এনে যুবদল নেতার মারধর১৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
যশোরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার আইনজীবীকে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম এবং তরফদার আব্দুল মুকিত।
জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্র জানায়, ওই চার আইনজীবীর মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক এক এনজিওর ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই টাকা ফেরত দিতে তিনি অঙ্গীকার করে ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চেক ডিজ অনার হয় এবং একই সাথে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় মক্কেল আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
অন্যদিকে, সৈয়দ কবীর হোসেন জনি একটি জমি ক্রয় করেন। কিন্তু ওই জমির মালিককে পূর্ণাঙ্গ টাকা না দিয়ে তালবাহানা করেন। শেষমেষ আট লাখ টাকা না দেওয়ায় জমির মালিক আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দেন।
এছাড়া, রফিকুল ইসলাম নিজে আইনজীবী হয়েও আরেক আইনজীবী নুরুল ইসলামকে নির্বাহী আদালতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় নুরুল ইসলাম অভিযোগ দেন। অন্যদিকে, তরফদার আব্দুল মুকিত এক মক্কেলের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ করেননি। এছাড়া তিনি ওই মক্কেলের কাগজপত্র আটকে রেখে জিম্মি করে রাখেন। বাধ্য হয়ে তিনি মুকিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন সমিতিতে।
এসব অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতি পৃথকভাবে তদন্ত করে। একই সাথে চার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. গফুর।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার লিখিতভাবে তাদেরকে নোটিশ দিয়ে অবগত করা হবে।”
ঢাকা/রিটন/এস