বাংলাদেশ থেকে নেপাল: অভ্যুত্থানের ফলাফল কী
Published: 20th, October 2025 GMT
বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পেরোতে না পেরোতেই তার ঢেউ আছড়ে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার পাহাড়ি দেশ নেপালে। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে নেপাল হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে পড়ে।
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর রাস্তায় হাজার হাজার তরুণ যখন প্রতিবাদে নামেন, প্রথমে অনেকে ভেবেছিলেন—এ কেবল কয়েক দিনের ক্ষণিক উত্তেজনা। কিন্তু দ্রুতই স্পষ্ট হয়, এটি কোনো সাধারণ বিক্ষোভ নয়; বরং এক প্রজন্মের দীর্ঘদিনের হতাশা, ক্ষোভ ও ক্রোধের বিস্ফোরণ। এই তরুণ প্রজন্ম, যারা ‘জেন–জি’ বলে পরিচিত, রাজনীতির প্রথাগত কাঠামোর বাইরে থেকে এক নতুন সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতা গড়ে তুলতে চাচ্ছে।
তাদের আন্দোলন শুরু হয় ডিজিটাল পরিসরে, কিন্তু খুব অল্প সময়েই তা রূপ নেয় এক পূর্ণাঙ্গ গণ–অভ্যুত্থানে—যেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার পর্দা থেকে মুহূর্তেই তারা দখল নেয় রাজপথ।
নেপালে গণবিক্ষোভের কারণ ও পটভূমি
বাংলাদেশে যেখানে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ইস্যু থেকে, সেখানে নেপালের সাম্প্রতিক গণবিক্ষোভের সূত্রপাত হয় এক ভিন্ন কারণকে কেন্দ্র করে; সরকারের সিদ্ধান্তে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণায়।
সরকারের দাবি ছিল, এসব সামাজিক প্ল্যাটফর্মে ভুয়া খবর ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চলছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে জেন–জি এটিকে দেখেছিল মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে।
শুরুতে প্রতিবাদ হয় অনলাইনে, বিশেষ করে টিকটক ও ডিসকোর্ডের মতো প্ল্যাটফর্মে; কিন্তু খুব দ্রুতই সেই ডিজিটাল প্রতিবাদ রাস্তায় নেমে আসে আর কয়েক দিনের মধ্যে তা রূপ নেয় এক বিশাল গণ–আন্দোলনে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে কেবল স্ফুলিঙ্গের কাজ করেছে। এর নিচে জমে ছিল বছরের পর বছর ধরে বেড়ে ওঠা দুর্নীতি, বেকারত্ব, প্রশাসনিক অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি গভীর অবিশ্বাস।
‘নেপো কিডস’ শব্দগুচ্ছটি নেপালের তরুণসমাজে একটি নতুন রাজনৈতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল প্রজন্মের ক্ষোভ প্রকাশ করছে না, বরং একধরনের নৈতিক প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মোস্তাফিজের রঙিন অভিষেকে হারল তার দল
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইএল টি-টোয়েন্টিতে মোস্তাফিজুর রহমানকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নেয় দুবাই ক্যাপিটালস। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল দিল্লি ক্যাপিটালসের মালিকেরই দল দুবাই ক্যাপিটালস।
অভিষেকে বেশ ভালো বোলিং করেছেন মোস্তাফিজুর। বল হাতে পেয়েছেন ২ উইকেট। সতীর্থ জিমি নিশাম ক্যাচ মিস না করলে আরো ১টি উইকেট বাড়ত তার। ৪ ওভারে ২৬ রানে তার শিকার ২ উইকেট। ধারাবাহিক বোলিং করতে থাকা এই পেসার গতকালই দলের সঙ্গে যোগ দেন। মাঠে নেমেই নিজের ছাপ রাখেন দৃঢ়ভাবে। কিন্তু তার রঙিন অভিষেকের ম্যাচে হেরেছে দুবাই ক্যাপিটালস।
গালফ জায়ান্টস ৪ উইকেটে হারিয়েছে দুবাইকে। দুবাইয়ে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুবাই ক্যাপিটালস ৬ উইকেটে ১৬০ রান করে। জবাব দিতে নেমে ৭ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় গালফ। ২ ম্যাচে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে দুবাইয়ের এটি দ্বিতীয় পরাজয়। জয়ের খাতা খোলার অপেক্ষায় তারা।
স্কোরবোর্ডে লড়াকু পুঁজি নিয়ে মোস্তাফিজুরের লড়াই শুরু হয়। দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন তিনি। বল হাতে নিয়েই উইকেটের স্বাদ পেয়ে যান। কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেট পেয়েছিলেন। সেই ফর্মই টেনেছেন দুবাইয়ের জার্সিতে। তার বলে মিড অনে ক্যাচ দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। কিন্তু শুরুর ওভারটা ভালো করে শেষ করতে পারেননি। পাথুম নিশাঙ্কা ওই ওভারে একটি চার ও ছক্কা আদায় করে নেন।
পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন বাঁহাতি পেসার। ওভারের দ্বিতীয় বলে চার হজমের পরও ৫ বলে মোস্তাফিজুর রান দিয়েছিলেন ৬। শেষ বলে উইকেটের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। তার স্লোয়ারে ক্যাচ তোলেন ভিঞ্চ। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে নিশাম ক্যাচ ফেলে দেন। বল গড়িয়ে যায় বাউন্ডারিতে। দুই ওভারেই মোস্তাফিজুর দেন ২১ রান।
১২তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে বাংলাদেশের তারকা পেসার দলকে এগিয়ে নেন। উড়তে থাকা নিশাঙ্কাকে আউট করেন নিজের প্রথম বলে। ৩১ বলে ৬৭ রান করা নিশাঙ্কা ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ওই ওভারে ২ রানের বেশি দেননি তিনি। এরপর ষোলোতম ওভারে ফিরে বোলিংয়ে দেন ৩ রান।
পৃথক চার ওভারের স্পেলে ১৩ বল ডট করেছেন। হজম করেছেন ৩ চার ও ১ ছক্কা। নিজের অভিষেকটা দারুণভাবে রাঙালেও দল হারায় দিন শেষে মাটি হয়েছে মুখে হাসি।
ঢাকা/ইয়াসিন