নিউজিল্যান্ডের ‘ক্যাচ-মিছিল’, ইংল্যান্ডের বড় জয়
Published: 20th, October 2025 GMT
কট, কট, কট ... নিউজিল্যান্ডের স্কোরকার্ডে তাকালে শুধু ‘কটের’ দেখাই মিলছে আজ। ক্রাইস্টচার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের ১০ ব্যাটসম্যানই আউট হয়েছেন ক্যাচ দিয়ে। এমন ক্যাচময় ইনিংসের দিনে ৬৫ রানে ম্যাচও হেরেছে কিউইরা।
ইংল্যান্ডের ২৩৬ রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ড ১৮ ওভারে অলআউট হয়েছে ১৭১ রানে। প্রথম টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত হওয়ার পর ইংল্যান্ড এখন সিরিজে এগিয়ে ১-০ ব্যবধানে।
ইংল্যান্ডের রান দুই শ পার হওয়াতে বড় ভূমিকা অধিনায়ক হ্যারি ব্রুকের। ৬৮ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর জুটি বেঁধেছিলেন ফিল সল্ট। তৃতীয় উইকেটে দুজনে যোগ করেন ১২৯ রান। সল্টই বেশি রান করেছেন—৫৬ বলে ৮৪। তবে দ্রুত রান তোলার কাজটি করেছেন ব্রুকই। ২২ বলে ফিফটি পূর্ণ করা ইংলিশ অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত করেন ৩৫ বলে ৭৮ রান।
অথচ ৩৯ রানের মাথায় এই ব্রুকই ক্যাচ দিয়েছিলেন লং অনে। তবে জিমি নিশাম তা ধরতে পারেননি। ‘জীবন’ পেয়ে ব্রুক আরও ৩৯ রান যোগ করেন। ১৮তম ওভারে তিন বলের মধ্যে ব্রুক-সল্ট দুজনই আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ডের রান ২৩৬-এর দিকে নিয়ে যান টম ব্যান্টন। ১২ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
রান তাড়ায় নিউজিল্যান্ড ১৮ রানেই হারায় ২ উইকেট। এরপর টিম সেইফার্ট চারে নামা মার্ক চ্যাপম্যানকে নিয়ে ৫৯ রানের জুটি গড়লে জয়ের সম্ভাবনা জেগে ওঠে। তবে চ্যাপম্যান ২৮ রান আর সেইফার্ট ৩৯ রান করে পরপর দুই ওভারে আউট হয়ে গেলে আবার দিক হারায় স্বাগতিকেরা। এর মধ্যে সেইফার্টকে ফেরানো আদিল রশিদ পরে তুলে নেন মাইকেল ব্রেসওয়েল, জিমি নিশাম ও মিচেল স্যান্টনারের উইকেটও। শেষ ব্যাটসম্যান জ্যাকব ডাফি মার্ক উডের বলে ব্রুকের ক্যাচ হলে স্কোরবোর্ডে ফুটে ওঠে ‘১০ ক্যাচের ছবি’।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ড ১৩তম দল, যাদের ১০ ব্যাটসম্যানই ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছে।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ২৩ অক্টোবর।
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ২৩৬/৪ (সল্ট ৮৫, ব্রুক ৭৮, ব্যান্টন ২৯*; জেমিসন ২/৪৭, ব্রেসওয়েল ১/৩৬)।
নিউজিল্যান্ড: ১৮ ওভারে ১৭১ (সেইফার্ট ৩৯, স্যান্টনার ৩৬, চ্যাপম্যান ২৮; রশিদ ৪/৩২, কার্স ২/২৭)।
ফল: ইংল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হ্যারি ব্রুক।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে হেপাটাইটিস বি–এর টিকা নিয়ে সন্দিহান পরামর্শক প্যানেল, নতুন সুপারিশ
যুক্তরাষ্ট্রে সব নবজাতককে হেপাটাইটিস বি–এর টিকা দেওয়ার সুপারিশের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে পরামর্শক প্যানেল। গতকাল শুক্রবার এ ভোটাভুটি হয়। পরামর্শক প্যানেলটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট কেনেডি জুনিয়রের হাতে নিয়োগ পাওয়া। কেনেডি জুনিয়র টিকাবিরোধী হিসেবে পরিচিত।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সুপারিশে বলা হয়েছিল, হেপাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতক ছাড়া বাকি সব শিশুকে জন্মের পরপরই তিন ডোজ হেপাটাইটিস বি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হবে। এর মূল উদ্দেশ্য, যেসব অন্তঃসত্ত্বা মা জানেন না যে তাঁরা হেপাটাইটিস বি–তে আক্রান্ত বা পরীক্ষায় ভুল করে হেপাটাইটিস বি ধরা পড়েনি, তাঁদের থেকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা। ফলে দেশটির তরুণদের মধ্যে প্রাণঘাতী লিভারের রোগের সংক্রমণ অনেকটা নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল।
এক দিন দেরি করার পর গতকাল শুক্রবার পরামর্শক প্যানেল নতুন সুপারিশ নিয়ে ভোটাভুটি করে। সুপারিশটি ৮–৩ ভোটে পাস হয়। সুপারিশ অনুযায়ী, এখন থেকে মায়ের হেপাটাইটিস বি পরীক্ষা নেগেটিভ হলে শিশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবাদাতার সঙ্গে পরামর্শ করে পৃথকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।ভোটাভুটিতে এক দিন দেরি করার পর গতকাল পরামর্শক প্যানেল নতুন এক সুপারিশ নিয়ে ভোটাভুটি করে। সুপারিশটি ৮–৩ ভোটে পাস হয়। সুপারিশ অনুযায়ী, এখন থেকে মায়ের হেপাটাইটিস বি পরীক্ষা নেগেটিভ হলে শিশুর জন্য স্বাস্থ্যসেবাদাতার সঙ্গে পরামর্শ করে পৃথকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্যানেল মনে করে, জন্মের সময় ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে এর লাভ, ঝুঁকি ও সংক্রমণের আশঙ্কা—সবকিছু বিবেচনা করা উচিত।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি একে ‘অত্যন্ত ভালো একটি সিদ্ধান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে চিকিৎসাবিষয়ক কয়েকটি সংগঠন তাৎক্ষণিকভাবে নতুন সুপারিশের নিন্দা জানিয়েছে।
আরও পড়ুনটিকার সঙ্গে আসলে কি অটিজমের সম্পর্ক আছে, কেন ট্রাম্প এমন বলছেন২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের সভাপতি সুসান জে ক্রেসলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেওয়া এ বিভ্রান্তিকর নির্দেশনা নবজাতক ও শিশুদের মধ্যে হেপাটাইটিস বি–এর সংক্রমণ আরও বাড়িয়ে দেবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধকেন্দ্রে (সিডিসি) ট্রাম্পের নিযুক্ত কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এ সুপারিশগুলো গ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্যানেল আরও সুপারিশ করেছে, যে শিশুরা জন্মের সময় টিকা পায়নি, তাদের প্রাথমিক ডোজ নেওয়ার জন্য অন্তত দুই মাস অপেক্ষা করা উচিত। তা ছাড়া দ্বিতীয় ডোজের আগে অ্যান্টিবডি পরিমাপের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।
প্যানেল আরও সুপারিশ করেছে, যে শিশুরা জন্মের সময় টিকা পায়নি, তাদের প্রাথমিক ডোজ নেওয়ার জন্য অন্তত দুই মাস অপেক্ষা করা উচিত। তা ছাড়া, দ্বিতীয় ডোজের আগে অ্যান্টিবডি পরিমাপের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।স্বাস্থ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কেনেডি অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন প্র্যাকটিসেস (এসিআইপি)-এর সব সদস্যকে বরখাস্ত করেন। তাঁদের জায়গায় তিনি এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়েছেন, যাঁরা টিকা নিয়ে সংশয়ী। আর তাঁদের মতামত কেনেডি জুনিয়রের মতামতের সঙ্গে মিলে যায়।
দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নতুন প্যানেল আগের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করতে শুরু করে। চিকিৎসাবিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে টিকা নেওয়ার হার আরও কমাতে পারে।
আরও পড়ুনকরোনা টিকাকে প্রাণঘাতী বলা কেনেডিকেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিলেন ট্রাম্প১৫ নভেম্বর ২০২৪