টাঙ্গাইলে শহর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সক্রিয় সদস্য মানিক বাবু ও ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইলকে থানা থেকে ছাড়ানোর তদবির চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল মডেল থানায় জামায়াতের জেলা ও শহর শাখার নেতাকর্মীদের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) রুমে বসে থাকতে দেখা যায়।

তারা জানান, তাদের দুজন কর্মীকে ছাড়াতে এসেছেন। অতীতে তারা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন বলেও স্বীকার করেন তারা।

এর আগে গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ওই দুজনকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের মামলায় শহরের এনায়েতপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত সময়ে মানিক বাবু ও ইসমাইল দুজনে টাঙ্গাইল সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম সিরাজুল হক আলমগীর এবং শহর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান ইমুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে বিভিন্ন সময়ের ছবিও রয়েছে এই দুজনের। পাশাপাশি ২০১৯ সালের টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী যুবলীগের অনুমোদিত আহ্বায়ক কমিটির তালিকায় ২০ নং সদস্য রয়েছেন মানিক বাবু।

পৌরসভার জামায়াত আমীর মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, “কেউ একটি দলের সমর্থন করতেই পারে। তবে আটক দুজন আমাদের দলের সহযোগী কর্মী। অন্য দল হলে আমরা ছাড়াতে আসব কেন?” 

টাঙ্গাইল জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম বলেন, “যে দুজন আটক হয়েছে, তারা আমাদের কর্মী। তারা এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। তবে তারা এখন আমাদের কর্মী।”

টাঙ্গাইল জামায়াতের আমীর আহসান হাবীব মাসুদ বলেন, “আটককৃতরা দীর্ঘদিন আগে আওয়ামী লীগের কর্মী ছিল। বর্তমানে তারা আমাদের দলের হয়ে কাজ করছে। তারা দলের সক্রিয় সদস্য।” 

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহাম্মেদ জানান, জামায়াতের লোকজন দাবি করছে আটক দুজন তাদের কর্মী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। এছাড়াও মানিক বাবু নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করছে। যাছাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/কাওছার/এস

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ