বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২৫-এ এই কথা বলা হয়েছে। ৫৪৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক তিরানা হাসান তাঁর সূচনা নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে সরকারগুলো রাজনৈতিক বিরোধী কর্মী এবং সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ 

করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সরকারি বাহিনী বেআইনিভাবে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করেছে। অনেককে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করেছে এবং মানবিক সহায়তা পাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, নোবেলজয়ী ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে একটি কমিশন গঠন করেছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের সময় ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি ও সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে তিন সপ্তাহব্যাপী ছাত্র আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণে শতাধিক শিশুসহ এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার আহত হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারসম্মত ভবিষ্যতের দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তবে আন্তর্জাতিক সহায়তা ও ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া এ অগ্রগতি স্থায়ী নাও হতে পারে। 
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, গুমের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর নাগরিক তত্ত্বাবধান প্রতিষ্ঠা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। 

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যুতে কয়েকটি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে– অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার, তাদের আইনি অধিকার ও সঠিক বিচার প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ, বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি বা তাদের পরিবারের কাছে তথ্য সরবরাহ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতা এবং মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সহিংসতার শিকার হচ্ছে। 

এইচআরডব্লিউ অন্তর্বর্তী সরকারকে মানবাধিকার মান অনুযায়ী সংস্থাগুলোকে সংস্কার করার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে– র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) বাতিল, নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য স্বাধীন তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে কাজ করা। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কারাগারে চালু হলো হটলাইন নম্বর

কারাগারের যেকোনো তথ্য বা যোগাযোগের জন্য হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। আজ সোমবার গণমাধ্যমে কারা অধিদপ্তরের পাঠানো খুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। হটলাইন নম্বরটি হলো ১৬১৯১।

খুদে বার্তায় বলা হয়, এখন থেকে ১৬১৯১ হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করলে বন্দীর সাক্ষাৎ, অবস্থান ও শাস্তি সম্পর্কে জানা যাবে এবং যেকোনো কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়েও তাৎক্ষণিক সাড়া (রেসপন্স) পাওয়া যাবে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে।

কারা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারা সদর দপ্তর, ৮ টি বিভাগীয় কারা দপ্তর এবং ৬৮টি কারাগার নিয়ে বাংলাদেশের কারা বিভাগ গঠিত। কারা বিভাগের সব কাজকর্ম কারা সদর দপ্তর থেকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। কারাগার পর্যায়ে জেল সুপার/সিনিয়র জেল সুপার দপ্তর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ