জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার হত্যা ও হামলার একাধিক মামলার আসামি ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম নাছিরসহ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুরের ছাত্র সমন্বয়কেরা।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশে পুনাক রেস্টুরেন্টের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ফরিদপুরের অন্যতম ছাত্র সমন্বয় সোহেল রানা। এ সময় গোলাম নাছিরের ছবি সম্বলিত প্রতীকী ফাঁসির ফেস্টুন হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তার পাশের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিটিউটে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভায় প্রকাশ্যে পলাতক আসামি গোলাম নাছির, ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি জুবায়ের জাকির বক্তব্য রাখেন। তারা দুজনে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা।

আরো পড়ুন:

বেগমগঞ্জে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ

আড়াইহাজারে নৌকার মাঝিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

ওই বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সমন্নয়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। 

পুলিশের তালিকাভূক্ত পলাতক আসামি গোলাম নাছির ও জুবায়ের জাকির রাজধানীতে বিএনপির অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখার বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না ফরিদপুরের ছাত্র সমন্বয়করা। আসামিদের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। 

সমন্বয়ক সোহেল রানা বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে নাছিরসহ যারা ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরাসরি হামলায় অংশ নিয়েছিলেন, পুলিশ এখনও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আজ থেকে অনশনে যাওয়ার কথা ছিল আমাদের। পুলিশ প্রশাসনকে আগামী পাঁচ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আশানুরূপ দৃশ্যমান গ্রেপ্তার দেখাতে না পারলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে বসা হবে।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সমন্বয়ক আবরার নাদিম ইতু, নিরব ইমতিয়াজ শান্ত, মেহেদী হাসান হৃদয়, সাজিদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা হামলার সঙ্গে জড়িত রয়েছে, তাদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। 

ঢাকা/তামিম/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সমন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ