বাণিজ্যমেলায় নারীদের ভিড় অ্যালুমিনিয়ামের স্টলে
Published: 19th, January 2025 GMT
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরে অন্যান্য স্টল-প্যাভিলিয়নের চেয়ে অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি (ক্রোকারিজ) পণ্যের প্রতি একটু বেশিই ভিড় দেখা গেছে। মেলায় এবার অন্যান্য পণ্যের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে অ্যালুমিনিয়ামের।
ক্রেতারা জানালেন, বাজারের তুলনায় পণ্যের সমারোহ বেশি থাকায় এসব স্টল-প্যাভিলিয়নে আসছেন তারা। তবে দাম ও মান নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বাণিজ্য মেলা ঘুরে দেখা যায়, অ্যালুমিনিয়ামের দোকানগুলোতে স্তরে স্তরে সাজানো তৈজস। নতুন নতুন ডিজাইনের বৈচিত্র্য নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। গৃহস্থালির জিনিসপত্র হওয়ায় আনাগোনা বেশি নারীদেরই। এক ছাদের নিচে নানা ধরণের আসবাবপত্রের সমারোহ থাকায় তাদের আগ্রহ বেশি। নানান বয়সের ক্রেতারা প্রয়োজন অনুযায়ী দেখছেন জিনিষপত্র।
মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের অন্যতম আগ্রহের পণ্যের মধ্যে আছে প্রেসার কুকার, রাইস কুকার, ইন্ডাকশন চুলা, নন স্টিক ফ্রাইপ্যানসহ গৃহস্থালির দেশী-বিদেশি সামগ্রী। মাইক্রোওয়েভ ওভেন, প্রেসার কুকার, ওয়াশিংমেশিনসহ গৃহস্থালির ১০ থেকে ২০টি পণ্যের প্যাকেজে মূল্যছাড় ঘোষণা করেন আমদানিকারকরা। কিয়াম, এসকেবি, টপার, নোয়া, আরএফএলের কুক স্টারসহ দেশীয় কোম্পানিগুলোও মূল্যছাড়সহ নানা উপহার ঘোষণা করেছে নিজেদের পণ্যে।
বাণিজ্য মেলায় অ্যালুমিনিয়াম পণ্য, নন-স্টিক কড়াই, সসপেনের পাশাপাশি তিন স্তরের স্টিলের গৃহস্থালি পণ্য নিয়ে এসেছে এসকেবি কুকওয়্যার। দুই বছর ধরে এসএ স্টিলের তৈরি ব্যয়বহুল এসব পণ্য বাজারজাত করছে এসকেবি।
বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, বিশেষ ক্ষেত্রে মূল্যছাড়সহ সব ধরণের পণ্য বিক্রি হচ্ছে পাইকারি দামে। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ডিজাইনের জিনিসপত্র দেখা যায়। তবে দাম একটু বেশি। অনেক দর্শনার্থী বলেন, এখান থেকে আসল পণ্য পাওয়া সম্ভব বলে তারা মেলায় আসেন।
বিক্রেতারা বলছেন, বেশিরভাগ পণ্য পাইকারি দামে বিক্রি করছেন তারা। সেই সঙ্গে আছে নির্দিষ্ট পণ্যে মূল্যছাড়। তাই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। কারো কারো মত, শুধু বিক্রি নয়, ক্রেতাদের কাছে নিজেদের নতুন পণ্যের পরিচয় করানোটাই আসল উদ্দেশ্য।
তবে অনেকের অভিযোগ, নামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হলেও, অনেক স্টল-প্যাভিলিয়নেই বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের অনেক পণ্য সামগ্রী। অনেক পণ্যসামগ্রী বিদেশি বলা হলেও তা দেশে তৈরি হচ্ছে।
২৪তম আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও ৭টি দেশের ৪৬টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলার গেট ও বিভিন্ন স্টল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকছে। প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা। এবারই প্রথম মেলার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি