নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুুটি গার্মেন্টস কারখানায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।  রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে  তুচ্ছ ঘটনা জের ধরে শাসনগাঁ এলাকায় মাদার কলার ও আরএস গার্মেন্টস কারখানায় এ হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি এসে শ্রমিকদের ধাওয়া দিলে শ্রমিকরা দ্রুত চলে যায়।

মাদারকালার গার্মেন্টস কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট এডমিন ম্যানেজার শাহনেওয়াজ জানান, তাদের কারখানার রিপন নামের একজন অপারেটর চার দিন অনুপস্থিত ছিল। এ কারণে ১৮ জানুয়ারি শনিবার কারখানা লাইন সুপারভাইজার মিজান তাকে ধমক দেয়।

এতে ক্ষুব্ধ রিপন সুপারভাইজার মিজানকে মারধর করে। মিজান ও রিপনের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অপারেটর রিপন অন্য শ্রমিকদের সাথে নিয়ে পুনরায় সুপারভাইজার মিজানকে মারধর করে।  

এই বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই শ্রমিকে ডেকে নিয়ে তাদের সাথে কথা বলে। এ সময় অন্য শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে অপারেটর রিপনকে মালিক পক্ষ মারধর করে আটকে রাখা হয়েছে। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ ছুটি দিয়ে দেয়।

রোববার সকালে মাদার কলার গার্মেন্টস কারখানার কিছু শ্রমিক ভেতরে প্রবেশ করল অধিকাংশ শ্রমিক বাইরে অবস্থান করে এবং ঘটনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পাশের বেস্ট স্টাইল গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বের করে নিয়ে যায়। পরে তারা মাদার কালারের পাশের অপর ফ্যাক্টরি আরএস গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বের করে নিয়ে এসে তাদের আন্দোলনের যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। 

কিন্তু আরএস গার্মেন্টসের শ্রমিকরা তাদের সাথে যোগ না দিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা দেওয়ার মাঝখানে মাদারকালার ফ্যাক্টরিতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেস্ট স্টাইলিস্ট মাদারকালারসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি কারখানা ছুটির ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার পরপরই একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি সেনাবাহিনী পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গার্মেন্টস কারখানা আশপাশে অবস্থান করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের এসপি আসাদুজ্জামান।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র ম ন টস

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন