পিলখানা হত্যাকাণ্ড: আড়াই শতাধিক আসামির জামিন, মুক্তি মিলবে ২ দিন
Published: 19th, January 2025 GMT
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনের মামলায় আড়াই শতাধিক আসামিকে জামিনের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর অস্থায়ী আদালতে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়ার আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন।
এদিন মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ ও পাঁচ শতাধিক আসামির জামিন শুনানির জন্য ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ মেজর সৈয়দ মো.
আরো পড়ুন:
বিজিবিকে মেরে মহিষ ছিনিয়ে নিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা
বিএসএফের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন: বিজিবি
এরপর প্রায় ৫ শতাধিক আসামির পক্ষে জামিন শুনানি হয়। এদের মধ্যে ছিলেন হত্যা মামলায় ২৭৭ জন খালাসপ্রাপ্ত, ২৫৬ জন ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত, যাদের সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আসামিদের পক্ষে মোহাম্মদ পারভেজ হাসান, আমিনুল ইসলাম, ফারুক আহাম্মদ জামিন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে বোরহান উদ্দিন জামিনের বিরোধিতা করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে জামিনে বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। আদালত আধাঘণ্টা বিরতি দিয়ে ৩টায় জামিনের বিষয়ে আদেশ দিবেন বলে জানান।
বিরতির পর ৩টা ১৩ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। আদালত বলেন, “যখন কোনো ইনজাস্টিজ হয়ে যায় তখন আমাদের উচিত জাস্টিজ রিস্টোর করা। যারা হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছেন তাদের ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে আমার অভিমত। তবে যারা এ মামলার আসামি তারা আপাতত কারাগারেই থাকবেন। সাক্ষী তো চলবেই। বিচার শেষ হতে আর বেশিদিন লাগবে না। পরে আদালত যারা নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত ও আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেয়েছেন তাদের জামিনের আদেশ দেন। এছাড়া আপিলে যে দুই আসামির এক বছর করে সাজা হয়েছে আদালত তাদের জামিনের আদেশ দেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, “দুই দিন পর দেখে শুনে জামিনপ্রাপ্তদের জামিননামা দাখিল করতে বলেছেন আদালত। যেন দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি ভুল করে বের হয়ে যেতে না পারেন। আমরা দুই দিন পর দেখেশুনে জামিননামা দাখিল করব। দুই দিন পর জেলখানা থেকে তারা মুক্তি পাবেন।”
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর বোরহান উদ্দিন বলেন, “আসামিপক্ষ যে দরখাস্ত দিয়েছে তারা ঠিক বলতে পারেনি যে কতজনের জন্য জামিনের দরখাস্ত দিয়েছেন। হাইকোর্টে কতজন খালাস পেয়েছেন তা নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। নিম্ন আদালত থেকে খালাস পেয়েছে এমন ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছিল। সেখান থেকে ১৫ জনের যাবজ্জীবন ও ১৫ জন খালাস পান। এই তথ্য ছাড়া বাকিদের সংখ্যা বলতে পারেনি আসামিপক্ষ। বলতে না পারায় আদালতের কাছে বিষয়টি সুস্পষ্ট না হওয়ায় আদালত শর্ত দিয়েছেন যে, যারা নিম্ন আদালত, উচ্চ আদালত ও আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেয়েছেন। তারাই জামিন পাবেন। তবে জামিন পাওয়ার সংখ্যা দুই শতাধিক হবে।”
এদিকে, আসামিদের জামিন শুনানির দিনে কারাগারের সামনে সকাল থেকে হাজির হন স্বজনেরা। জামিন প্রার্থনায় তারা আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন। বিকেলে জামিন পাওয়ার খবর শুনে আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জানান। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঢাকা/মামুন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট রপক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।