পেশাদার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে প্রস্তুত কুয়েত
Published: 23rd, January 2025 GMT
চিকিৎসক, নার্স, আইটি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন খাতে পেশাদার বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য প্রস্তুত কুয়েত।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আব্দুল ওহাব হামাদাহ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সাক্ষাতে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীদের অবদানের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি তাদের অনুগত, পরিশ্রমী এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হিসেবে প্রশংসা করেন। উভয় ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার কথাও বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ থেকে কুয়েত আরও দক্ষ ও পেশাদার কর্মী যেমন ডাক্তার, নার্স, আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের জন্য প্রস্তুত।
পররাষ্ট্রসচিব দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুরসংখ্যক নার্স নিয়োগের জন্য কুয়েত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। গৃহকর্মী নিয়োগে কুয়েতের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি আইনি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবের প্রতিও পররাষ্ট্রসচিব ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
দুই দেশের মধ্যে চমৎকার প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কথা স্মরণ করে তারা কুয়েতে কর্মরত সামরিক পেশাদারদের পেশাদারিত্ব এবং নিষ্ঠারও প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করার জন্য বাংলাদেশের প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই বিষয়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে স্বীকার করেন।
উভয়পক্ষ বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে পররাষ্ট্র দপ্তরের পরামর্শ সভায় যোগদানের জন্য সহকারী এশিয়াবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে কুয়েতি প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর এবং ঢাকায় আয়োজিত যৌথ কমিশন (জেসি) সম্মেলনে যোগদানের জন্য কুয়েতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফর দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য জোর দেন।
উভয়পক্ষ এশীয় সহযোগিতা সংলাপসহ (এসিডি) আন্তর্জাতিক মঞ্চে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট র সহয গ ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।