ইনসাফ, ন্যায় শান্তিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন সমাজ উপহার দিতে চাই : জামায়াত আমির
Published: 24th, January 2025 GMT
জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডে প্রত্যেকটি হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই বিপ্লবে শহীদদের চাওয়া ইনসাফ, ন্যায় শান্তিপূর্ণ পরিচ্ছন্ন সমাজ উপহার দিতে কাজ করবে জামায়াতে ইসলামী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে রংপুরের শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে জামায়াতের মহানগর যুব বিভাগের আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পথসভায় তিনি বলেন, “শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগের ঋণ এ জাতি কোনদিন শোধ করতে পারবে না। সারাজীবন শহীদ আবু সাঈদ চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায়। কারণ আবু সাঈদের জীবন দানের ফলে আন্দোলনে বারুদ জ্বলেছিল।”
ডা.
তিনি আরও বলেন, “সহিংসতায় ৩৪ হাজারের মতো মানুষ পঙ্গু হয়েছেন। অনেকে গুলিতে দুই চোখ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় আড়াইশোর বেশি মানুষের মেরুদণ্ডে গুলি লেগেছে, তারা এখন স্থায়ীভাবে অক্ষম। এই সমস্ত মানুষ শুধুমাত্র অন্যায় পূর্ণ সমাজ ভেঙে শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আশায় ২৪’র বিপ্লবে নিঃস্বার্থভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেই পরিবারগুলোর পাশে এখন দাঁড়াতে হবে।”
জামায়াতের আমির বলেন, “সহিংসতার পরও দেশবাসী ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কেউ জীবন বা সম্পদের ওপর আঘাত করেনি। অথচ যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা বলেছিল, ক্ষমতা হারালে দুই দিনে ৫ লাখ মানুষ খুন হবে। কিন্তু আমাদের জাতি এমন হত্যাকারী নয়। তৎকালীন স্বৈরাচারী ক্ষমতাসীনরা নিজেদের গদি রক্ষায় সহিংসতা চালিয়েছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে।”
রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “শহীদদের ত্যাগের প্রতি সম্মান দেখান। সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি বন্ধ করে ন্যায়ের পথে চলে আলোকিত সমাজ গড়ে তুলুন।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর আমির এটিএম আজম খান ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ঢাকা/আমিরুল/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’
আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।