চট্টগ্রাম পর্ব শেষে আবারও ঢাকায় ফিরছে বিপিএলের উত্তেজনা। লিগ পর্বে প্রতিটি দলের এখনও কয়েকটি ম্যাচ বাকি। এর পরই শুরু হবে প্লে-অফ পর্ব। তবে চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকার পরিস্থিতি দেখে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সেরা চারে জায়গা করে নেওয়া দলগুলোর সমীকরণ নিয়ে আলোচনা।  

পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছে রংপুর রাইডার্স। প্রথম আট ম্যাচ জিতে প্লে-অফ নিশ্চিত করা নুরুল হাসানের দল নবম ম্যাচে হেরে গেলেও ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার এক নম্বরে। টানা ম্যাচ জেতা নুরুল হাসান সোহানের দল প্লে অফ নিশ্চিত করেছে সবার আগেই। তবে বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে অন্তত একটি ম্যাচ জিতলেই পূরণ হবে সেরা দুইয়ে থেকে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নেওয়া।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন বরিশাল এখনও প্লে-অফে জায়গা নিশ্চিত করেনি। তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি পয়েন্ট তালিকার ৮ নম্বরে আছে। বাকি চার ম্যাচের একটি জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে বরিশালের। তবে বেশি ম্যাচ জিতলে কোয়ালিফায়ারে খেলার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হবে।  

তৃতীয় স্থানে আছে চিটাগং কিংস, ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে। বাকি তিন ম্যাচের মধ্যে দুটি জিতলে চিটাগং প্লে-অফ নিশ্চিত করবে। এক ম্যাচ জিতলেও এলিমিনেটর খেলার সুযোগ থাকবে, তবে সেক্ষেত্রে নেট রান রেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

চতুর্থ স্থানে থাকা খুলনা টাইগার্স প্লে-অফের দৌড়ে কিছুটা চাপে আছে। মেহেদী হাসান মিরাজের দলটি আছে ৪ নম্বরে।  বাকি তিন ম্যাচের সবগুলোতে জয় পেলেই খুলনা নিশ্চিত করবে প্লে-অফ। তবে কম ম্যাচ জিতলে খুলনাকে অন্য দলের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।  

পঞ্চম স্থানে থাকা দুর্বার রাজশাহী ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টিকে আছে প্লে-অফের দৌড়ে। তবে রাজশাহীর জন্য কেবল জিতলেই হবে না, নেট রান রেটও উন্নত করতে হবে।  

ঢাকা ক্যাপিটালস নিজেদের প্রথম ছয় ম্যাচে টানা হেরে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিল। তবে শাকিব খানের দল এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে ৩টি জয় পেয়েছে। প্লে-অফে যেতে হলে বাকি দুই ম্যাচে বড় জয় দরকার, সেই সঙ্গে অন্যান্য দলের হারও দরকার হবে।  

পয়েন্ট তালিকার তলানিতে রয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৯ ম্যাচে মাত্র ২ জয়ে সিলেটের প্লে-অফে খেলার স্বপ্ন প্রায় শেষ। তবুও কাগজে-কলমে কিছুটা সম্ভাবনা বেঁচে আছে। সিলেটকে নিজেদের শেষ তিন ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয় পেতে হবে এবং নেট রান রেটে অন্যদের পেছনে ফেলতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ন শ চ ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও