পিএইচডি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ১০ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 29th, January 2025 GMT
পিএইচডির এক জন শিক্ষার্থী মদ বা মাদক সেবন করিয়ে ১০ নারীকে ধর্ষণ করেছিল। শুধু তা-ই নয়, ‘স্মৃতিচিহ্ন’ হিসেবে তার ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করেছিল সে। যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
২৭ বছর বয়সী চীনা নাগরিক ঝেনহাও জুকে ‘শিকারী, যৌনকর্মী এবং ধর্ষক’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে মামলার অভিযোগে। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, জু ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনে আসেন এবং প্রথমে বেলফাস্টের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পর পিএইচডি ডিগ্রির জন্য অধ্যয়ন করছিলেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২০২৩ সালে লন্ডনের পুলিশের সাথে প্রথম যোগাযোগ করেছিলেন এক নারী। তিনি “ফোনে, তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে তাকে মদ পান করানোর পর পুরুষটি আটকে রেখেছিল। পুরুষটি তাকে প্রচুর মদ্যপান করাতে বাধ্য করেছিল এবং তারপর তাকে ধর্ষণ করেছিল।
পরে এই নারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জু-এর নাম উল্লেখ করে পোস্ট করেন। তার এই পোস্ট দেখে আরেক নারী যোগাযোগ করেন এবং জানান ‘তারও একই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে।’
জু-এর বিরুদ্ধে ১০ জন নারীর বিরুদ্ধে ১১টি ধর্ষণের অভিযোগ, তিনটি যৌনকর্মের অভিযোগ, ১২টি পর্নোগ্রাফিক ছবি রাখার অভিযোগ, একটি মিথ্যা কারাদণ্ডের অভিযোগ এবং আটটি মাদক সরবরাহের উদ্দেশ্যে নিয়ন্ত্রিত মাদক রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জু সম্পর্কে প্রসিকিউটর ক্যাথেরিন ফ্যারেলি কেসি বলেন, “বাইরের মানুষের কাছে, তিনি নিঃসন্দেহে একজন বুদ্ধিমান এবং মনোমুগ্ধকর যুবক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। প্রসিকিউশন বলছে যে সে একজন অবিরাম যৌন শিকারী; একজন যৌনকর্মী এবং একজন ধর্ষক।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।
বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।