ইউটিউবে কম রেজল্যুশনের ভিডিও এখন দেখাবে এইচডি মানে
Published: 1st, November 2025 GMT
ভিডিও দেখা মানেই এখন ইউটিউব। একসময় এই মাধ্যমে শুধু ২৪০পি বা ৩৬০পি রেজল্যুশনের ভিডিওই দেখা যেত। সময়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এইচডি, ফুল এইচডি ও ৪কে রেজল্যুশন। যা ইউটিউবে ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে করেছে আরও প্রাণবন্ত। এবার বড় পর্দায় ভিডিওর মান আরও উন্নত করতে গুগল মালিকানাধীন মাধ্যমটি চালু করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর নতুন সুবিধা ‘সুপার রেজল্যুশন’।
নতুন এই সুবিধার মাধ্যমে ইউটিউব স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম রেজল্যুশনে আপলোড করা ভিডিওর মান উন্নত করবে। ২৪০পি থেকে ৭২০পি পর্যন্ত ভিডিওগুলো এআই প্রযুক্তির সহায়তায় রূপান্তরিত হবে এইচডি মানে। বড় পর্দায়, বিশেষ করে স্মার্ট টিভিতে, যাতে ভিডিও ঝাপসা বা বিকৃত না দেখায়, সেটিই এই প্রযুক্তির মূল উদ্দেশ্য।
ইউটিউব জানিয়েছে, ‘সুপার রেজল্যুশন’ ভিডিওর প্রতিটি ফ্রেম বিশ্লেষণ করে ছবির সূক্ষ্মতা ও রঙের ভারসাম্য ঠিক করবে। ফলে পুরোনো বা নিম্নমানের ভিডিও আরও স্পষ্ট ও প্রাণবন্তভাবে দেখা যাবে।
প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা ১০৮০পি ভিডিওর জন্য চালু করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এটি ৪কে রেজল্যুশনেও কাজ করবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ব্যবহারকারীরা চাইলে এই সুবিধা বন্ধ রাখার সুযোগও পাবেন। এতে ভিডিওর মূল রেজল্যুশন অপরিবর্তিত থাকবে এবং নির্মাতারা আসল ফাইল অক্ষত রাখতে পারবেন।
ভিডিওর মান উন্নয়নের পাশাপাশি ইউটিউব হোমপেজেও আসছে নতুন পরিবর্তন। এখন ব্যবহারকারীরা হোমপেজ থেকেই কোনো চ্যানেলের ভিডিও প্রিভিউ আকারে দেখতে পারবেন। পাশাপাশি মাধ্যমটির ‘শো’ বিভাগ নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে, যাতে ধারাবাহিক সিরিজ বা সম্পর্কিত ভিডিও সহজে দেখা যায়। নির্মাতাদের জন্য বাড়ছে থাম্বনেইল আপলোডের সীমা। আগে যেখানে থাম্বনেইলের সর্বোচ্চ ফাইলের আকার ছিল ২ মেগাবাইট, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ মেগাবাইট। এতে নির্মাতারা ৪কে রেজল্যুশনের উচ্চমানের ছবি থাম্বনেইল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।
পাশাপাশি ইউটিউব পরীক্ষামূলকভাবে চালু করছে কিউআর কোডভিত্তিক কেনাকাটার সুবিধা। এই সুবিধা চালু হলে দর্শকেরা ভিডিওতে প্রদর্শিত পণ্যের কিউআর কোড স্ক্যান করে সরাসরি তা কিনতে পারবেন।
সূত্র: টেক্লুসিভ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই স ব ধ ভ ড ওর ম প রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছেন, ৬৯ বছর বয়সে করেছেন পিএইচডি
সময়টা ১৯৯৯ সাল। মরিশাস থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাড়ি জমান নিদ্যানন্দ রায়া। উদ্দেশ্য ছিল স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করা। বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে যত দিন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন, তত দিন পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন তিনি।
এরপর দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বাবাকে দেওয়া সেই কথা রেখেছেন নিদ্যানন্দ। এখন তাঁর বয়স ৬৯ বছর। এ বয়সে এসে মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে সামাজিক নীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নামের শুরুতে ‘ড.’ শব্দটি যুক্ত করেছেন।
এ অর্জন কেমন লাগছে? প্রশ্নের জবাবে নিদ্যানন্দের চটজলদি জবাব, ‘তেমন কিছুই না। এটা জীবনের একটা অর্জন মাত্র।’
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে নিদ্যানন্দ বলেন, আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ, ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।ড. নিদ্যানন্দ এখন লন্ডনের এনফিল্ডে বসবাস করেন। পড়াশোনার জন্যই দেশ ছেড়েছিলেন। বলছিলেন, নিজ দেশে পড়াশোনার সুযোগ সীমিত ছিল। তাই দেশ ছেড়ে এসেছিলেন।
বিবিসি রেডিও লন্ডনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘আমি বেশ গরিব পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ছিলেন নাপিত। আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আমি বন থেকে কাঠ ও ফলমূল সংগ্রহ করতাম। মা–বাবার বেতন দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় আমাকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল। এসব কারণই আমাকে শৃঙ্খলাবোধ আর জ্ঞান অর্জনের পথে উদ্বুদ্ধ করেছিল।’
যুক্তরাজ্যকে ‘সুযোগের ভূখণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করে নিদ্যানন্দ বলেন, ‘এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে আপনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেন।’
স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর নিদ্যানন্দ সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার প্রস্তাব পান। কিন্তু সেখানে কাজের সুযোগ না থাকায় সেটা করতে পারেননি।
মাঝের সময়টায় যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে নিদ্যানন্দকে। দীর্ঘ সময় পরিবারের খরচ চালাতে স্কুলশিক্ষক স্ত্রী ল্যাকসোমিকে সহায়তা করতে পারেননি তিনি। বরং স্ত্রীই তখন পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছেন। নিদ্যানন্দ বলেন, ‘তখন আমাকে চাকরি খুঁজে বের করতে হয়েছিল। আমাকে স্থায়ী হতে হয়েছিল। আমাকে সবকিছু করতে হয়েছিল।’
‘এখানে আসার পর আমি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। পরে আমাকে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে,’ বলেন নিদ্যানন্দ।
নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এই শিক্ষক বলেন, আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।নিজের পিএইচডি গবেষণায় নিদ্যানন্দ মৌরিতানিয়ার ক্রেওলের ফরাসিভাষী সম্প্রদায়ের মানুষদের ঔপনিবেশিক–পরবর্তী অভিজ্ঞতার বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।
মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এলিনোর কফম্যানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন নিদ্যানন্দ। এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি তাঁর সাফল্যে রোমাঞ্চিত। আশা করব, তিনি তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা চালিয়ে যাবেন।’
জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়ে বলতে গিয়ে কয়েক দশক আগে বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করেন নিদ্যানন্দ। তিনি বলেন, ‘আমি বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছি। বাবা, আমি তোমাকে গর্বিত করেছি।’