ঠিকাদারি পদ্ধতি বাতিল করে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ জরুরি
Published: 31st, January 2025 GMT
সরকারি দপ্তর-অধিদপ্তরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ছয় লাখ কর্মচারী রয়েছেন। যেকোনো সময় ছাঁটাই থেকে শুরু করে মাতৃত্বকালীন ছুটি, উৎসব ভাতাসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন এসব কর্মচারীরা। এদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়োগের পদ্ধতি বাতিল করে এসব আউটসোর্সিং কর্মচারীর স্থায়ীকরণ জরুরি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনরা। সরকারের স্থায়ী পদে অস্থায়ী কর্মচারীদের পদায়নের বন্ধের পক্ষে মত দেন আলোচকরা।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘আউটসোর্সিংয়ের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান ও বিলস’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন এবং সাংবাদিক মাসুদ কামাল গতকালের সেমিনারে বক্তব্য দেন।
শ্রম সংস্কার কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন বলেন, আউটসোর্সিং পরিষদের সঙ্গে এ নিয়ে তিনবার বসলাম। শ্রম সংস্কার কমিশনের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। আট কোটি মানুষের আট শতাধিক সমস্যা সামনে এসেছে। কমিশন তো সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, আমরা সুপারিশ করতে পারব। তবে আপনাদের সঙ্গে থাকার অধিকার আছে একজন নাগরিক হিসেবে।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন বলেন, ছয় লাখ পরিবার তার সন্তানের শিক্ষার ভাল কোনো পরিকল্পনা করতে পারে না। নাগরিক হিসেবে আমি যেভাবেই নিযুক্ত হই না কেন, আমার জীবিকা, আমার মর্যাদার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ঠিক আছে আমি অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত, আমি একদিনের জন্যেও যদি নিযুক্ত হই আমার মর্যাদা ও জীবিকার নিরাপত্তা দিতে হবে।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আরও বলেন, দয়াদাক্ষিণ্য চাওয়া বা দুঃখ-কষ্ট দেখানোটা শ্রমজীবী মানুষের কাজ না। দক্ষতা ও শ্রমের বিনিময়ে আপনি জীবিকা নির্বাহ করছেন, এখানে অধিকারের প্রশ্ন সহানুভূতি অর্জনের কোনো প্রয়োজন নেই। নিজের অধিকারের কথা শক্তভাবে বলতে হবে। কমিশন প্রধান হিসেবে নয়, সংগ্রামের সাথী হিসেবে বলছি।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ড.
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১২০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা সচিবালয়ে গিয়েছিলাম সচিব বললেন, আর ছাঁটাই করা হবে না। কিন্তু কদিন আগে খুলনায় ছাঁটাই হলো, আজ বরিশালে আগামীকাল ঢাকার মুগদায় ছাঁটাই হবে। তাহলে সচিবের ওপরও সচিব আছে, সরকারের ওপরও সরকার আছে। ৮৬ হাজার টাকা দামের মাফলার পরছেন কেউ কেউ। ছয় লাখ কর্মচারীর জন্য শ্রম মন্ত্রণালয়ের ১৩০০ এনলিস্টেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অথচ এক কোটির বেশি প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানোর জন্য সরকার নিবন্ধিত এজেন্সি ১৬০০টি। তার মানে এখানে মধু আছে। এখানকার মধুখোরদের বিদায় করতে হবে।
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, দেশের শ্রম আইনে ৮ ঘণ্টার কথা বলা আছে, কিন্তু আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীদের বেলায় তা মানা হয় না তাহলে এদের ক্ষেত্রে ৮ ঘণ্টার আইন গেল কোথয়।
মো. সাফিউল ইসলাম উজ্জল ও সোহেল রানার সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আউটসোর্সিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রধান প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মচারী ইয়াসমিন আক্তার, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারী নুরুন নাহার বেগম, নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ কার্যক্রমে কর্মরত সাহাব উদ্দীন, ডাক বিভাগের রুপা হক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মো. শাহাদাত ইসলাম।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র কর ম র জন য ছয় ল খ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ
মেঘ রোদের লুকোচুরির সকালে শিল্পী সোহানী মজমুদার সেতার বাদনে ‘রাগ আহীর ভৈরব’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষাকাল উদযাপনের আয়োজন। রোববার সকাল সোয়া ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ‘বর্ষা উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়।
আষাঢ়ের প্রথম দিন এই আয়োজনটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়। গানে, কথনে, আবৃত্তিতে বর্ষা বন্দনা করা হয়।
আয়োজনে রাগ ভৈরবীর পর বর্ষা কথন পর্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান। ঘোষণা পাঠ করেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী।
কথনের পর মূল আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ইয়াসমিন মুশতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, অনিমা রায়, শামা রহমান, মকবুল হোসেন, ফেরদৌসী কাকলি, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, শ্রাবনী গুহ রায়সহ আরও অনেকেই।
এছাড়াও আবৃত্তি পরিবেশন করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, আসান উল্লাহ তমালসহ অনেকেই।
দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন ধৃতি নর্তনালয়, নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, বেমুকা ললিতকলা কেন্দ্র, সিনথিয়া একাডেমি অফ আর্টস ও নৃত্যম।
এছাড়া ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ওষুধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।