সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের দুটি স্থানে চার লেন করার প্রকল্প প্রস্তাবনা এক বছর ধরে আটকে আছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। এতে একদিকে সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ, অন্যদিকে যানজট বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সুনামগঞ্জবাসী। এ ছাড়া মাত্র ২৪ ফুট প্রশস্ত এই সড়ক ঘেঁষে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় চলাচলে ভোগান্তির শিকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও। 
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ শহর থেকে সড়কপথে ওয়েজখালী পর্যন্ত যেতে শান্তিগঞ্জ, পাগলা ও জাউয়াবাজার এলাকায় যানজটে মহাদুর্ভোগে পড়েন যাতায়াতকারীরা। ২৫ লাখ মানুষের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস, কার ও ট্রাক মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০ গাড়ি প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। শুধু সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানবাহনের সংখ্যাই ৫ হাজারের বেশি হবে। অথচ কেবল জেলা শহরের ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে গেল বছরের জুলাই মাসে দরপত্র আহ্বান করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে ওয়েজখালী পার হয়ে পৌর কলেজ পর্যন্ত এবং উজানীগাঁও থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর পার হয়ে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চার লেন সড়ক করার উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। দরপত্র গ্রহণের পর তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা এখনও হয়নি। 
পরিবহন মালিক-শ্রমিক সূত্রে পাওয়া তথ্যমতে, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় ৫০০ গাড়ি প্রতিদিন সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে চলাচল করছে। এ ছাড়া সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করছে আন্তঃজেলা ৮০টি বাস। এসব বাস ছাতক ও দিরাই থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ পথ দিয়েই যাওয়া-আসা করে। সব মিলিয়ে আন্তঃজেলা বাসের সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়ে যাবে। এ ছাড়া পুরো জেলায় কার, মাইক্রোবাস, হাইয়েস আছে প্রায় ৫০০। একশোর মতো ট্রাক আছে, যেগুলোর যাতায়াত একই পথে। জেলাটিতে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। যার বেশির ভাগই চলছে এই সড়কে। জেলায় লেগুনা আছে প্রায় ২০০টির মতো। ফলে সড়কটি এত যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না। 
সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম বলেন, ৬৫ কিলোমিটার পথ আরও ২০ বছর আগে বাসে যাতায়াত করতে সময় লাগত সোয়া ঘণ্টা। যানজটের কারণে লাগে পৌঁনে দুই ঘণ্টা।  
জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়ার বক্তব্য, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ককে দ্রুত চার লেনে উন্নীত করতে হবে। সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়কেও চার লেন জরুরি। 
সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড.

মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বললেন, চার লেন করার দরপত্র হয়েছিল সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে। কিন্তু তা এখনও সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ স ল ট দরপত র য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা

দেশের জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে গত কয়েক বছর ধরে স্পট মার্কেট থেকে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করছে সরকার।

এরই অংশ হিসেবে পৃথক তিনটি কোটেশনের মাধ্যমে আগামী মে, জুন ও জুলাই মাসের জন্য এই তিন কার্গো এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ টাকা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব তিনটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল

নতুন বছরের আগ মুহূর্তে কেরোসিন-ডিজেলের দাম কমল

সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (২২-২৩ মে ২০২৫ সময়ে ২০তম) এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদনের জন্য সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলার মে মাসের জন্য ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তব আহ্বান করা হলে ৫টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আরামকো ট্রেডিং সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে প্রতি এই এক কার্গো এলএনজি সংগ্রহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.১৫ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৩৪ কোটি ৭৬ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা।

সূত্র জানায়, একই প্রক্রিয়ায় জুন মাসের অন্য এক কার্গো এলএনজির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে এবং প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড এই ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.২৭ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৫৪০ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার ১২৮ টাকা।

সভায় জুলাই মাসের জন্য ও এক কার্গো এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। পেট্রোবাংলা কর্তৃক ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের  কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৬টি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিলকৃত ৬টি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের প্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নির্বাচিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এমবিটিইউ প্রতি এমবিবিইটএইউ ১১.৩৫৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে  ৫৪৪ কোটি ৭৭ লাখ ৫৩ হাজার ১৭৬ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পাননি, গাবতলী হাটে খাস আদায় করছেন ‘পছন্দের’ ব্যক্তিরা
  • এবার আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শুরু হচ্ছে, ২০২৭ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের চিন্তা
  • তিন প্রকল্প অনুমোদন, ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি টাকা
  • বেজা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের দুই প্রস্তাব অন
  • অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটি’র বক্তব্য 
  • এলএনজি আমদানি: ব্যয় হবে ১৬২০ কোটি ৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা
  • ‘নতুন শুরুর আশায়’ মাগুরা টেক্সটাইল মিলসের পুরোনা মেশিন বিক্রি
  • সোনাগাজীতে ইজারা চুক্তি না মেনে চলছে পশুর হাট